ডলার সংকটে বেসামাল হয়ে উঠছে অর্থনীতি। করোনাকালেও বাংলাদেশ যে ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার মতো সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশীয় দেশকে নিজেদের রিজার্ভ থেকে ঋণ দিয়েছে তাদের অর্থনৈতিক সংকট ঘোচাতে, সেখানে নিজেরাই এখন বিপাকে রয়েছে। করোনাভাইরাস ও রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বজুড়ে যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে তার নির্মম শিকারে পরিণত হয়েছে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ বলেছে চলতি বছর বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা ও খাদ্যাভাব দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশও সম্ভাব্য যে কোনো পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। আশার কথা, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ইতিবাচক পথে হাঁটছে বাংলাদেশ। দেশে গত বছর থেকে শুরু হওয়া ডলার সংকট ক্রমান্বয়ে প্রকট আকার ধারণ করলেও সুখবর হলো- এ পরিস্থিতির মধ্যে চলতি বছরের শুরুতেই প্রবাসী আয় বেড়েছে। চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম ২০ দিনে ১৩১ কোটি ৫২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম ২০ দিনে প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে। আলোচ্য এ সময়ে বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০৯ কোটি ৯৯ লাখ, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৭ কোটি ৯১ লাখ, বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৫০ লাখ এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৫০ লাখ ডলার। সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বর মাসে ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এই পরিমাণ ২০২১ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে প্রায় ৭ কোটি ডলার বেশি। রেমিট্যান্স বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের রপ্তানি আয়েও সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। গত এক বছরে দেশের রপ্তানি বেড়েছে দেড় লাখ কোটি টাকা। আমদানি পণ্যের দাম অবিশ্বাস্য গতিতে বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বাড়লেও তা চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট কি না সংশয় রয়েছে। যে কারণে খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে উৎপাদন বাড়ানোর পথে হাঁটছে বাংলাদেশ।