বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

সবাই গরিবদের টাকা না হয় কাপড় দিয়ে সাহায্য করছে

ইউনুস কায়া

সবাই গরিবদের টাকা না হয় কাপড় দিয়ে সাহায্য করছে

সত্যি বলতে, শুরুর দিকে বাংলাদেশ খুব একটা টানেনি আমাকে। অনেক ভিড়, জ্যাম, ময়লা আর মানুষের চেঁচামেচি দিয়ে ভরা মনে হয়েছে জায়গাটাকে। তখন ধানমন্ডি বা পুরান ঢাকার মতো জায়গাগুলোকে এড়িয়ে চলতাম। ওখানটা অনেক বেশি অপরিচ্ছন্ন মনে হতো আমার। বাড়ির জন্য কষ্ট হতো। ঈদের ছুটিতে তাই বাড়ি চলে যেতাম যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব। উত্তরা থাকি আমি। বাসার বাইরেও বেরুতে ইচ্ছে হতো না। কিন্তু ধীরে ধীরে বাংলাদেশের মানুষদের জানতে শুরু করি আমি। খুব ভালো লাগে বাংলাদেশের মানুষকে। ওদের মধ্যে আমার কিছু বন্ধুও হয়ে যায়। ২০১৩ সালে প্রথম ঈদে এখানে থেকে যাই আমি। তখন রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছিল। আর এখানকার ঈদকেও দেখার ইচ্ছা ছিল অনেকদিনের। রাস্তা অনেক ফাঁকা থাকায় ঘুরতে বের হই। আর তখনি জিনিসটা খেয়াল করি আমি। এর আগে কষ্ট পেতাম এখানে এত গরিব মানুষ দেখে। রাস্তায় বেরুলেই দেখতাম চোখে অনেক কষ্ট নিয়ে সাহায্য চাচ্ছে ওরা। কিন্তু সাধারণ মানুষ পাত্তাই দিত না ওদের। সে সময় ওই মানুষগুলোর চোখের আকুতি আর কষ্ট যেন বুঝতে পারতাম আমি। পড়তে পারতাম ওদের চোখের ভাষা। ঈদের দিন দেখলাম গরিবদের আর না দেখার ভান করছে না মানুষরা। সবাই গরিবদের টাকা না হয় কাপড় দিয়ে সাহায্য করছে। খুব ভালো লাগল আমার। বাসার কথা মনে পড়ছিল। ওখানে আমরা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী জামা পরে বড়দের কাছ থেকে চকোলেট নিতে যেতাম। ঠিক এখানকার সালামির মতো। তবে বাংলাদেশের সবকিছু আমাদের মতো না। আমরা দেশে অভিবাদন করার সময় সামনের মানুষের হাতে চুমো খাই। এখানকার মানুষেরা সেটা করে না। অনেকটা অন্যরকম ওদের অভিবাদনের ভঙ্গি। তবে দেশের মতো এখানেও আমি ঈদে পাঞ্জাবি পরে মসজিদে নামাজ পড়তে যাই। খুব ভালো সময় কাটে আমার। নামাজ পড়া শেষে বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে ঘুরতে যাই। ঈদে ভিড় কম থাকায় ঘুরতেও ভালো লাগে তখন।

পেশা : শিক্ষার্থী, (ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ), দেশ : তুরস্ক

 

সর্বশেষ খবর