সোমবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিবিসি বাংলা রেডিও

স্বাধিকার ও মুক্তিযুদ্ধে যাদের ভূমিকা অনন্য

দীর্ঘ ৮১ বছর ধরে বাঙালির হৃদয় রাজ্যে ঠাঁই করে নেওয়া বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার এখন ইতিহাসের অনুষঙ্গ। গত ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টায় বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গেছে। মূলত খরচ কমাতে বিবিসি বাংলাসহ ১০টি ভাষার রেডিও সম্প্রচার বন্ধ করেছে। গত সেপ্টেম্বরেই বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে ব্যাপক পরিবর্তনের পটভূমিতে বিবিসি বাংলা রেডিও বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে ২০২২ সালের শেষ দিনে। বিবিসি বাংলা বেতারের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১১ অক্টোবর ১৯৪১ সালে। তখন প্রতি সপ্তাহে লন্ডন থেকে বাংলায় নিউজলেটার অনুবাদ করে পড়ে শোনানোর মধ্য দিয়ে শুরু হতো ওই রেডিও সম্প্রচার। শুরুর সেই সময়ে ইংরেজিতে লেখা কথিকা প্রতি সপ্তাহে অনুবাদ করে পড়ে শোনাতেন ড. সুধীন ঘোষ, যিনি ছিলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক। ইংরেজিতে কথিকাগুলো লিখতেন প্রবন্ধকার, ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক এরিক ব্লেয়ার, সাহিত্য জগতে যিনি সুপরিচিত ছিলেন জর্জ অরওয়েল নামে। যে সময় বিবিসির বাংলা রেডিও শুরু হয় তখন ইউরোপজুড়ে বাজছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা। জর্জ অরওয়েলের বার্তা লিপির প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে যুদ্ধ প্রসঙ্গ ছাড়াও থাকত সাহিত্য, উপনিবেশের অন্য জায়গার পরিস্থিতিসহ অন্যান্য বিষয়াবলিও। বিবিসি বাংলার যাত্রা শুরু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্রান্তিকালে মিত্র পক্ষের বক্তব্য ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। কারণ সেই সময় মিত্র পক্ষের হয়ে লড়াই করছিল ভারতীয় উপমহাদেশের লাখ লাখ সৈন্য। তাই অক্ষশক্তি জার্মানি, জাপান ও ইতালির প্রচারণায় যেন উপমহাদেশের মানুষ বিভ্রান্ত না হন, সেটা নিশ্চিত করাই ছিল মূল লক্ষ্য। বিবিসি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে বাংলাদেশের স্বাধিকার সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছে।  মুক্তিযুদ্ধে বিবিসির ভূমিকা ছিল অনন্য। ২০০৪ সালে শ্রোতা জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নাম ঘোষণা করে বিবিসি। স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায়ও বস্তুনিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে এই অভিজাত রেডিওটি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর