মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : আফিয়া নুসরাত বর্ষা

যার যার জায়গায় সে রানি

যার যার জায়গায় সে রানি

চিত্রনায়িকা বর্ষা হিসেবেই ব্যাপক পরিচিত তিনি। ‘খোঁজ-দ্য সার্চ’ সিনেমায় অভিনয় করে চলচ্চিত্রে পা রাখেন বর্ষা। ইফতেখার চৌধুরী পরিচালিত এ সিনেমায় চিত্রনায়ক অনন্ত জলিলের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। এরপর একসঙ্গে অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন অনন্ত-বর্ষা। পর্দার এই জুটি বাস্তব জীবনেও সফল জুটিতে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক ব্যস্ততা নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল

 

এত দিন নায়িকা চরিত্রে দেখা গেছে আপনাকে। কিন্তু ‘কিল হিম’-এ নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করার কারণ কী?

আসলে আমি একজন অভিনেত্রী। তাই অভিনয়ে নিজেকে কোনো গন্ডির মধ্যে আটকে রাখতে চাই না। সব সিনেমায় নায়িকাই হতে হবে, না হলে ইমেজের ঘাটতি হবে, এটা আমি বিশ্বাস করি না। একজন অভিনয়শিল্পীর কাজই হলো নিজেকে বিভিন্ন চরিত্রে মেলে ধরা, নিজেকে নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করা। এ ছবিতে আমি এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করছি, যার ব্যাপ্তি পুরো সিনেমায় রয়েছে। সাধারণত এ ধরনের চরিত্রকে এন্টি হিরো বলা হয়। কেউ কেউ ভিলেনও ভাবতে পারেন। চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে আমি কাজ করতে চাই সব সময়। এটাও তেমন একটি চরিত্র।

 

এই সিনেমাটির বর্তমান আপডেট কী?

‘কিল হিম’ এর শুটিং তো প্রায় শেষ। একটি গানের শুটিং বাকি আছে। যেটি আমরা ইন্ডিয়াতে শুট করব। সেটি কাশ্মীরও হতে পারে।

 

আরেকটি সিনেমা ‘নেত্রী’র কাজ কি শেষ?

নেত্রীর শুটিং বেশখানিক বাকি। আগে ‘কিল হিম’ রিলিজ হোক, তারপর ‘নেত্রী’ সিনেমা রিলিজ করা যাবে।

 

‘নেত্রী’ সিনেমা আগে মুক্তির কথা ছিল। সেটি কী কারণে পিছিয়ে গেল?

আসলে এটি পিছিয়ে গেছে বেশ কিছু কারণে। এটি দুই দেশের যৌথ প্রযোজনার সিনেমা-তুর্কি এবং বাংলাদেশ। ভারত ও তুর্কির অনেক বড় বড় আর্টিস্ট এই সিনেমায় আছে। তাই একসঙ্গে সবার শিডিউল মেলানো সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাই কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তার আগে সব কাজ শেষ হলে রোজার ঈদে ‘কিল হিম’ রিলিজ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

 

এবারের রোজার ঈদে তো বেশ কিছু সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে...

ইন্ডাস্ট্রি তো সবার। এটা কি শুধু আমার একার ইন্ডাস্ট্রি নাকি যে শুধু আমার সিনেমাই মুক্তি পাবে! সবার সিনেমাই আসবে। সবাই সবার সিনেমা দেখতে হলে যাব। চাই সবার সিনেমা ভালো চলুক। সবার জন্য শুভকামনা।

 

রিলিজের আগে কেন বিতর্ক-আলোচনায় থাকে আপনাদের সিনেমা?

আমি এ বিষয়ে কিছু বলব না এখন। শুধু বলব কিল হিম দেখবেন। এরপর হল থেকে বেরিয়ে এসে সবাই বলবে, বর্ষা শাবাশ!

 

অনন্ত-বর্ষা অভিনীত বেশির ভাগ সিনেমায় ভিএফএক্স এর কাজ বেশি চোখে পড়ে। এটি কি প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়?

ভিএফএক্স এর কাজ দিয়ে তো আর সিনেমা হিট হয় না। সিনেমা হিট হয় গল্পের কারণে, নির্মাণের কারণে। গল্পটা দর্শকের হৃদয়ে কতখানি নাড়া দিতে পারল, তার কারণে। সেই গল্পটা আমাদের অভিনীত প্রতিটি সিনেমায় কিন্তু থাকে। ভিএফএক্স সর্বস্ব না আমাদের সিনেমাগুলো।

 

বলিউড সিনেমা বাংলাদেশে আমদানি নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে আপনার অভিমত কী?

আমরাই কিন্তু প্রথম কাপল যারা বলেছিলাম ইন্ডিয়ান সিনেমা বাংলাদেশে আসা হচ্ছে পজেটিভ একটা সাইন। কারণ আমরা সব সময় ইউটিউব, অ্যাপে দেখি বাইরের সিনেমাগুলো। অন্যদিকে অনেক পরিবার আছে যারা সিনেমা রিলিজ হলে ভারতের সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখে থাকেন। এত পাগল তারা। বিশেষ করে পাঠান যখন রিলিজ হলো তখন আমি ঢাকাতেই ছিলাম। কিন্তু আমার শিডিউল ছিল শুটিং শেষ হলে আমি আমেরিকায় কখন যাব, কখন সিনেমাটি দেখব। ফাইনালি আমি নিউইয়র্কে গিয়ে সিনেমাটি দেখেছি। আমি মনে করি, ইন্ডিয়ান সিনেমা আসাটা দোষের কিছু নয়। পজিটিভ একটা দিক। সিনেমা হল ভালো হবে। আমাদের দেশের প্রডিউসাররা সিনেমা বানাতে আরও বেশি আগ্রহী হবেন। ইন্ডিয়ান সিনেমা যখন বাংলাদেশের হলে অফিশিয়ালি চলবে তখন অনেক বিষয় সামনে চলে আসবে। দেখুন ইন্ডিয়াতে একই সঙ্গে বলিউড ফিল্ম ও সাউথ ইন্ডিয়ান সিনেমা চলে। ওরা কিন্তু দুই দিকের ইন্ডাস্ট্রির আর্টিস্টদের নিয়েই কাজ করে। আসলে সব জায়গাতেই সবার পরিচিতমুখ দরকার। আমি মনে করি, ইন্ডিয়ান প্রযোজনা হাউসগুলো তখন বাংলাদেশি আর্টিস্টদের সিলেক্ট করবে।

 

এই সিদ্ধান্তে এ দেশের সিনেমা ও আর্টিস্টরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে?

না নেই। এটি ভালো একটি সাইন। ক্ষতিগ্রস্ত কেন হবে? আমি মনে করি, যার যার জায়গায় সে সে রাজা। আবার অন্যদিকে চিন্তা করলে যার যার জায়গায় সে সে রানি। এতে তেমন কিছুই হবে। ভালো কিছুই হবে। আজকে একটা কথাই বলে রাখি, এই সিদ্ধান্তে সবারই লাভ হবে। ইন্ডাস্ট্রিরও লাভ হবে। অন্তত ক্ষতি তো আর হবে না কারও।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর