শিরোনাম
প্রকাশ: ০০:০০, সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২ আপডেট:

আমার পিতা খন্দকার আবদুল হামিদ

লতিফা চৌধুরী
প্রিন্ট ভার্সন
আমার পিতা খন্দকার আবদুল হামিদ

খন্দকার আবদুল হামিদ আমার পিতা, এটাই আমার সবচেয়ে বড় অহঙ্কার। তাঁর মতো একজন মানুষের কন্যা হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে বলে আমি গর্বিত।  আমাদের বাবা-মায়ের ছোট্ট সংসার গড়ে উঠেছিল পাঁচ কন্যা ও একমাত্র পুত্রসন্তানকে ঘিরে। সেকালের সাংবাদিকদের সংসারে প্রাচুর্য ছিল না, ছিল অফুরন্ত আনন্দ কোলাহল।  ১৯৫১ সালের এক শীতের রাতে ঢাকার ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশনে নেমে একটি ঘোড়ার গাড়ির মাথার ওপর সামান্য মালপত্র তুলে দিয়ে আমরা আজিমপুর কলোনির ৪ নম্বর বিল্ডিংয়ের তিন তলায় এসে পৌঁছলাম। আব্বার তখন ঢাকায় থাকার মতো কোনো ব্যবস্থা ছিল না বলে আমরা আমার মামার ফ্ল্যাটে উঠেছিলাম। জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের কূল ঘেঁষা এক বিশাল চরে ছিল আমার নানার বসতবাড়ি। ওখানে আমাদের লেখাপড়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না বলে আব্বা আমাদের ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করেছিলেন। আমার বয়স তখন সাত বছর। ঢাকায় এসে সেবারই প্রথম আব্বাকে কাছে থেকে দেখার এবং আস্তে আস্তে আরও ঘনিষ্ঠভাবে জানার সুযোগ পেলাম।

১৯৪৭-এ দেশ বিভাগের পরে ঢাকায় এসে আব্বা ‘মিল্লাত’ পত্রিকায় যোগ দেন। দিনের বেলা রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্রের কথিকা লেখক হিসেবে কাজ করতেন। সেই সময় আমি প্রায়ই তাঁর সঙ্গে রেডিও অফিসে যেতাম। তাঁর সহকর্মীদের মধ্যে যাঁদের আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি তাঁরা ছিলেন কবি ফররুখ আহমদ, কবি আল মনসুর, সায়িদ সিদ্দিকী, কবি গোলাম মোস্তফা, কবি সাহাদৎ হোসেন, শওকত ওসমান, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, সিকান্দার আবু জাফর, শামসুল হুদা চৌধুরী, কবি সৈয়দ আলী আহসান, জহির রায়হান ও তার বড় ভাই শহীদুল্লাহ কায়সারের মতো একেকজন দিকপালকে। রেডিও স্টেশনটি ছিল পূর্ব পাকিস্তানের সাহিত্যিক আড্ডার প্রাণকেন্দ্র। এটিকে ঘিরেই গড়ে উঠেছিল সাংস্কৃতিক বিকাশ। এখনো মনে পড়ে আমি আব্বার সঙ্গে রেডিও অফিসে যেতাম সংগীত শিল্পীদের কাছে থেকে একটু দেখার আশায়। অনেক বড়মাপের গুণী শিল্পীদের স্নেহ পেয়েছি। এভাবে আমারও সংগীত জগতে আসা। তাঁদের দেখে আমার সংগীতের প্রতি আগ্রহ জন্মে। গান শিখতে ইচ্ছা হতো। গান গাইতে ভালোবাসতাম, কিন্তু জানি না কিছুই। আমাদের তখন রেডিও ছিল না। পাশের বাসার রেডিওতে গান বাজলেই আমি জানালার পাশে বসে বসে গান শুনতাম। একদিন আব্বা আমাকে সেভাবে বসা দেখে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি গান শিখতে চাও?’। আমার এই আকাক্সক্ষার ব্যাপারটা তাঁর দৃষ্টি এড়ায়নি। পর দিনই যতীন কোম্পানির নবাবপুরের দোকান থেকে আমার জন্য একটা হারমোনিয়াম কিনে আনলেন ৭০ টাকায়। আমাকে গান শেখানোর জন্য তখনকার বিখ্যাত শিল্পী আবদুল হালিম চৌধুরীকে অনুরোধ করে বাসায় নিয়ে আসেন। সংসারের খরচ একটু কমিয়ে আমার গানের ওস্তাদের বেতনের ব্যবস্থা করার কথা ভাবলে এতদিন পরেও আমি অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ি।

আব্বার বিচক্ষণ দৃষ্টিতে কিছুই এড়াত না। তিনি শিশুমনের সুপ্ত বিকাশ ঘটানোর জন্য আমাকে ছবি আঁকার জন্য খাতা, রং পেনসিল, তুলি, কয়েক রঙের কৌটা এনে দিতেন। আমাকে বলতেন একটি গাছের পাতা আঁকো তো। আমি অবাক হয়ে ভাবতাম কীভাবে আঁকব! তখন তিনি একটা গাছের পাতা আমার হাতে দিয়ে বলতেন, ‘এটার রং কী? আমি বলতাম ‘সবুজ’। তারপর পাতাটা কাগজের ওপর রেখে পাতার ছক কেটে নিতাম- এভাবে সবুজ পাতা লাল হলুদ ফুল পাখি চাঁদ সূর্য সবকিছুর দিকে আমার দৃষ্টি পড়তে আরম্ভ করল। মনে আছে মাত্র ১০ বছর বয়সের সময় আব্বা আমাকে ‘বিশ্ব পরিচয়’ কিনে উপহার দিয়েছিলেন আমার জন্মদিনে। আমাদের বাসায় সকাল হলেই দেখতাম অনেকগুলো দৈনিক পত্রিকা আসত। প্রত্যেকটির দুই কপি থাকত। একটিতে আব্বা সেদিনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর লেখাগুলো লাল পেনসিল দিয়ে চিহ্নিত করে দিতেন আর আমাকে বলতেন সময়মতো এই চিহ্নিত লেখাগুলো কেটে ফাইল করে রাখবে। সেই থেকেই আমার পড়া ও লেখার প্রতি এক অদম্য আগ্রহ জন্মে যা আজও কমেনি, বরং কিছুটা বেড়েছে। এখন সারা জীবনের স্মৃতিগুলোকে একটু সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখার চেষ্টায় মন দিয়েছি।

পঞ্চাশ দশকে আমরা একটা নির্মল রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক পরিবেশে বেড়ে উঠেছি। মাঝে মাঝে আব্বা আমাদের ভাইবোন সবাইকে ডেকে বসাতেন। যে কোনো বিষয়ের ওপর আলোচনা শুরু করে দিয়ে তিনি একটু থেমে থাকতেন। বলতেন ‘তোমাদের মতামতও তো জানতে হবে! এভাবে সবাইকে নিঃসংকোচে মত প্রকাশের স্বাধীনতার সুযোগ দিতেন। এমনকি আমার আম্মা তখন রান্নাঘরে ব্যস্ত থাকলেও তাঁকে ডেকে আনতেন। বলতেন তোমার মাকে তো দেখছি না, তাঁকে ডাক, তাঁর মতামত থাকতে হবে।’ সংসারের যে কোনো বিষয়ে সবার মতামতকে তিনি প্রাধান্য দিতে শিখিয়েছেন। আমরা অনেক সময় তাঁর মতামত পছন্দ না হলে তাঁর সঙ্গে তর্ক জুড়ে দিতাম-তিনি তখন শুধু মৃদু হাসতেন। ‘সাংবাদিক আবদুল হামিদ’-এই পরিচয়টাই তাঁর কাছে সবচেয়ে আনন্দের ছিল। সেই সময়ের প্রায় সব সাংবাদিকই স্বাধীন সত্যনিষ্ঠ ছিলেন। দেশের স্বার্থ, দেশের মানুষ, মানুষের দুঃখ-দুর্দশা, অভাব-অনটন সবই তাঁদের সাংবাদিকতার প্রধান উপাদান ছিল।

আমার আব্বার সাংবাদিকতার গুরু ছিলেন আমার খালু আবুল মনসুর আহমদ-যার পরিচয় দেওয়ার কোনো প্রয়োজন পড়ে না। তাঁকে মধ্যমণি করে প্রায়ই ধানমন্ডির সেই ছোট্ট লাল ইটের বাড়িতে আড্ডা বসত। আমাদের দায়িত্ব ছিল সেখানে তাদের চা-নাশতা পরিবেশন করার। সেই সুযোগে আমি তাঁদের অনেক কাছ থেকে দেখেছি, তখন বুঝিনি, কিন্তু এখন বুঝি তাঁরা কত বড়মাপের মানুষ ছিলেন। দেখতাম তাঁদের তুমুল উত্তেজনা, কিন্তু তা কখনই ভদ্রতা শালীনতার সীমা অতিক্রম করত না। হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, আতাউর রহমান খান, শেখ মুজিবুর রহমানসহ আরও অনেক বড়মাপের মানুষকে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। আজ মনে হয় আমরা যেন একটা স্বর্ণযুগ পেছনে ফেলে এসেছি-অর্জন করে সঞ্চয় করা হয়নি। এখন শুধু কিছুটা অস্তগামী সূর্যের পড়ন্ত বেলার ধূসর গোধূলির দিকে আলো খুঁজে বেড়াচ্ছি।

আমরা ভাইবোনরা মোটামুটি সবাই লেখাপড়ায় মেধাবী ছিলাম। ম্যাট্রিকের পর আব্বাকে আর আমাদের লেখাপড়ার জন্য খরচ জোগাতে হয়নি। আমরা সবাই লেখাপড়া, গান, গল্পের মধ্য দিয়ে আনন্দেই বেড়ে উঠেছি। আব্বা-আম্মাকে ঘিরেই আমাদের সংসারটায় অভাব থাকলেও পরিপূর্ণ আনন্দ ছিল। আমাদের খুব একটা চাহিদা ছিল না। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাড়তি চাহিদার কথা ভাবতেও পারতাম না। আমি যখন টেলিভিশনে গান গাই তখনই প্রথম মেকআপ, ঠোঁটে লিপস্টিক লাগানো শিখেছি। ঈদ পার্বণে নতুন জামাকাপড় পেতেই হবে এমন আবদার ছিল না। আব্বা ঈদের আগের সন্ধ্যায় নিউমার্কেট থেকে হিজ মাস্টারস ভয়েসের রেকর্ড কিনে আনতেন আমার জন্য। আমি নতুন রেকর্ড পেয়েই খুশি হতাম বেশি। আম্মার জন্য থাকত শারদীয় দেশ, উল্টোরথ, প্রসাদ, সাপ্তাহিক বেগম-এগুলোই ছিল আমাদের ঈদের উপহার। ঈদের দিন পোলাও কোর্মা, সেমাই, গরুর গোস্ত রান্না হতো। সে দিন আমাদের যেন উৎসবের দিন মনে হতো।

ঢাকায় আব্বার কোনো জমি বা বাড়ি ছিল না। সারা জীবন তিনি ভাড়া বাড়িতেই থেকেছেন। আম্মার কাছে শুনেছি তারা নাকি মোট ১৯ বার বাড়ি বদল করেছেন শুধু একটু মাথা গোঁজার জন্য। আম্মা একবার আব্বাকে একটা বাড়ির আকাক্সক্ষা করেছিলেন। উত্তরে তিনি আম্মাকে বলেছিলেন, ঢাকায় তো কত লোকের বাড়ি আছে, তাদের নাম কি তোমরা শুনেছ? আমার তো কিছুই নেই, কিন্তু প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় আমার নামটা ছাপা হয়ে বের হয়। আমাদের পরীক্ষার রেজাল্ট দেখে তিনি বলতেন, ‘ভালোই হয়েছে, তবে জীবনে প্রকৃত শিক্ষা হলো ভালো মানুষ হওয়া। তোমাদের কাছে আমি একটা জিনিস চাই সেটা হলো- সবসময় সত্য কথা বলবে, সেটা যত কঠোরই হোক না কেন, সত্য লুকাবে না। এই একটা খুঁটি শক্ত করে মনের মধ্যে গেঁথে রাখতে পারলেই বাকি সব আস্তে আস্তে নিজের আয়ত্তে এসে যাবে। কখনো লোভী হবে না-ওটা মানুষকে ধংস করে দেয়, এটাই আমি তোমাদের কাছে আশা করি। ১৯৭৪ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে তিনি প্রতিদিন সকালে আমাকে ফোন করে বলতেন, ‘তোমরা যথেষ্ট অবস্থাশালী, এখন তোমাদের পরীক্ষার সময়, আর সেটা হলো গরিব মানুষের দিকে তাকিয়ে দেখার- ওদের কষ্ট অনুভব করার পরীক্ষা-যার ফলাফল আল্লাহ নিজে দেবেন। এই দুর্যোগের সময় কেউ যেন তোমাদের দরজা থেকে খালি হাতে ফিরে না যায়। যথেষ্ট পরিমাণে মিলের শাড়ি, লুঙ্গি কিনে ঘরে রাখবে। কাজের লোকদের দিয়ে অন্তত ১০০টি আটার রুটি বানিয়ে মজুদ রাখবে। বড় হাঁড়িতে যথেষ্ট পরিমাণে খিচুড়ি রান্না করিয়ে রাখবে-যাতে কোনো অনাহারি মানুষ অভুক্ত ফিরে না যায়। এখনই মানবতার পরীক্ষার শ্রেষ্ঠ সময়। আমার কথাগুলো মনে রেখ।’ আমি তার কথার অন্যথা করিনি কখনো। আমার চেষ্টা ছিল বাবা-মাকে কীভাবে একটু স্বস্তিতে, শান্তিতে রাখা যায় সেই চেষ্টা করা। এমন পিতার কন্যা হওয়া সত্যিই পরম সৌভাগ্যের। আমি এ ব্যাপারে তৃপ্ত।

গরিব সাংবাদিকের মেয়ে হয়ে কখনো আমরা আত্মগ্লানিতে ভুগিনি। সংসারে অনেক বাধাবিপত্তি এসেছে-ধৈর্যহারা হইনি। সবই স্বাভাবিকভাবে মানিয়ে নিয়ে চলতে তিনি আমাদের শিখিয়ে গেছেন। জীবনে কয়েকবার জেল খেটেছেন। তখন আমাদের ঢাকায় থাকার মতো কোনো জায়গা ছিল না। আমরা লেখাপড়া বন্ধ রেখে ময়মনসিংহে মামার বাসায় থেকেছি। মনের মধ্যে দুঃখ থাকলেও পিতার সত্যের জন্য জেল খাটা আমাদের কাছে গর্ব বলে মনে হতো। কারণ, তিনি তো কোনো দুর্নীতির দায়ে জেলে যাননি, গিয়েছেন সত্য কথা স্বাধীনভাবে প্রকাশ করার জন্য।

সাংবাদিকতাই তাঁর জীবনের ধ্যান-ধারণা ছিল। সেকালে সাংবাদিকরা সবাই প্রায় একই আদর্শের ছিলেন। মতের অমিল থাকলেও তা কখনো ব্যক্তিগত পর্যায়ে গড়াত না। মনে পড়ে একবার আব্বা ইত্তেফাকে তাঁর কলামে সংবাদের দরবারে জহুরের ওপর তুমুল লড়াই শুরু হয়েছিল। প্রতিদিন খবরের কাগজ দেখলে মনে হতো এদের বোধহয় আর কখনো মুখোমুখি কথা হবে না। অথচ বিকালবেলা আমাদের আজিমপুরের বাসার বিপরীত বাসার বারান্দা থেকে জহুর চাচা আমাকে বারান্দায় দেখে চেঁচিয়ে বলে উঠলেন, “এই বেবি, তোর বাবাকে সন্ধ্যায় বাসায় থাকতে বলিস, আর মাকে বলবি আমি মুড়িভাজা আর চা খেতে আসব।” যথারীতি তিনি সন্ধ্যায় এলেন এবং আব্বাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘হামিদ, তোমার আজকের জবাবটায় আমি নিজে না এসে পারলাম না- সাংবাদিক এমনই হওয়া উচিত।’ এই ছিলেন আমাদের জহুর চাচা। শিশুর মতো অমলিন, অভিমানী। এমনই ছিল তখনকার সাংবাদিকতার বৈঠকখানা।

রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর মিলিত জোট যুক্তফ্রন্টের সময়। সেবারের ইলেকশনে জনগণই মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। মুসলিম লীগের ‘হারিকেন’ আর যুক্তফ্রন্টের ‘নৌকা’ এই দুটাই ছিল মার্কা। আমার জীবনে এমন স্বতঃস্ফূর্ত, অবাধ, আনন্দের নির্বাচন আর দেখিনি। গ্রামের কৃষকের গলায় গান ছিল ‘লীগের পোলা বিলাত যায়, মোগো পোলা মইষ খেদায়’ এমন উদ্দীপনামূলক শ্লোক গান। মাইক ছিল না, টিনের চোঙ্গা মুখে নিয়ে তারস্বরে গান গাইত ওরা আনন্দে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে।

রাজনীতি ছিল শুধুই দেশের মানুষের জন্য। এলাকার মানুষের কল্যাণের জন্য প্রার্থীদের ওয়াদা যথাসম্ভব রক্ষার চেষ্টার কমতি ছিল না। আব্বাকে দেখেছি এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অনেক কাজ করেছেন। দলমত নির্বিশেষে সবাই তাঁর হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছে। শেরপুর একটি হিন্দুপ্রধান এলাকা হলেও সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান ছিল না তখন। হিন্দুপ্রধান এলাকায় তিনি সর্বোচ্চ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন প্রতিবারই। একবার প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের আমলে কিছুটা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেষ্টা করেছিল সরকার। সেই সময় তিনি নিজ বাড়িতে প্রায় ৫০০ জনেরও বেশি মহিলা, বৃদ্ধ, শিশুকে জায়গা করে দেন এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন। এলাকার হিন্দু-মুসলিম সব তরুণ মিলেমিশে সারা রাত এলাকা পাহারা দিয়েছে। একজন মানুষও নিহত বা আহত হয়নি। মৃত্যুর আগে আব্বা বাকরুদ্ধ অবস্থায় লিখে গেছেন- ‘আমার শেরপুরে কখনো কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা হবে না।’ নিজের এলাকাকে এতই ভালোবাসতেন যে, কাঁচামরিচটাও শেরপুর থেকে আনতেন। আমরা বলতাম, ‘আপনি শেরপুর থেকে কাঁচামরিচ আনেন কেন? ঢাকার মরিচে কি ঝাল নেই?’ তিনি হেসে বলতেন, ‘নিজের জায়গার জিনিসের অনুভূতি আলাদা।’ এমনই ছিল তাঁর দেশের মাটি-মানুষের প্রতি মায়ামমতা, ভালোবাসা।

সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, খন্দকার আবদুল হামিদকে দেখেছি এক নতুন রূপে জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রী হিসেবে। মন্ত্রিত্ব পেয়ে প্রায় অনেকেই এক অদ্ভুত আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন। আমার বাবাকে দেখেছি এক বিষণ্ণ, চিন্তাযুক্ত নিরানন্দ মানুষ হয়ে এক অজানা মনোকষ্টে ভুগতে। মিন্টো রোডের সরকারি বাসার জানালার পর্দা লাগানোর জন্য সরকারি লোক এলে তিনি তাদের বলেছিলেন, ‘কী আর হবে এত খরচা করে, ক’দিনের জন্য নতুন পর্দা টাঙানোর! এখন এসব থাক।’ ওরা তাঁর কথায় অবাক হয়ে চলে গেলে আম্মা বিছানার চাদরটাকে পর্দার মতো করে জানালায় লাগিয়ে দিয়েছিলেন।

একদিন মন্ত্রণালয়ের কাজ শেষে বাড়ি ফিরে দেখেন বৃষ্টির মধ্যে বাসার পুলিশ গার্ডরা দাঁড়িয়ে আছে তাদের দায়িত্ব পালন করার জন্য। তাদের দেখে তিনি বললেন, ‘আপনারা এভাবে বৃষ্টিতে ভিজছেন কেন? মানুষকে কষ্ট দিয়ে আমার নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই, আপনারা বিশ্রাম নিন। পুলিশ গার্ডরা অবাক হয়ে ওদের ঘরে চলে গেল। এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে তাঁর মন্ত্রিত্বের আমলে। তিনি নিজেকে সাধারণ মানুষ থেকে আলাদা ভাবতেন না। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনযাত্রাও ছিল খুবই সাধারণ। তবে একটু ভালো খাবারের প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল। সবাইকে নিয়ে খেতে ভালোবাসতেন।

প্রথমবার মন্ত্রী হয়ে তিনি মাত্র এক বছর মন্ত্রিত্ব করেই ইস্তফা দিয়েছিলেন নিজের ইচ্ছায়। কারণ জানি না, তবে শুনেছিলাম রাষ্ট্রপতি জিয়াও নাকি অবাক হয়েছিলেন। কারণ হিসেবে তিনি তাকে জানিয়েছেন, এই চাকরি করা তাঁর স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি রাষ্ট্রপতিকে আরও বলেছিলেন, ‘আপনাকে আমি সত্য সঠিক পরামর্শ দিতে পারছি না, কারণ এখন আমি লালফিতায় বন্দি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি দেশ এবং মানুষের জন্য আমাকে আবার সাংবাদিকতায় ফিরে যেতে হবে।’ বাসায় ফিরে আমাদের বলেছিলেন, ‘আজ আমি একটু শান্তিতে ঘুমাব।’ মাত্র এক মাস অসুস্থ থেকে আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারেননি। হাসপাতালেই ছিলেন। সুদীর্ঘ সাংবাদিক জীবনে অভ্যাস মতো রোজ সকালে সবার আগে পত্রিকা হাতে নিতেন। বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেও তাঁর স্মৃতিশক্তি ভালো ছিল। কেউ তাঁকে দেখতে গেলে তার নাম লিখে দিতেন। বাসার ফোন নম্বর সবকিছু স্পষ্ট করে লিখে ডাক্তার মালেকের হাতে দিতেন। ইশারায় পত্রিকা চাইতেন। তাঁকে শান্ত রাখার জন্য আমরা অনেক সময় পুরনো পত্রিকা তাঁর হাতে দিতাম। তিনি পড়তে পারতেন না- কিন্তু পত্রিকাটি বুকের ওপর রেখে দিতেন। শেষ দিকে কাঁপা কাঁপা হাতে কাগজে লিখেছেন-‘ক্ষুধার রাজ্যে পূর্ণিমার চাঁদ ঝলসানো রুটি’। The old man on the Sea’ আমি কি এখন বেঁচে আছি? ‘আমাকে বাঁচিয়ে রাখার কি কোনো প্রয়োজন আছে?’ ইত্যাদি অনেক কথা। আমি তাঁকে বললাম আপনি চিন্তা করবেন না, নিশ্চয়ই ভালো হবেন। উত্তর দিতেন ‘আমি ভাববার কে, আমার ভাবনা যিনি ভাবছেন-তাঁর কাছেই যেতে হবে। তোমরা ভালো থেক। আল্লাহর ওপর ভরসা রাখবে সবসময়।’ পারলে তাড়াতাড়ি হজটা করে ফেল। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁর ইচ্ছা পূরণ করতে পরের বছরই হজ পালন করার। ১৯৮৩ সালের ২২ অক্টোবর মাগরিব নামাজের আজানের সঙ্গে সঙ্গে তিনি চলে গেলেন। মৃত্যুর আগে আমার ভাসুর ইমামউদ্দিন আহমদ এসে তাঁর পাশে সুরা ইয়াসিন দুবার পড়া শেষ করতেই তিনি হঠাৎ চোখ মেলে চাইলেন এবং তারপর আস্তে করে চোখ দুটি বন্ধ হয়ে গেল, চিরদিনের জন্য আমার পিতা খন্দকার আবদুল হামিদ চলে গেলেন। আজ তিনি ঘুমিয়ে আছেন তাঁর প্রিয় শেরপুরে নিজ বাড়ির আঙিনায়। তাঁর মতো অত বড়মাপের মানুষের মেয়ে হয়েছি, কিন্তু তাঁর মতো বড় হতে পারিনি। তবে সন্তান হিসেবে কিছুটা শান্তি পাই এ জন্য যে, মাত্র ১৭-১৮ বছর বয়সে নিজের জমানো টাকা দিয়ে (যা রেডিও টেলিভিশন থেকে সম্মানী বাবদ পাওয়া) আব্বার প্রয়োজনীয় কয়েকটা জিনিস কিনে এনে তাঁকে একটু আরাম দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

আব্বা বাসার ছোট বারান্দায় একটা কাঠের চেয়ারে বসে পত্রিকা পড়তেন- আমার মনে হলো একটা বেতের ইজিচেয়ার এনে দিলে কেমন হয়! বাস্ এনে ফেললাম। আব্বা যে টেবিলে সম্পাদকীয় লিখতেন, সেখান থেকে ঘরের একটা মাত্র ফ্যান বেশ দূরে ছিল। উনি বাতাস পেতেন না, দেখলাম, তার পিঠ গরমে ঘেমে যেত। পরদিনই একটা স্ট্যান্ডফ্যান কিনে আনলাম-উনি শুধু হাসলেন।

আমাদের বাসায় তখন ফ্রিজ-টিভি কিছুই ছিল না। রোজার দিনে ইফতারিতে শরবত বানাতে বরফ বাজার থেকে কিনে আনতে হতো বস্তায় ভরে। আমি নিপ্পন কোম্পানি থেকে ১১০০ টাকায় একটি ফ্রিজ কিনে এনে সবাইকে চমকে দিয়েছিলাম। আব্বা শুধু নীরবে আমার আনন্দ উপভোগের দৃশ্যটা গভীরভাবে দেখছিলেন।

আব্বার জীবনের শেষ কোরবানি দেওয়ার মতো কোনো টাকা তাঁর হাতে ছিল না বলে তিনি সেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কোরবানি দেবেন না। আমি শেরপুরে ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম- ‘কোরবানির গরু কিনেছেন? তাঁর কথা শুনে আমার খুব কষ্ট হলো। আমি তখনই তাঁকে ৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।  অন্যান্য সবাই তাঁর এই হঠাৎ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কথা শুনে কারণ জানতে চাইলে তিনি নাকি তাদের বলেছিলেন, ‘আমি এক গরিব পিতা, আমার মেয়ে তো ধনে-মনে গরিব না। ওর ইচ্ছায় এবারের কোরবানি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আব্বার কথা লিখতে গেলে শেষ হবে না আমার স্মৃতির পাতা। তাঁর ইচ্ছা পূরণ করার জন্য তাঁর মৃত্যুর পর দুটি বই প্রকাশ করতে পেরেছি।  বাকি তিনটি প্রকাশ করার ইচ্ছা আছে।

আমার পিতা খন্দকার আবদুল হামিদের জ্ঞান, গৌরব, মর্যাদা, সততা, নিষ্ঠা, মানবতা, দেশপ্রেম এবং সর্বোপরি আল্লাহর ওপর অসীম আস্থা- এগুলো কোনোটাই আমার মতো এক অযোগ্য কন্যার পক্ষে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব। শুধু তাঁর কন্যা বলে গর্ব অহঙ্কার করার সৌভাগ্য পেয়েছি, পরম করুণাময়ের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।

লেখক : মরহুম সাংবাদিক খন্দকার আবদুল হামিদের কন্যা

এই বিভাগের আরও খবর
এসএসসির ফলাফল
এসএসসির ফলাফল
বিদেশি বিনিয়োগ
বিদেশি বিনিয়োগ
হাদিসে রসুল (সা.)
হাদিসে রসুল (সা.)
যানজটমুক্তির প্রত্যাশা
যানজটমুক্তির প্রত্যাশা
কোথায় পাব হোসাইনি রঙের মানুষ
কোথায় পাব হোসাইনি রঙের মানুষ
কেয়ামতের বড় আলামত প্রকাশের পথে!
কেয়ামতের বড় আলামত প্রকাশের পথে!
শহুরে ছাদকৃষিতে বাণিজ্যিক নার্সারি
শহুরে ছাদকৃষিতে বাণিজ্যিক নার্সারি
জাতীয়তাবাদের উদ্বিগ্ন হৃদয়
জাতীয়তাবাদের উদ্বিগ্ন হৃদয়
ডিসি নিয়োগ
ডিসি নিয়োগ
নির্বাচনের প্রস্তুতি
নির্বাচনের প্রস্তুতি
চূড়ান্ত বিজয় সত্যের আশুরা ও কারবালার বড় শিক্ষা
চূড়ান্ত বিজয় সত্যের আশুরা ও কারবালার বড় শিক্ষা
জিয়ার দর্শন : ন্যায়ের শাসন
জিয়ার দর্শন : ন্যায়ের শাসন
সর্বশেষ খবর
ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যায় আরও এক আসামি গ্রেফতার
ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যায় আরও এক আসামি গ্রেফতার

এই মাত্র | নগর জীবন

অগণতান্ত্রিক শক্তির বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান যুবদল সভাপতির
অগণতান্ত্রিক শক্তির বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান যুবদল সভাপতির

৪ মিনিট আগে | রাজনীতি

সিলেটে সুরমার পানি বাড়ছে, বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই কুশিয়ারা
সিলেটে সুরমার পানি বাড়ছে, বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই কুশিয়ারা

৮ মিনিট আগে | চায়ের দেশ

মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত : র‌্যাব
মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত : র‌্যাব

১৪ মিনিট আগে | জাতীয়

গরম মোকাবিলায় হাতে তৈরি এয়ার কুলার ব্যবহার করছেন আফগান ট্যাক্সি চালকরা
গরম মোকাবিলায় হাতে তৈরি এয়ার কুলার ব্যবহার করছেন আফগান ট্যাক্সি চালকরা

১৮ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে মা ফোন করে বলেন বিমানে বোমা আছে: র‌্যাব
ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে মা ফোন করে বলেন বিমানে বোমা আছে: র‌্যাব

২৮ মিনিট আগে | জাতীয়

চাঁদপুরে সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ কর্মশালা সম্পন্ন
চাঁদপুরে সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ কর্মশালা সম্পন্ন

৩৮ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় ব্যবস্থা নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় ব্যবস্থা নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

৩৯ মিনিট আগে | জাতীয়

মোংলায় বৃষ্টিতে তলিয়েছে সাড়ে ৬শ চিংড়ি ঘের
মোংলায় বৃষ্টিতে তলিয়েছে সাড়ে ৬শ চিংড়ি ঘের

৪৫ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

নদীর এই বাঁধ দিয়ে বন্যা ঠেকানো সম্ভব নয় : দুর্যোগ উপদেষ্টা
নদীর এই বাঁধ দিয়ে বন্যা ঠেকানো সম্ভব নয় : দুর্যোগ উপদেষ্টা

৫০ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বৃষ্টি ও তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নতুন বার্তা
বৃষ্টি ও তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নতুন বার্তা

৫৬ মিনিট আগে | জাতীয়

জেমিনি এখন পড়ছে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট, সুরক্ষায় বদলান সেটিং
জেমিনি এখন পড়ছে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট, সুরক্ষায় বদলান সেটিং

৫৯ মিনিট আগে | টেক ওয়ার্ল্ড

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা অব্যাহত থাকবে
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা অব্যাহত থাকবে

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

সিরিয়ার বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে আগুন ধরিয়ে দিল ইসরায়েলি বাহিনী
সিরিয়ার বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে আগুন ধরিয়ে দিল ইসরায়েলি বাহিনী

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

‌‘সরকার জনগণের জানমাল ও সম্মান রক্ষায় সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ’
‌‘সরকার জনগণের জানমাল ও সম্মান রক্ষায় সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ’

১ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

এবার মুদ্রার উল্টোপিঠ দেখলেন সাকিব
এবার মুদ্রার উল্টোপিঠ দেখলেন সাকিব

১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

পররাষ্ট্র দপ্তরের ১৩৫০ কর্মকর্তাকে ছাঁটাই করছে ট্রাম্প প্রশাসন
পররাষ্ট্র দপ্তরের ১৩৫০ কর্মকর্তাকে ছাঁটাই করছে ট্রাম্প প্রশাসন

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ঝিনাইদহে হাসপাতালে বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচ্ছন্নতা অভিযান
ঝিনাইদহে হাসপাতালে বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচ্ছন্নতা অভিযান

১ ঘণ্টা আগে | বসুন্ধরা শুভসংঘ

জঙ্গিবাদের সন্দেহে বাংলাদেশি নাগরিকদের তদন্তে সহযোগিতা করবে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ
জঙ্গিবাদের সন্দেহে বাংলাদেশি নাগরিকদের তদন্তে সহযোগিতা করবে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ

১ ঘণ্টা আগে | পরবাস

মার্কিন নাগরিককে পিটিয়ে হত্যা ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের
মার্কিন নাগরিককে পিটিয়ে হত্যা ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

মারুফুলের হাতেই থাকছে আবাহনীর দায়িত্ব
মারুফুলের হাতেই থাকছে আবাহনীর দায়িত্ব

১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

আবু সাঈদের শাহাদাত বার্ষিকীতে বেরোবি যাচ্ছেন চার উপদেষ্টা
আবু সাঈদের শাহাদাত বার্ষিকীতে বেরোবি যাচ্ছেন চার উপদেষ্টা

২ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

গাইবান্ধায় ভাতিজার ছুরিকাঘাতে চাচার মৃত্যু
গাইবান্ধায় ভাতিজার ছুরিকাঘাতে চাচার মৃত্যু

২ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

দুই দেশের হয়ে টেস্ট খেলা মুরের অবসর
দুই দেশের হয়ে টেস্ট খেলা মুরের অবসর

২ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

পাশবিক এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে : আসিফ নজরুল
পাশবিক এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে : আসিফ নজরুল

২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

গাজাকে শিশুদের কবরস্থান বানাচ্ছে ইসরায়েল: জাতিসংঘ
গাজাকে শিশুদের কবরস্থান বানাচ্ছে ইসরায়েল: জাতিসংঘ

২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় লেবাননে হতাহত ৬
ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় লেবাননে হতাহত ৬

২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

জোতা’র ২০ নম্বর জার্সি আজীবনের জন্য তুলে রাখলো লিভারপুল
জোতা’র ২০ নম্বর জার্সি আজীবনের জন্য তুলে রাখলো লিভারপুল

২ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

সর্বাধিক পঠিত
কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানি হামলা, স্যাটেলাইট চিত্রে যা দেখা গেলো
কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানি হামলা, স্যাটেলাইট চিত্রে যা দেখা গেলো

১৭ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

হাসিনাকন্যা পুতুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
হাসিনাকন্যা পুতুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ৪
মিটফোর্ডে ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ৪

১৬ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

সেনাপ্রধানের হুংকার, এক ইঞ্চি মাটিও ছাড়বে না ইরান
সেনাপ্রধানের হুংকার, এক ইঞ্চি মাটিও ছাড়বে না ইরান

১৫ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ জানালো তদন্তকারীরা
এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ জানালো তদন্তকারীরা

৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর বর্তমান অবস্থা কি?
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর বর্তমান অবস্থা কি?

২০ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

কারাগারে আবুল বারকাত
কারাগারে আবুল বারকাত

১৯ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

জোয়ালে বেঁধে নব দম্পতিকে দিয়ে করানো হলো হালচাষ!
জোয়ালে বেঁধে নব দম্পতিকে দিয়ে করানো হলো হালচাষ!

১৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

পদ্মা সেতুর বোঝা এখনও টানছেন গ্রাহকরা, মোবাইল রিচার্জে কাটে সারচার্জ
পদ্মা সেতুর বোঝা এখনও টানছেন গ্রাহকরা, মোবাইল রিচার্জে কাটে সারচার্জ

১৯ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বিমানে ‘বোমা থাকার’ ফোনে থামল কাঠমান্ডুগামী ফ্লাইট
বিমানে ‘বোমা থাকার’ ফোনে থামল কাঠমান্ডুগামী ফ্লাইট

১৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বিএনপির আদর্শ ও রাজনীতির সঙ্গে সন্ত্রাস-বর্বরতার কোনো সম্পর্ক নেই : মির্জা ফখরুল
বিএনপির আদর্শ ও রাজনীতির সঙ্গে সন্ত্রাস-বর্বরতার কোনো সম্পর্ক নেই : মির্জা ফখরুল

১৩ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

খুলনায় বাসার সামনে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা
খুলনায় বাসার সামনে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা

২১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

যুদ্ধে ৫০০ ইসরায়েলি নিহত, দাবি ইরানি স্পিকারের
যুদ্ধে ৫০০ ইসরায়েলি নিহত, দাবি ইরানি স্পিকারের

২১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইতিহাস গড়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইতালি
ইতিহাস গড়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইতালি

৬ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

চার দশকের সংঘাতের অবসান, অস্ত্র ধ্বংস করছে পিকেকে
চার দশকের সংঘাতের অবসান, অস্ত্র ধ্বংস করছে পিকেকে

৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

চিকিৎসাধীন শিল্পী ফরিদা পারভীনের খোঁজ নিলেন খালেদা জিয়া
চিকিৎসাধীন শিল্পী ফরিদা পারভীনের খোঁজ নিলেন খালেদা জিয়া

২১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

পাশবিক এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে : আসিফ নজরুল
পাশবিক এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে : আসিফ নজরুল

২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলির ঘটনায় ১০ নেতা বহিষ্কার
বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলির ঘটনায় ১০ নেতা বহিষ্কার

১৪ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে মা ফোন করে বলেন বিমানে বোমা আছে: র‌্যাব
ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে মা ফোন করে বলেন বিমানে বোমা আছে: র‌্যাব

২০ মিনিট আগে | জাতীয়

টেনিস খেলোয়াড় ‘মেয়েকে গুলি করে হত্যা’ করলেন বাবা
টেনিস খেলোয়াড় ‘মেয়েকে গুলি করে হত্যা’ করলেন বাবা

২২ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

এসএসসি পরীক্ষায় সেনাবাহিনী পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের অসাধারণ সাফল্য
এসএসসি পরীক্ষায় সেনাবাহিনী পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের অসাধারণ সাফল্য

১৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

গাজায় ৮ ইসরায়েলি সেনা হতাহত
গাজায় ৮ ইসরায়েলি সেনা হতাহত

২১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

সাফে শ্রীলঙ্কাকে ৯ গোলে বিধ্বস্ত করলো বাংলাদেশ
সাফে শ্রীলঙ্কাকে ৯ গোলে বিধ্বস্ত করলো বাংলাদেশ

২০ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

২১ জেলায় পানিতে ডুবেছে ৭২ হাজার হেক্টর জমির ফসল
২১ জেলায় পানিতে ডুবেছে ৭২ হাজার হেক্টর জমির ফসল

২১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ইচ্ছামতো সূর্যস্নান করতে পারবেন না ট্রাম্প, ড্রোন হামলা হতে পারে
ইচ্ছামতো সূর্যস্নান করতে পারবেন না ট্রাম্প, ড্রোন হামলা হতে পারে

২১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ দিলেই চলমান সব সংকট কেটে যাবে: দুদু
নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ দিলেই চলমান সব সংকট কেটে যাবে: দুদু

২২ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬৭ শিক্ষককে একযোগে বদলি
সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬৭ শিক্ষককে একযোগে বদলি

২০ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

সেই হীরার শহর এখন ভূতুড়ে অতীত
সেই হীরার শহর এখন ভূতুড়ে অতীত

১৮ ঘণ্টা আগে | পাঁচফোড়ন

কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন
কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন

১৯ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে খলিলের ২০ মিলিয়ন ডলারের মামলা
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে খলিলের ২০ মিলিয়ন ডলারের মামলা

১৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

প্রিন্ট সর্বাধিক
নিথর দেহ টেনেহিঁচড়ে চলে উন্মত্ততা
নিথর দেহ টেনেহিঁচড়ে চলে উন্মত্ততা

প্রথম পৃষ্ঠা

প্রকাশ্যে গুলি ও রগ কেটে খুন
প্রকাশ্যে গুলি ও রগ কেটে খুন

প্রথম পৃষ্ঠা

ঢাকায় মানবাধিকার কার্যালয় হতে দেব না
ঢাকায় মানবাধিকার কার্যালয় হতে দেব না

প্রথম পৃষ্ঠা

দুর্গন্ধযুক্ত আয়নাঘরে পারফিউমের ঘ্রাণ!
দুর্গন্ধযুক্ত আয়নাঘরে পারফিউমের ঘ্রাণ!

প্রথম পৃষ্ঠা

রাজপথ যেন মরণফাঁদ
রাজপথ যেন মরণফাঁদ

পেছনের পৃষ্ঠা

অবসরে যাচ্ছেন মোদি
অবসরে যাচ্ছেন মোদি

প্রথম পৃষ্ঠা

এনসিপির দরজা খোলা, জামায়াতের সঙ্গে জোট নয়
এনসিপির দরজা খোলা, জামায়াতের সঙ্গে জোট নয়

প্রথম পৃষ্ঠা

অপরাধীরাই খানের টাকার খনি
অপরাধীরাই খানের টাকার খনি

প্রথম পৃষ্ঠা

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন প্রস্তুতি
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন প্রস্তুতি

প্রথম পৃষ্ঠা

বাঘ দম্পতি রোমিও জুলিয়েটের কোলে ডোনাল্ড ট্রাম্প
বাঘ দম্পতি রোমিও জুলিয়েটের কোলে ডোনাল্ড ট্রাম্প

পেছনের পৃষ্ঠা

খাল থেকে ১৫ কেজির বোয়াল শিকার
খাল থেকে ১৫ কেজির বোয়াল শিকার

পেছনের পৃষ্ঠা

আজকের ভাগ্যচক্র
আজকের ভাগ্যচক্র

আজকের রাশি

পর্যটকে টইটম্বুর কক্সবাজারে আতঙ্ক গুপ্তখাল
পর্যটকে টইটম্বুর কক্সবাজারে আতঙ্ক গুপ্তখাল

নগর জীবন

ঘড়ির রাজকীয় ব্যবসা এখন ধুঁকছে
ঘড়ির রাজকীয় ব্যবসা এখন ধুঁকছে

শনিবারের সকাল

নেপালে বাড়ছে বাংলাদেশি পর্যটক
নেপালে বাড়ছে বাংলাদেশি পর্যটক

পেছনের পৃষ্ঠা

আগে দরকার সুশীল সমাজের সংস্কার
আগে দরকার সুশীল সমাজের সংস্কার

প্রথম পৃষ্ঠা

বিদেশি নায়িকা কেন পছন্দ শাকিবের
বিদেশি নায়িকা কেন পছন্দ শাকিবের

শোবিজ

আল্লু অর্জুনের চার নায়িকা
আল্লু অর্জুনের চার নায়িকা

শোবিজ

আতঙ্কে ফেনী নোয়াখালীবাসী
আতঙ্কে ফেনী নোয়াখালীবাসী

পেছনের পৃষ্ঠা

উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে খালেদা জিয়ার আহ্বান
উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে খালেদা জিয়ার আহ্বান

প্রথম পৃষ্ঠা

বিষাক্ত ধোঁয়ায় মানুষ ক্যানসার আক্রান্ত
বিষাক্ত ধোঁয়ায় মানুষ ক্যানসার আক্রান্ত

প্রথম পৃষ্ঠা

পঞ্চম শীর্ষ টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান রুট
পঞ্চম শীর্ষ টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান রুট

মাঠে ময়দানে

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার লাশ
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার লাশ

প্রথম পৃষ্ঠা

বৃষ্টিভেজা দিনে কাছাকাছি রাজ-শুভশ্রী
বৃষ্টিভেজা দিনে কাছাকাছি রাজ-শুভশ্রী

শোবিজ

জয়ে শুরু রংপুর রাইডার্সের
জয়ে শুরু রংপুর রাইডার্সের

মাঠে ময়দানে

বাংলাদেশের দাপটে অসহায় শ্রীলঙ্কা
বাংলাদেশের দাপটে অসহায় শ্রীলঙ্কা

মাঠে ময়দানে

জোনাকির আলোয় বৈদ্যুতিক বাতির বিকল্প!
জোনাকির আলোয় বৈদ্যুতিক বাতির বিকল্প!

পরিবেশ ও জীবন

ব্যাটারদের টেকনিকে দুর্বলতা রয়েছে
ব্যাটারদের টেকনিকে দুর্বলতা রয়েছে

মাঠে ময়দানে

সোনালি যুগের চলচ্চিত্র নির্মাতা দিলীপ বিশ্বাস
সোনালি যুগের চলচ্চিত্র নির্মাতা দিলীপ বিশ্বাস

শোবিজ

চিলড্রেন অব হ্যাভেন
চিলড্রেন অব হ্যাভেন

শোবিজ