জমে উঠেছে ইরানী বিশ্বাস ও পরীমনির দ্বন্দ্ব। তবে এ দ্বন্দ্ব আপাতত ভাববাচ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। বক্তব্য ছুঁড়ছেন একে অপরের দিকে।
ইরানী বিশ্বাস। হালের অন্যতম উঠতি পরিচালক। একটা সময় বিভিন্ন পত্রিকায় ফিচার লেখালেখির মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন। সেই ধারাবাহিকতায় ফিল্ম পাড়ায় নাম লিখিয়েছেন তিনি। ইতোমধ্যে তার পরিচালিত বেশ কয়েকটি নাটক ও টেলিফিল্ম প্রচারিত হয়েছে টেলিভিশনে।
অন্যদিকে, ছবি মুক্তির আগেই আলোচনায় চলে এসেছেন পরীমনি। সবকিছু ঠিকঠাকমতো এগোলে তার অভিনীত 'রানা প্লাজা' ছবিটি আগামী ৬ জুন মুক্তি পাবে। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে 'ভালোবাসা সীমাহীন'। এছাড়া তার আরও বেশ কয়েকটি ছবির শ্যুটিং চলছে।
ফিল্মপাড়ায় দু'জনের আগমণ খুব একটা বেশিদিনের না হলেও সম্প্রতি তারা মেতে উঠেছেন বাক-বিতণ্ডায়। ঘটনার সূত্রপাত ইরানী বিশ্বাসের 'লাভ ইউ লাভ ইউ' নামের ছবিকে কেন্দ্র করে। এই ছবিতে প্রথমে নেয়ার কথা ছিল পরীমনি ও উদয় খানকে। ইরানী বিশ্বাস নিজেই এ ঘোষণা দেন। কিন্তু পরীমনিকে বাদ দিয়ে নতুনভাবে নায়িকা হিসেবে নিয়েছেন চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ে ইভানাকে। এর পরপরই বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে ইরানী বলেন, মূলতঃ পরীমনির ব্যবহারের কারণেই তাকে বাদ দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। এমনকি পরীর পারিবারিক শিক্ষাও খুব একটা ভালো না বলে মন্তব্য করেন ইরানী। তিনি এ ধরনের বেয়াদব ও অভদ্র মেয়েকে নিয়ে ছবি করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন।
এ খবর শোনার পর অনেকটাই রেগে যান পরীমনি। ব্যবহার ও পরিবার নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ক্ষোভের সুরে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে পরীমনি বলেন, চলচ্চিত্র জগতে এখনো আমি নাম লিখিনি। অর্থাৎ কোনো ছবি মুক্তি পায়নি। সবেমাত্র কাজ শুরু করেছি। আর মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে দু'টি ছবি। এ অবস্থায় আমি কীভাবে একজন পরিচালকের সঙ্গে বেয়াদবি করবো সেটাই আমার মাথায় ঢুকছে না। শুধু ইরানী কেন, ফিল্মপাড়ার কেউই আমার ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে না।
তাহলে ইরানী যে বলছেন ব্যবহারের কারণে আপনাকে বাদ দেয়া হয়েছে এমন কথা প্রসঙ্গে পরীমনি বলেন, বলতে গেলে অনেক কিছুই বলা যায়। তাহলে একটু পেছনে তাকানো যাক। ইরানী ও প্রযোজক আমার বাসায় এসেছিলেন। তারা ছবিটির চিত্রনাট্য ও অভিনেতা সম্পর্কে ধারণা দেন। কিন্তু চিত্রনাট্য পছন্দ না হওয়ায় সায় দিতে পারিনি। তাদেরকে বলি, আপাতত এ ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হবো না। ভবিষ্যতে আবার দেখা যাবে। কিন্তু প্রযোজক অনেকটা আগ বাড়িয়ে বলেন, কোনো সমস্যা নেই। টাকা-পয়সা যা লাগে খরচ করবো। বিগ বাজেটের ছবি বানাবো। এমনকি আমাকে প্রশ্ন করেন- "কতো টাকা পারিশ্রমিক নেবেন, ৫ লাখ না ১০ লাখ?" এ কথা শুনেই আমার মনে আরও বেশি খটকা লাগে। কারণ আমি এখনো অভিনেত্রী হিসেবে সেই পর্যায়ে পৌঁছিনি যে আমাকে কেউ এতো টাকা অফার দেবেন। সত্যিকথা বলতে কি টাকার এ প্রস্তাবটার মধ্যে কেমন যেন সন্দেহের গন্ধ পাচ্ছিলাম। একটু ভদ্রভাবে বলতে গেলে তিনি হয়তো আমাকে গৃহপালিত নায়িকা বানাতে চেয়েছিলেন। মূলতঃ এসব কারণেই আমি সেই ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হতে রাজি হইনি।
পরীমনি আরও বলেন, ইরানী ইচ্ছে করেই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তিনি চাচ্ছেন, এরকম মন্তব্য করে মিডিয়ায় হাইলাইট হতে। এটা এখন আমি পুরোপুরি বুঝে ফেলেছি। এটা তার স্ট্যান্ডবাজি। আমার নাম ভাঙিয়ে নিজের নাম প্রচার করতে চায় ইরানী।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ইরানী বিশ্বাস বলেন, যার উপর আমি কোটি টাকা লগ্নি করবো তার শুধু রূপ থাকলেই হবে না, সার্বিক গুণও দরকার। বেয়াদবির কারণেই তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। অন্যকিছু নয়। দেখুন আমরা যখন কোনো মেয়েকে দেখি তখন প্রথমেই তার ব্যবহার ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বুঝতে চেষ্টা করি। এটাই তো স্বাভাবিক, তাই না? কিন্তু পরীর মাঝে আমি ভদ্রতার কিছুই পাইনি। এক কথায় তার পারিবারিক শিক্ষা খুব একটা গ্রহণযোগ্যভাবে হয়নি। তাই তাকে বেয়াদব বলেছি।
অন্যদিকে, চলচ্চিত্রবোদ্ধা ও তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা মনে করছেন, এ ধরনের কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়ি করা ঠিক না। এতে ফিল্মপাড়া সম্পর্কে মানুষের নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হতে পারে। তারপরও যদি এমন কিছু থাকে তাহলে তা ফিল্মপাড়ার পরিধির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। ঘটা করে মিডিয়ায় বলা উচিত না।