ডলার সংকট দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য ডেকে আনছে সর্বনাশ। আমদানিনির্ভর প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ছে মাত্রাতিরিক্ত দামে ডলার কিনে এলসি খোলার কারণে। জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন চিকিৎসা সামগ্রী আমদানি করাও কঠিন হয়ে পড়ছে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে। দেশের হৃদরোগ চিকিৎসা ব্যবস্থায় সংকট দেখা দিয়েছে ডলার সংকটের কারণে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভাল্ব সংকটে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রতিস্থাপন। মিলছে না অক্সিজেনেটরও। ডলার সংকটে ব্যাংকে এলসি খুলতে না পারায় জীবন রক্ষাকারী এসব ডিভাইস আনতে পারছেন না আমদানিকারকরা। ডলার সংকটে স্টেন্ট বা রিংয়ের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন হৃদরোগীরা। ঢাকার বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় নিয়মিতই চলছে ভাল্ব প্রতিস্থাপন, রিং পরানোসহ অন্যান্য সার্জারি। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালের খরচ বহন করার সামর্থ্য নেই অনেক রোগীর। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল- সরকারি এ তিনটি প্রতিষ্ঠানেই ১০ মাস ধরে ভাল্ব ও অক্সিজেনেটর সংকট চলছে। শুরুতে মজুদকৃত ডিভাইসে সার্জারি চললেও আড়াই মাস ধরে তা-ও ফুরিয়ে এসেছে। হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ঢিমেতালে চললেও অন্য দুই হাসপাতালে প্রায় বন্ধের পথেই। অক্সিজেনেটরের অবস্থাও একই। সরকারি প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটিতে রয়েছে শত জটিলতা। সেগুলো অতিক্রম করে ডলার সংকটের দুর্দিনে মেডিকেল ডিভাইস সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়ছে সরকারি হাসপাতালগুলোর পক্ষে। নানা জটিলতা এড়িয়ে তারা হৃদরোগ চিকিৎসার যেসব মেডিকেল ডিভাইস সংগ্রহ করতে পারছে তা রোগীদের কাছে আর সহজপ্রাপ্য থাকছে না। হৃদরোগ চিকিৎসায় জটিলতা দেখা দেওয়ায় অনেকেই ছুটে যাচ্ছেন ভারত-থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে। তাতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হচ্ছে। ডলার সংকট আরও জটিল করে তুলছে। এ প্রেক্ষাপটে চিকিৎসা সামগ্রী আমদানিতে কর্তৃপক্ষ উদার হবেন এমনটিই প্রত্যাশিত।