প্রথম স্ত্রী লামিয়া ইসলাম অনন্যার অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় জামিন নিলেন হালের আলোচিত-বিতর্কিত কণ্ঠশিল্পী আরফিন রুমি।
আজ রবিবার সকালে ঢাকার সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কেশব রায় চৌধুরী রুমির জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ৩০ এপ্রিল অনন্যা ঢাকার সিএমএম আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কেশব রায় চৌধুরী বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ১৮ মে আরফিন রুমিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। মামলায় দ্বিতীয় বিয়ের কাজী মাওলানা কাজী মো. নাছির উদ্দিনকে মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে। এছাড়া দ্বিতীয় বিয়ের কাবিননামাও আদালতে দাখিল করেছেন তিনি।
২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল আরফিন রুমির সাথে বিয়ে হয় লামিয়া ইসলাম অনন্যার। ২০১০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের একমাত্র পুত্র সামস তাবরীজ আরিয়ানের জন্ম হয়। বর্তমানে তার বয়স ৪ বছর।
মামলায় বলা হয়, বিয়ের পর থেকেই রুমি লামিয়ার পরিবারের কাছে যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। সর্বশেষ ২০ লাখ টাকা যৌতুক না দিলে রুমি আরেকটি বিয়ে করার হুমকি দেন।
এ ব্যাপারে অনন্যা বলেন, 'রুমির চাহিদামতো যৌতুক না দেওয়ায় রুমি ২০১২ সালের ২৪ অক্টোবর আমেরিকা প্রবাসি জনৈকা কামরুননেসাকে দ্বিতীয় বিয়ে করে।'
অনন্যা জানান, দ্বিতীয় বিয়ের জন্য রুমি তার কিংবা সালিশি পরিষদের কোন অনুমতি নেননি। আর প্রথম স্ত্রী কিংবা সালিশি পরিষদের অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করা ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশের ৬(৫)(বি) ধারার অপরাধ। এর আগে লামিয়ার দায়ের করা নারী ও শিশু মামলায় গত বছরের ১২ অক্টোবর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা মামলায় মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদ হাউজিংয়ের নিজ বাসা থেকে ভাই এস এম ইয়াসিন রনিসহ গ্রেফতার হন রুমি। ওইদিন শর্ত সাপেক্ষে জামিন পান তারা।
ওই মামলায় স্ত্রী অনন্যা অভিযোগ করেন, ২০১২ সালে আমেরিকা প্রবাসী কামরুননেসাকে বিয়ে করেন রুমি। ওই বিয়ের কিছুদিন পরই দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে আমেরিকায় পাড়ি জমান তিনি। পাশাপাশি বন্ধ করে দেন ছেলে ও প্রথম স্ত্রীর ভরণপোষণ। শুধু তাই না, আমেরিকা থেকে ফিরে ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে রুমি অনন্যাকে নিয়মিত নির্যাতন করতেন।
দ্বিতীয় বিয়ে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে অনন্যা বলেন, 'অনেকেই মনে করেন রুমির দ্বিতীয় বিয়েতে আমার সম্মতি ছিল। অনেক পত্রিকায় আমাদের তিনজনের একসঙ্গে ছবিও ছাপা হয়েছে। কিন্তু এর পেছনের রহস্য অনেকেই জানেন না। অনেকটা ব্ল্যাকমেল করেই আমাকে চুপ করে রাখা হয়েছিল। সেই সময় সন্তান আরিয়ানকে তারা আমার কাছ থেকে সরিয়ে নেয়। বলা হয়, কাবিননামায় সম্মতি সই না দিলে আরিয়ানকে আর ফেরত পাবে না। এরপর বেশ কয়েক দিন আমাকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছিল, কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। এ রকম অনেক অজানা কাহিনীই রয়েছে, যা বলার মতো নয়। মুখ বুজে সহ্য করে গেছি।'