বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে লাখো মানুষের রক্তের দামে। দুনিয়ার কোনো দেশের মানুষ স্বাধীনতার জন্য এত রক্ত দেয়নি। বলা হয়ে থাকে স্বাধীনতা অর্জনের চেয়েও স্বাধীনতা সুরক্ষা ও তা অর্থবহ করা আরও কঠিন। সংগত কারণেই সরকার স্বাধীনতা সুরক্ষায় দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করার দিকে নজর দিয়েছে। দেশের মালিক মোক্তার যারা সেই দেশবাসীর ভাগ্যোন্নয়নকে একই সঙ্গে সরকার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত নীতিমালা কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব। বাংলাদেশ কোনো দেশের সঙ্গে যুদ্ধ-সংঘাত চায় না। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে সক্রিয় শান্তির দেশ হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। তবে এ অঞ্চলের বাস্তবতার কারণে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। বর্তমান সরকারের ১৪ বছরে অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জনের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করা হয়েছে। সোমবার কক্সবাজারে প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে দেশের সামরিক ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কক্সবাজারের পেকুয়ায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি ‘বিএনএস শেখ হাসিনা’র কমিশনিং অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। বলেন, তাঁর সরকার ২০১৭ সালের ১২ মার্চ নৌবহরে দুটি সাবমেরিন- বিএনএস নবযাত্রা ও বিএনএস জয়যাত্রা যুক্ত করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি পূর্ণাঙ্গ ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে চারটি ফ্রিগেট, ছয়টি করভেট, চারটি বড় প্যাট্রোল ক্রাফট, পাঁচটি প্যাট্রোল ক্রাফট এবং দুটি প্রশিক্ষণ জাহাজসহ ৩১টি যুদ্ধজাহাজ যুক্ত হয়েছে। নবনির্মিত সাবমেরিন ঘাঁটিতে একসঙ্গে ছয়টি সাবমেরিন ও আটটি যুদ্ধজাহাজ থাকতে পারবে। সরকার সমুদ্রভিত্তিক সুনীল অর্থনীতির যে কর্মসূচি নিয়েছে তা এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী নৌবাহিনীর সদস্যদের উদ্যোগী ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন। এর ফলে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা শুধু নিরাপদ নয়, যে কোনো সম্ভাব্য বহিরাক্রমণের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। নিশ্চিত হবে দেশের সার্বভৌমত্ব ও দেশবাসীর নিরাপত্তা।