শনিবার, ১ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

টাঙ্গুয়ার হাওরে জল পাহাড়ের খেলা...

তানভীর আহমেদ

টাঙ্গুয়ার হাওরে জল পাহাড়ের খেলা...

ছবি : স্বপ্নযাত্রা ট্রাভেল গ্রুপ

সিলেটের সুনামগঞ্জে টাঙ্গুয়ার হাওর। স্থানীয়রা বলে, নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল। ৪৬টি গ্রামসহ এই হাওরের আয়তন প্রায় ১০০ কিলোমিটার। ধর্মপাশা ও তাহিরপুর উপজেলার মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। মেঘালয় পাহাড় থেকে ৩০টিরও বেশি ঝরনা এসে মিশেছে এই হাওরে। টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্যের মধ্যে অন্যতম হলো বিভিন্ন জাতের পাখি। স্থানীয় জাতের মধ্যে শকুন, পানকৌড়ি, বেগুনি কালেম, ডাহুক, বালিহাঁস, গাঙচিল, বক, সারস, কাক, শঙ্খচিল, পাতিকুট ইত্যাদি পাখির নিয়মিত বিচরণ এই হাওরে।  এ ছাড়াও ছয় প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, চার প্রজাতির সাপ, বিরল প্রজাতির উভচর, ছয় প্রজাতির কচ্ছপ, সাত প্রজাতির গিরগিটিসহ অনেক ধরনের প্রাণী এই হাওরের জীববৈচিত্র্যকে করেছে ভরপুর। এই হাওরে প্রায় ৫১ প্রজাতির পাখি বিচরণ করে। প্রতি বছর শীত মৌসুমে প্রায় ২০০ প্রজাতির অতিথি পাখি এই হাওড়ে উড়ে আসে। পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে বিরল প্রজাতির প্যালাসেস ঈগল, বড় আকারের গ্রে কিংস্টর্ক রয়েছে এই হাওড়ে। এই জলাভূমিতে দেখা মেলে হিজল গাছ, করছ গাছ, গুল্লি গাছ, বালুয়া গাছ, বন তুলশি গাছ, নলখাগড়া গাছ ইত্যাদি।

কি করবেন

টাঙ্গুয়ার হাওড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য  নৌকা ভাড়া করে দেখতে পারেন। বড় দল হলে হাওরে রাতযাপন করতে পারেন। মাঝিকে বললে তারাই নৌকায় খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবে। এজন্য আগে থেকেই কথা বলে, দরদাম করে নেবেন। হাওরের পানি এতটাই স্বচ্ছ যে, আপনি জলভূমির তলদেশও  দেখতে পাবেন। ছবি তোলার দারুণ এক জায়গা। ক্যামেরা নিতে ভুলবেন না। সুনসান নীরবতা হাওরের আরেক সৌন্দর্য। এখানকার পাখিদের সাবলীল উচ্ছ্বাস উপভোগ করতে চাইলে অযথা হইচই করবেন না।

কোথায় থাকবেন

তারকা হোটেলের সুবিধা এখানে না মিললেও রাত কাটানোর মতো থাকার হোটেল পেয়ে যাবেন। তবে সবচেয়ে ভালো হয় সুনামগঞ্জ শহরে থাকার ব্যবস্থা করলে।

খাবার সুবিধা

আপনাকে বাজারের কাছে অবস্থিত স্থানীয় রেস্টুরেন্টে খেতে হবে। এসব রেস্টুরেন্টের বেশির ভাগই পথের পাশে অবস্থিত। টাঙ্গুয়ার হাওরের আশপাশে ভালো মানের রেস্টুরেন্ট না থাকলেও আপনি সুনামগঞ্জ শহরে ভালো মানের  রেস্টুরেন্ট ও খাওয়ার হোটেল পাবেন। হাওরের তাজা মাছের খোঁজ নিতে পারেন। আশপাশের রেস্টুরেন্টে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।

কীভাবে যাবেন

আপনি সুনামগঞ্জে সরাসরি শুধু সড়কপথে যেতে পারবেন। কারণ সুনামগঞ্জের সঙ্গে রেলপথ, আকাশপথ এবং নদীপথে সরাসরি কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। ঢাকা থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জের অনেক বাস ছেড়ে যায়। সুনামগঞ্জ থেকে জেলার উত্তর-পূর্ব অংশের ধর্মপাশা এবং তাহিরপুর যেতে হবে। ধর্মপাশা উপজেলায় গিয়ে রিকশা নিয়ে এই হাওরে যেতে পারেন।

সর্বশেষ খবর