বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

শহরমুখী হচ্ছে মানুষ

জলবায়ু পরিবর্তনের অনিবার্য পরিণতি

বাংলাদেশে নগর এলাকার জনসংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়ছে। গ্রাম ছেড়ে শহরবাসী হওয়ার প্রবণতায় গ্রাম ও শহরের জনসংখ্যাগত অবস্থানে দৃষ্টিগ্রাহ্য পরিবর্তন ঘটছে। বাংলাদেশে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে উন্নয়নের পথে এগিয়েছে দ্রুত পায়ে যা নগরায়ণ তথা শহর এলাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে উৎসাহ জুগিয়েছে। একইভাবে এ সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে গ্রাম ছেড়ে শহরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। যে কারণে শহর এলাকার জনসংখ্যা বেড়েছে বিপুলভাবে। এ বৃদ্ধিকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সালে বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে বসবাসকারী জনসংখ্যার হার ছিল ২৪ শতাংশ, এটি ২০২০ সালে বেড়ে ৩৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে আনুমানিক ৬০ শতাংশ জনসংখ্যা বসবাস করবে নগর এলাকায়। দক্ষিণ এশিয়ার জলবায়ু ও উন্নয়নবিষয়ক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক গ্রাম থেকে মানুষের শহরে আসার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতকে প্রধান কারণ হিসেবে দেখিয়েছে। বিশ্বব্যাংক বলছে, করোনা মহামারির আগে গত এক দশকে অর্ধেকেরও বেশি দরিদ্র পরিবার শহরে বসবাসের জন্য অভিবাসিত হয়েছে। দেশের প্রধান দুটি শহর ঢাকা এবং চট্টগ্রামে দরিদ্র মানুষের অভিবাসন বেড়েছে। আন্তর্জাতিক পানি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আইনুন নিশাতের মতে, বাংলাদেশে যা ঘটেছে বিশ্বব্যাংক তাই বলেছে, এটা নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল-যেখানে কৃষি উৎপাদন কম হয়, সেসব এলাকা থেকে মানুষজন জীবিকার উদ্দেশ্যে শহরে ভিড় করছে। বিশ্বব্যাংক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। আশার কথা, সরকারও সে পথে হাঁটছে এবং এ জন্য জাতীয় মহাপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। এ বিষয়ে নেওয়া প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে উপদ্রুত এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। উদ্বাস্তু হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে বিপুল মানুষ।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর