বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাড়ি নিয়ে বেরসিকের বড্ড বেশি বাড়াবাড়ি

মেজর নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ (অব.) পিএইচডি

বাড়ি নিয়ে বেরসিকের বড্ড বেশি বাড়াবাড়ি

বলাই বাহুল্য, বেহুদা ব্যাপারে বরাবর বড্ড বেশি বাড়াবাড়িই বেরসিকদের ব্রত। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। এবার এই বেরসিকদের বাঁকা চোখ পড়েছে বড় বড় মানুষের কেনা বিদেশের বৃহৎ বাড়িঘরের ওপর। অবশ্য বছরটা শুরু হয়েছিল বাড়ি নয়, বাড়িয়ার খবর দিয়ে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির বর্ষীয়ান নেতা উকিল আবদুস সাত্তারের বাক্যবাণে গেল বছর শেষ দিনে বেঁকে বসে তার দল। বয়সের এই পড়ন্ত বেলায় তিনি বুঝতে পারেন, বিএনপিতে তার বসার ব্যবস্থা ভবিষ্যতে বন্ধ হতে পারে। নির্বাচনী এলাকা ও এলাকার বাইরে এক ব্যারিস্টারের সরকারবিরোধী বলিষ্ঠ বক্তব্য ও বেপরোয়া বিচরণ তথা আগামী নির্বাচনে দলীয় টিকিট বাগানোর বাস্তবতার বিপরীতে সাত্তারের এই বাক্যবাণ বলে বোধ করেন বেরসিকরা। তাই বছরের প্রথম দিনেই বিএনপির সব বই-খাতা থেকে বিদায় করা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচক্ষণ নেতা উকিল আবদুস সাত্তারকে। তবে উকিল-ব্যারিস্টারের (ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা) বদলে ব্যাপক আলোচনা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় থাকা কুলীন আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে, সাত্তারের বৈতরণী পারের ব্যবস্থা করতে যাদের নৌকাবঞ্চিত করা হয়। বেরসিকদের বাড়তি বক্তব্য, উকিলকে মামলা জিতিয়ে বিএনপিকে বিদ্যা শিক্ষা দিতেই এই ব্যবস্থা।

সময় বোঝেন না সাংবাদিকরা। বছরের চতুর্থ দিনে একটি দৈনিকের প্রথম পাতার খবর ‘প্রতারণার টাকায় ঢাকায় চার বাড়ি’। শরীয়তপুরের কবির ওরফে মিজান উকিল শরিয়তবিরোধী উপায়ে কখনো শিল্পপতি আবার কখনোবা ভারতীয় ব্যবসায়ী পরিচয়ে বোকা বানান বিত্তশালীদের। এতেই ব্যাপকভাবে ভরে ওঠে কবির ওরফে মিজান উকিলের টাকার বাক্স, যা দিয়ে রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকার সবুজ বাংলা আবাসিক এলাকা, মিরপুর ১১, আদর্শনগর এবং ৫৪ নম্বর প্লট এলাকায় চারটি বাড়ি কেনেন তিনি। সেই সঙ্গে বেশ কিছু দোকানেরও মালিক বনে যান। ১১ মামলার আসামি মিজান বছরের পর বছর প্রতারণা করলেও আয়কর বিভাগ, সিটি করপোরেশন, দুদক, গোয়েন্দা বাহিনী বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী- কেউই চিনত না এই মিজানকে। চিনল শুধু একটি দৈনিক পত্রিকার বেরসিকরা। সপ্তাহ না ঘুরতেই আবারও খবরের বোমা ফাটায় তারা। এবারের শিরোনাম ওয়াসার তাকসিমের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি। পাঁচটি বাড়ির ঠিকানাসহ মোট ১৪টি বাড়ির বিবরণে নড়া পড়ে বিচারালয়েও। দেশ-বিদেশের গোয়েন্দা বাবাজিরাও বিষয়টি বুঝতে যাচ্ছে বলে খবরের বিবরণে প্রকাশ। অন্য আরেকটি খবরে দৈনিকটি প্রকাশ করেছে, ১২ বছরে তাকসিম এ খানের বেতন ৪২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তার ১৩ বছরের মেয়াদে ১৪ বার পানির দাম বৃদ্ধি আর যুক্তরাষ্ট্রের ১৪টি বাড়ির খবর নিতান্তই কাকতালীয়। এ নিয়ে ব্যঙ্গ করার কিছু নেই। কারণ তাকসিম এ খান বেরসিকদের ১৪ বাড়ির খবরকে ওয়াসার ১০০ ভাগ বিশুদ্ধ পানির আদলে ১০০ ভাগ অসত্য বলে দাবি করেছেন।

বছরের প্রথম ১৫ দিনে একাধিক ইংরেজি দৈনিকের সংবাদ শিরোনাম ছিল ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের ৫০০ মিলিয়ন (৫০ কোটি টাকা) নিয়ে উধাও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ‘ইউনিভার্সেল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস’-এর কর্ণধার সৈয়দ আমির হামজা। ইংরেজি দৈনিক নিউএজ-এর ৩ জানুয়ারির তথ্যমতে, পুঁজিবাজারের চারটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ১৫৮ কোটি টাকা নিয়ে ১৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে দুবাই পাড়ি দেন এই সৈয়দ বংশের সন্তান। এ ধরনের শত শত বঙ্গ সন্তানের অর্থ পাচারের খবর বাংলাদেশ না জানলেও তা জানতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘সেন্টার ফর ডিফেন্স স্টাডিজ’। তাদের মতে, অন্তত ৪৫৯ জন বাংলাদেশের বিত্তশালী নাগরিকের ৯৭২টি সম্পদ তথা বাড়িঘর-দোকান বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান আছে দুবাইতে। স্বপ্ন আর বিনোদনের এই স্বর্গরাজ্যে এসব বাড়িঘর কীভাবে হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই বিপুল পরিমাণ সম্পদের আর্থিক মূল্য নিয়ে নানা তথ্য ভেসে বেড়াচ্ছে। ১০ জানুয়ারি বেরসিকদের লেখা এক সংবাদে দৈনিক বণিক বার্তা যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউনাইটেড আরব আমিরাতের দুটি সংস্থার বরাতে এই সংবাদ প্রকাশ করলে বিষয়টি হাই কোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী সুবীর নন্দী। এ সংক্রান্ত রিট আমলে নিয়ে রাষ্ট্রীয় চারটি সংস্থাকে বিষয়টি অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন মহামান্য হাই কোর্ট। দৈনিক বণিক বার্তার অনুমান, বাংলাদেশিদের গোপনে কেনা প্রপার্টির অর্থমূল্য এখন কম করে হলেও ১০০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি; অর্থাৎ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। উল্লেখ্য, পদ্মা ব্রিজ নির্মাণে খরচ হয়েছিল ২৭ হাজার ৭৩২ কোটি ৮ লাখ টাকা।

স্থানীয় পৌর মেয়রের ছেলে ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম তালুকদার কর্তৃক ঝালকাঠিতে সরকারি খাস জমিতে দখল বজায় রেখে বাড়িঘর স্থাপনের বাসনার কারণে তিন নদীর মোহনায় ইকোপার্ক বানাতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সময় স্থানীয় গণমাধ্যম ও ঢাকার একটি নতুন দৈনিকের ১৫ তারিখের প্রতিবেদনে লিখেছে, গাবখান, সুগন্ধা ও বিষখালী- এই তিন নদীর মোহনায় নয়নাভিরাম বিশাল এলাকায় সরকারের ৮৮.৩৬ একর খাস জমি রয়েছে। এই জমির মালিকানা দাবি করে আদালতে যান মনিরুল। সরকার পক্ষ এই মামলার শুনানির নোটিস গ্রহণ করলেও তারা ধার্য তারিখে আদালতে হাজির হননি। ফলে দুই মাস ১৬ দিনেই রায় মনিরুলের পক্ষে যায়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দুই মাস ১৬ দিনে জমিজমা-সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে নিন্দনীয় হলো আদালতে সরকার পক্ষের অনুপস্থিতি। বর্তমানে আপিল শুরু হয়েছে এই মামলার। জমি রক্ষা ও ইকোপার্কের বিশুদ্ধ বাতাসের আশায় দাবি তুলেছেন স্থানীয় বেরসিক পরিবেশবাদীরা।

১৫ জানুয়ারি একটি দৈনিকের অনলাইন ডেস্কের সংবাদ শিরোনাম ‘লন্ডনের অভিজাত এলাকায় জমি বাড়ির ক্রেতা বাংলাদেশিরাও’। তথ্যমতে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মধ্যে যারা লন্ডনে জমি বাড়ি ক্রয় করেন, সে তালিকায় ওপরের কাতারেই আছে বাংলাদেশ। অভিবাসন-সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এস্টোনসের তথ্য অনুসারে, লন্ডনের অভিজাত এলাকায় অভিবাসন-সংক্রান্ত অভিবাসন খাতের ক্রেতাদের ৪১ শতাংশই বিদেশি। এই বিদেশিদের মধ্যে নবম অবস্থানে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে জাপানিদের চেয়েও এগিয়ে আছে বাংলার বাড়িওয়ালারা। ২০২০ সালের প্রথম ৯ মাসে ১২ কোটি ২৮ লাখ ৯৫ হাজার ১২২ পাউন্ড বা প্রায় ১,৫৬১ কোটি টাকার সম্পদ কেনেন বাংলাদেশিরা। একই খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের ঠিকানা ব্যবহার করে আবাসন খাতে সম্পদ নিবন্ধনের সংখ্যা ২০১০ সালে ছিল ১৫টি। ২০২১ এই সংখ্যা ১৩৭-এ দাঁড়িয়েছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে সেই সংখ্যা বেড়ে কত হবে- সেটাই বেরসিকদের বিবেকের প্রশ্ন!

একটি দৈনিকের ১৪ ডিসেম্বরের খবর, বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশনের (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রণে থাকা ৩৫টি পাটকলের মধ্যে ২৭টি অলস পড়ে আছে। এসব পাটকলের ১,৫১৭ একর জমি, কারখানা, অফিস ও বাড়িঘর আজ জঙ্গলে পরিপূর্ণ। তবুও এসব পাহারাসহ নানা অজুহাতে বেতন ও বাড়িভাড়া নিচ্ছে প্রায় ২,৫১৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিজেএমসি লোকসান গুনেছে ২৬০ কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে বেতন-বাড়িভাড়াসহ বিবিধ ভাতা বাবদ ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। বাড়িতে বসে থেকেও বেতন তোলেন বিজেএমসির অনেকে। একই সংবাদে আরও প্রকাশ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়েরই আরেক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাট করপোরেশন (বিজিসি) ১৯৯৩ সালে বিলুপ্ত হলেও তিন দশকে এই বিলুপ্তির কাজ শেষ হয়নি। এখনো বিজিসির বেশ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির ২৯৫ একর জমির ১৯০ একরই বেদখল। বিজিসি এবং বিজেএমসির এই বেদখল বরদাস্ত করতে হচ্ছে বেরসিকদের বেতন ও বাড়িভাড়া দিয়ে।

ফরিদপুর জেলার কৈজুরী ইউনিয়নের জনৈক জাহাঙ্গীরের বাড়ির সামনের সড়ক এবং ভিতরের সড়ক-এমনকি শৌচাগারের সড়কও নির্মিত হয়েছে সরকারি বরাদ্দে। এই সরকারি বরাদ্দ দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আর সৌভাগ্যবান জাহাঙ্গীর হলেন যুব শ্রমিক লীগের নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল রাজ্জাকের আত্মীয়। তথ্য মোতাবেক ২০২১-২২ অর্থবছরে সংসদ সদস্য হিসেবে উন্নয়ন বাজেট থেকে ৯৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৩৩ টাকা লাভ করেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ৮৫টি প্রকল্পের বিপরীতে খরচ দেখিয়ে গেল বছরের ১৯ মে এই টাকা তুলে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ১১টি প্রকল্পে কোনো কাজই হয়নি। আর ১৭টিতে হয়েছে নামমাত্র কাজ। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে ফরিদপুরের আলিশান বাড়ি ছেড়ে দুবাই আছেন খন্দকার মোশাররফ। তবে দুবাই কোন ঠিকানায়, তা জানতে পারেননি বেরসিকরা। এসব তথ্য উঠে এসেছে দৈনিকটির ১১ জানুয়ারির পাতায়।

আসলে ক্ষমতা না থাকলে যে বাড়িঘরও থাকে না, তার করুণ উদাহরণ ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার দুবারের সাবেক এমপি এনামুল হক জজ মিয়া। ৮৩ বছর বয়সে এই সাবেক সংসদ সদস্যের গৃহহীন অবস্থায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১১ জানুয়ারি তারিখে করুণ মৃত্যু উঠে এসেছে প্রায় সব মূলধারার মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সার্চলাইট অনুষ্ঠানের একটি পর্ব ১০ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখ প্রচারিত হয়। ইউটিউবে থাকা এই অনুষ্ঠান দেখেছেন প্রায় ৪ লাখ ইউটিউব দর্শক। এই অনুষ্ঠানে প্রামাণ্য দলিলসহ নাটোরের এক এমপি ও তাঁর স্ত্রীর সাম্প্রতিক সময়ে অবিশ্বাস্যভাবে সম্পদ বৃদ্ধির তথ্য তুলে ধরা হয়। ছবি দেখিয়ে নাটোরের আলিশান প্রাসাদ ও কানাডার জান্নাতি হাউস নামের বাড়ির মালিকানা এই দম্পতির বলে উল্লেখ করা হয়। অবশ্য এমপি বলেছেন, এসবই মিথ্যা-বানোয়াট। একই টিভি চ্যানেল গত ১৪ জানুয়ারিতে প্রায় সাড়ে ৩ মিনিটের একটি সংবাদ ক্লিপ ইউটিউবে প্রকাশ করে, যা দুই দিনেই ৩ লক্ষাধিক দর্শক দেখেছেন। এই সংবাদ তৈরি করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডভিত্তিক এনজিও এবং দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক ফোরাম ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট’ (সংক্ষেপে ওসিসিআরপি) নামক সংগঠনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি তথ্যকে উদ্ধৃত করে। এই সংগঠন বিশ্বের বহু দেশের বহু দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ও মিডিয়ার সঙ্গে একত্রে কাজ করে এবং প্রতি বছর বিশ্বের বুকে দুর্নীতি প্রসারে সবচেয়ে বেশি দায়ী মানুষ তথা ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ খুঁজে বের করে। সংগঠনের ওয়েবসাইট ও ইউটিউবে থাকা বাংলাদেশি টিভির সংবাদ ক্লিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্য আমেরিকার নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে বিগত দিনে ৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৪০ কোটি টাকা) ব্যয়ে অন্তত ৯টি সম্পদ অর্জন করেন। এ সংবাদে আরও উল্লেখ করা হয়, এ সম্পত্তি অর্জন শুরু হয় ২০১৪ সালে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসের একটি সুউচ্চ ভবনে অ্যাপার্টমেন্ট কেনার মধ্য দিয়ে। যথারীতি সংসদ সদস্যপ্রবর এই তথ্য ও সংবাদকে মিথ্যা বলেছেন। প্রকৃত সত্য-মিথ্যার আরও সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন বেরসিক সংবাদকর্মীরা।

প্রিয় পাঠক, শুরু করেছিলাম বাড়ি নয়, বাড়িয়া অর্থাৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রসঙ্গ দিয়ে। শেষ করি বাড়ি নয়, বেড়ি প্রসঙ্গ টেনে। গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন বোয়ালী গ্রামের সন্তান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম বিস্ফোরক মামলায় ৪১ দিন কারাভোগ করে ১১ জানুয়ারি বুধবার জামিনে মুক্ত হন। কারাভোগকালে ২০ ডিসেম্বর তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্ত হয়ে মায়ের জানাজায় ইমামতি করার সময়ও তাকে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় দেখা যায়।

জামিনযোগ্য মামলার আসামির প্রতি এই আচরণ নিয়ে তীব্র সমালোচনা উঠে সর্বত্র দেশ-বিদেশে। কেউ যদি অবৈধভাবে দেশ-বিদেশে বাড়ি করে থাকেন অথবা তাদের অবৈধ বাড়ি না থাকা সত্ত্বেও বাড়িজনিত মিথ্যা খবর নিয়ে বেরসিকরা যদি বাড়াবাড়ি করে থাকেন, তবে ডান্ডাবেড়ি কি তাদেরই প্রাপ্য নয়? এই লেখা পড়তে পড়তে কেউ ক্লান্ত বা হতাশ হলে দুটি গান শুনতে পারেন। একটি লালনের ‘বাড়ির কাছে আরশিনগর’ আর অন্যটি হাসানের ‘লোকে বলে, বলে রে, ঘর বাড়ি ভালা না আমার’।

পাদটীকা : বাড়িসংক্রান্ত আরও কিছু তথ্য ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে রয়েছে। তবে বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই-বাছাই সাপেক্ষেই কেবল সেগুলো নিয়ে লেখা সম্ভব। তবে এমন বিষয়ে যেন এটিই শেষ লেখা হয়, এটাই প্রত্যাশা।

লেখক : গবেষক, বিশ্লেষক ও কলামিস্ট

e-mail: [email protected]

সর্বশেষ খবর