মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ

পর্যটনের জন্য সুদিন বয়ে আনবে

পর্যটনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দুনিয়ার পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর একটি। নদনদী, খাল-বিল আর সবুজে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য এ এক লজ্জা বললেও অত্যুক্তি হবে না। এ দেশে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকত রয়েছে কক্সবাজারে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের সৌন্দর্য যে-কাউকে বিমোহিত করবে। বাংলাদেশের তিন পার্বত্য জেলা পর্যটনপ্রেমীদের আকর্ষণ করার জন্যও যথেষ্ট। এ দেশে রয়েছে ৫ হাজার বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস। রয়েছে অসংখ্য পুরাকীর্তি। তার পরও দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের পর্যটন আয় সবচেয়ে কম। এ দীনতার প্রধান কারণ পর্যটনবান্ধব পরিবেশ ও অবকাঠামোর অভাব। এ প্রভাব পূরণে সরকার দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল। বাংলাদেশে প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা ঐতিহ্যের অংশ হলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই চালু হবে এ রেলপথ। ২০২৪ সালের জুনে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আগামী আগস্টেই পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৮০ শতাংশ কাজও শেষ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের নগরী কক্সবাজারের সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সরাসরি রেল যোগাযোগ চালু হবে। দৈনিক যাতায়াত করতে পারবে প্রায় ১ লাখ পর্যটক। কক্সবাজারের নতুন রেলপথে চলাচলের জন্য টুরিস্ট কোচের আদলে উন্নতমানের কোচ আমদানি করা হচ্ছে। ৫৪টি কোচ কেনা হবে যেগুলোর জানালা সুপ্রশস্ত। ট্রেনে বসেই মানুষ অনায়াসে দুই পাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার সুযোগ পাবে। দেশের প্রথম আইকনিক রেলস্টেশনের নির্মাণকাজও সমাপ্তির পথে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য আইকনিক রেলস্টেশনে থাকবে ‘লাগেজ স্টেশন’, অভ্যর্থনা কক্ষ, শিশুদের বিনোদনের জায়গা, প্যাসেঞ্জার লাউঞ্জ, শপিং মল, রেস্তোরাঁ। একই দিনে কোনো হোটেলে অবস্থান না করে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ঘুরে আসার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা। ঢাকা থেকে সাড়ে সাত ঘণ্টায় এবং চট্টগ্রাম থেকে আড়াই ঘণ্টায় যাওয়া যাবে কক্সবাজারে। এর ফলে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্রসৈকতে দেশি-বিদেশি পর্যটকের ভিড় বাড়বে। বয়ে আনবে পর্যটনের সুদিন।

সর্বশেষ খবর