শনিবার, ১১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

মুরগি সিন্ডিকেট

সরকারকে শক্ত হতে হবে

দেশের মানুষের আমিষ চাহিদা মেটায় যে ব্রয়লার মুরগি, মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে তার দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এ মূল্যবৃদ্ধির জন্য একাধিক অশুভ সিন্ডিকেট কাজ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নিত্যপণ্যের মূল্য মানুষের নাগালের মধ্যে থাকা না থাকা যে কোনো সরকারের জনপ্রিয়তার মাপকাঠি বলে বিবেচিত হয়। নির্বাচনের পৌনে এক বছর আগে ব্রয়লার মুরগি, সোনালি মুরগি ও ডিমের দাম যেভাবে বাড়ছে তা সরকারের সক্ষমতা নিয়েই প্রশ্ন সৃষ্টি করছে। এ কথা ঠিক, করোনাভাইরাসের জের না কাটতেই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ অর্থনৈতিক মন্দার থাবা বিস্তার করেছে দুনিয়াজুড়ে। মুরগির খাদ্যের ব্যাপারে দেশ অনেকটাই আমদানিনির্ভর এবং স্বীকার করতেই হবে বিশ্ববাজারে পোলট্রি ফিডের দাম এখন বেশি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে ফিডের দাম বাড়লেও প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ পড়ে ১৩৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা। এটা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজি দরে। সিন্ডিকেট না করে এত বেশি দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। উৎপাদন খরচের দ্বিগুণ দামে মুরগি বিক্রি হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য প্রতিযোগিতা কমিশনকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে। বাজার পরিদর্শনে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের ধারণা, মুরগির দাম বাড়ানোর পেছনে প্রকৃত অর্থেই একটি চক্রাকার সিন্ডিকেট কাজ করছে। এর সঙ্গে উৎপাদন খরচের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। করপোরেট প্রতিষ্ঠান থেকে খামারি, খামারি থেকে পাইকার, পাইকার থেকে খুচরা প্রতিটি পর্যায়ে মুরগির দাম নির্ধারণে ভূমিকা রাখে সিন্ডিকেট চক্র। তারা যে দাম ঠিক করে দেয়, সেই দামেই মুরগি বিক্রি হয়। মুরগির হঠাৎ দাম বৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে সিন্ডিকেটের প্রমাণ পেয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এ চক্রের কাছে ভোক্তারা অসহায়। দেশবাসীকে এই সিন্ডিকেট সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে একমাত্র সরকার। কিন্তু এ ক্ষেত্রের কর্তাব্যক্তিরা নিজেদের গুণগান প্রচারেই ব্যস্ত। এই আত্মঘাতী প্রবণতা থেকে সরে এসে সিন্ডিকেট ভাঙার দিকে মন না দিলে সরকারের জন্য বিসংবাদ ডেকে আনবে। যা হওয়া উচিত কি না সময় থাকতেই ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর