মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

শিক্ষক রাজনীতি

যথেচ্ছতার অবসান হওয়া উচিত

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা এক সময় ছিল আকাশছোঁয়া। শিক্ষক রাজনীতির বদৌলতে সে মর্যাদার অবনমন ঘটছে। যে শিক্ষকরা এক সময় পাঠদান ও গবেষণায় সময় কাটাতেন তারা এখন ব্যস্ত রাজনীতিতে। তাদের একাংশ যেভাবে দলীয় রাজনীতির লেজুড় হিসেবে ভূমিকা পালন করছেন তা সংশ্লিষ্ট দলের কর্মীদেরও অনেক সময় লজ্জায় ফেলায়। শিক্ষাঙ্গনে অশান্তির পেছনে শিক্ষক রাজনীতিও অনেকাংশে দায়ী। শিক্ষকদের কাউকে কাউকে নগ্নভাবে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, গ্রুপিং, আন্দোলন-পাল্টা আন্দোলনে জড়াতেও দেখা যায়। একপক্ষের বিপক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ তুলতেও পিছপা হন না অন্য শিক্ষকরা। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির কারণে পিছিয়ে যাচ্ছে পরীক্ষা, তৈরি হচ্ছে সেশনজট। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান আর গবেষণা নয় বরং শুধু রাজনীতিতেই মন দিতে দেখা যায় শিক্ষকদের। সার্বিকভাবে শিক্ষকদের এমন রাজনীতিতে নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও দলীয় ব্যানারের রাজনীতির প্রচারণায় জড়ান, এমন অভিযোগও ওপেন সিক্রেট। শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষকরা রাজনীতি সচেতন হবেন এমনটিই স্বাভাবিক। তারা রাজনীতিতে সম্পৃক্তও হতে পারেন। কিন্তু পাঠদান আর গবেষণা বাদ দিয়ে রাজনীতি যেন মুখ্য না হয়। অভিযোগ রয়েছে- শিক্ষক রাজনীতির স্বার্থে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনকেও ব্যবহার করছেন শিক্ষকরা। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের একজন দুর্বিনীত নেত্রী ও তার সহযোগীরা সারা দেশে নিন্দা ও ঘৃণার পাত্র হলেও এ জন্য উপাচার্য এবং মোসাহেব স্বভাবের কিছু শিক্ষকের দায় কম নয়। উপাচার্যের বেশ কয়েকটি অডিও ফাঁস হয়ে পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে এমন চিজরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দূরের কথা শিক্ষক হন কীভাবে? দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি শিক্ষকদের আকাশ ছোঁয়া মর্যাদা যারা ধারণ করার সক্ষমতা রাখেন না, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের ভাবমূর্তির সংকট তৈরি করছেন শিক্ষকতা পেশা জিম্মি হয়ে পড়ছে তাদের কাছে। এ যথেচ্ছতার অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর