সোমবার, ১৫ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

খেলাপি ঋণে রানার্সআপ

এ তকমা মোটেও সম্মানজনক নয়

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে খেলাপি ঋণে বাংলাদেশ এখন রানার্সআপ। শ্রীলঙ্কার পরই বাংলাদেশের অবস্থান। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, শ্রীলঙ্কায় ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ ১১ শতাংশ এবং বাংলাদেশের ৯ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে ভারতের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশ, মালদ্বীপের ৬ শতাংশের কম, পাকিস্তান ও ভুটানের ৮ শতাংশের কম। প্রতিবেদনে বলা হয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুর্বল তদারকির কারণে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। ঋণের ৯ শতাংশ সুদের সীমা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কম সুদের পুনরর্থায়ন তহবিলের কারণে বাড়ছে ব্যাংক ঋণ। অন্যদিকে গত বছরের শেষ প্রান্তিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ও আগের প্রান্তিকের চেয়ে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও পাকিস্তানের আমানতের প্রবৃদ্ধির চেয়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি বেশি ছিল। আর নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় আমানতের প্রবৃদ্ধির চেয়ে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কম ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা। আগের বছরের চেয়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৭ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেড়েছে। বাংলাদেশের খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র আরও উদ্বেগজনক। ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা এবং আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে খেলাপি ঋণের প্রকৃত অবস্থা দৃশ্যমান হয় না। আইএমএফ এসব ঋণকে খেলাপি হিসেবে দেখানোর পক্ষে। দেশের ব্যাংকিং খাত যাতে হুমকির মুখে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে আইএমএফ খেলাপি ঋণ কমানোর পরামর্শ দিয়েছিল। খেলাপি ঋণে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে এ তকমা জাতির জন্য সম্মানজনক নয়। ব্যাংকের কর্তাব্যক্তিদের যোগসাজশে শত শত কোটি টাকা ঋণ দেওয়া এবং সে অর্থ বিদেশে পাচার করে ঋণগ্রহীতার উধাও হওয়ার ঘটনা কম নয়। খেলাপি ঋণে বাদ সাধতে হলে ঋণদানের সঙ্গে জড়িতদের গাফিলতি চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে উঠেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর