বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মশা নিধন

কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙুক

রাজধানী ঢাকার জন্য আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে মশা নামের এক ক্ষুদ্র প্রাণী। এক সময় ম্যালেরিয়ার ভয়ে আতঙ্কিত থাকত নগরবাসী। কালের বিবর্তনে ম্যালেরিয়া এখন দেশের সমতল ভূমি থেকে প্রায় বিদায় নিয়েছে। ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহনকারী অ্যানোফিলিস মশার উপদ্রব থাকলেও ওই ভয়ংকর রোগের ভয়ে ভোগে না কেউ। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফ্রিকা থেকে আসা এডিস মশার উৎপাত রাজধানীবাসীর ঘুম কেড়ে নিয়েছে। সাধারণত বর্ষা মৌসুমে থাবা বিস্তার করে এডিস মশা। কিন্তু এ বছর অক্টোবর ও নভেম্বরে রেকর্ডসংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। ডেঙ্গু হয়ে উঠেছে এক আতঙ্কের নাম। ডেঙ্গু থাবা বিস্তার করতে সক্ষম হচ্ছে মশা নিধনে যথাযথ উদ্যোগ না থাকায়। দুই সিটি করপোরেশনে ৪০ বছর আগের জনবল কাঠামো অনুযায়ী মশক নিবারণী দফতরের জনবল ৩৯৬ জন থাকার কথা থাকলেও আছে ২৪৫ জন। এর মধ্যে ২৩২ জন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সংযুক্ত। অবশিষ্ট মাত্র ১৩ জন দিয়েই ঠায় দাঁড়িয়ে আছে মশক নিবারণী দফতর। জনবল আবার দিন দিন কমছে। গত এক যুগে নতুন কোনো নিয়োগ হয়নি। স্বাধীনতার আগে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কমাতে মশক নিবারণী দফতর গঠিত হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা হয়। ওই সময় ৩৯৬টি পদ সৃজন করা হয়। এর কিছুদিন পর মশক নিবারণী দফতরের সব কর্মচারীকে সিটি করপোরেশনের অধীনে দেওয়া হয়। মশক নিবারণী দফতরে সর্বশেষ ২০১০ সালে জনবল নিয়োগ হয়েছিল। এর আগে ১৯৮৫, ’৮৭, ’৯৫ সালে নিয়োগ হয়েছিল। কিন্তু ২০১০ সালের পর আর নিয়োগ হয়নি। রাজধানীর জনসংখ্যা গত ৪০ বছরে বেড়েছে অন্তত ছয় গুণ।  সেই হিসাবে মশা নিধনে লোকবল ছয় গুণ বৃদ্ধির বদলে ৪০ শতাংশ হ্রাস পাওয়ায় মশা নিধন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ সুখনিদ্রা থেকে জেগে উঠলে নগরবাসী মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পাবে। এডিস মশার প্রজনন বন্ধ করা গেলে বিদায় নেবে ডেঙ্গু নামের প্রাণঘাতী জ্বর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর