শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি

ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ক্ষতিপূরণ প্রাপ্য

সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মেরুদেশের বরফ গলছে। হিমালয়ের বরফও গলছে ক্রমান্বয়ে। এর ফলে সাগর পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়েছে। বিশ্বে কলকারখানা যান্ত্রিক যানবাহন এবং মানুষের জীবনযাপনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, ফ্রিজ ইত্যাদির ব্যবহার যত বাড়ছে, ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বের নিচু উপকূলীয় অঞ্চল ও ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোতে বসবাসকারী লাখ লাখ বাসিন্দা গৃহহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাদের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাব নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলো ছাড়াও হুমকির মুখে রয়েছে ব্যাংকক, বুয়েন্স আয়ার্স, জাকার্তা, লাগোস, লন্ডন, লস অ্যাঞ্জেলেস, মুম্বাই, মাপুতো, নিউইয়র্ক ও সাংহাইয়ের মতো বড় শহরগুলো। বিপদটি বিশেষ করে প্রায় ৯০ কোটি মানুষের জন্য প্রকট, যারা নিচু উপকূলীয় অঞ্চলে বাস করে। বিশ্বের প্রতি ১০ জনের একজন মানুষ এই হুমকির সম্মুখীন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবী সহনীয় পর্যায়ের চেয়েও বেশি উত্তপ্ত হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের হিমবাহ ও বরফ গলে যাচ্ছে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সমীক্ষায় অ্যান্টার্কটিকায় প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন টন বরফ গলে যাচ্ছে। গ্রিনল্যান্ড প্রতি বছর ২৭০ বিলিয়ন টন বরফ হারাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলশ্রুতিতে ১৯০০ সাল থেকে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে শুরু করেছে। পশ্চিমা বিশ্বে কলকারখানা গড়ে ওঠা ও যান্ত্রিক যানবাহন চালুর পর থেকে শুরু হয়েছে জলবায়ুর অশুভ পরিবর্তন। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের লাখ লাখ অধিবাসী ইতোমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার।  দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষুদ্র দেশ মালদ্বীপের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে। এ বিপদ ঠেকাতে যেসব কারণে পৃথিবীতে উষ্ণতা বাড়ছে তা পরিহার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিল্পোন্নত দেশগুলোর দায় অনস্বীকার্য। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ প্রদানে তাদের আন্তরিক হতে হবে। এটি দয়া নয় ক্ষতিগ্রস্তদের অধিকার।

সর্বশেষ খবর