অপু বিশ্বাস আর মাহিয়া মাহি। প্রথমজন চলচ্চিত্রে এসেছেন ২০০৬ আর দ্বিতীয়জন ২০১২ সালে। শুরু থেকে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখে ঢালিউডে তরতর করে এগিয়ে চলেছিলেন অপু বিশ্বাস। তার জনপ্রিয়তার ধারে-কাছে কেউ ছিল না। কিন্তু এখন তার সেই সুদিন আর নেই। অপুর দুর্গে ফাটল ধরিয়েছেন মাহিয়া মাহি।
দর্শক আর নির্মাতার কাছে মাহির ব্যাপক চাহিদার কারণে পিছিয়ে পড়েছেন অপু। ক্যারিয়ারের মাত্র ছয় বছরের মাথায় আকাশ থেকে যেন ধপাস করে মাটিতে পড়েছেন তিনি। অথচ অপু যখন ঢালিউডে রাজত্ব করছিলেন তখন তার ধারে-কাছে কেউ ছিল না। মানে শিল্পী সংকট চলছিল।
অপুর সমসাময়িক অন্যরা তার মতো তেমন সুবিধা করতে পারছিল না। এতে অপুর মনে বদ্ধমূল ধারণা জন্মে যে, রুপালি জগতে তার পথ সুদূরপ্রসারী।
কিন্তু ২০১২ সালে 'ভালোবাসার রঙ' চলচ্চিত্রের নায়িকা হয়ে দর্শকের সামনে আসেন মাহিয়া মাহি। এসেই দর্শক-মন জয় করে নেন তিনি। শুধু বিজয়ই হলেন না, ঢালিউডে স্থায়ী আসনও গড়ে নিলেন। এর মধ্য দিয়েই অপুর ক্যারিয়ারে ভাটার টান শুরু হয়। ওই বছর অপুর মুক্তিপ্রাপ্ত ছয়টি ছবি- এক টাকার দেনমোহর, বুক ফাটে তো মুখ ফুটে না, জিদ্দি মামা, ঢাকার কিং, দুর্ধর্ষ প্রেমিক, এক মন এক প্রাণ বক্স অফিসে খুব একটা সাড়া জাগাতে পারেনি।
পরের বছর অর্থাৎ ২০১৩ সালের অবস্থা আরও শোচনীয়। ওই বছর তার অভিনীত আলোচিত ছবি 'দেবদাস' বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। এতে পার্বতী রূপে অপুকে কোনোভাবেই গ্রহণ করেনি দর্শক। একই বছর তার অন্য দুটি ছবি প্রেমিক নাম্বার ওয়ান এবং মাই নেম ইজ খান এর মধ্যে শেষটিই কোনোভাবে ব্যবসা করে।
অন্যদিকে ২০১৩ সালে মুক্তি পায় মাহি অভিনীত চারটি ছবি। এগুলো হলো- ভালোবাসা আজকাল, পোড়ামন, তবুও ভালোবাসি, অন্যরকম ভালোবাসা। চারটিই ব্লক বাস্টার হিট। এ অবস্থায় নিজের ক্যারিয়ারের বিয়োগ ব্যথায় কাতর অপু চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে আড়াল করে নেন।
আড়ালে গিয়ে নিজের ব্যর্থতার কারণ খুঁজতে থাকেন। অবশেষে এর জন্য নিজের বেটপ শরীরকেই দায়ী করেন এবং নানা কসরত্ করে ১৮ মাসে ১৮ কেজি ওজন কমিয়ে অভিনয়ে ফেরেন। কিন্তু তাতেও হালে পানি পায়নি।
চলতি বছরের এ পর্যন্ত তার অভিনীত দুটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। এগুলো হলো- ডেয়ারিং লাভার এবং ভালোবাসা এক্সপ্রেস। দুটিই সুপার ফ্লপ। অন্যদিকে মাহি অভিনীত ছবি মুক্তি পেয়েছে তিনটি। এগুলো হচ্ছে- অগ্নি, দবির সাহেবের সংসার এবং কি দারুণ দেখতে। এর মধ্যে প্রথমটি ব্লক বাস্টার হিট এবং বাকি দুটো হিট।
এ অবস্থায় দর্শক-নির্মাতারা বলছেন অপুর দিন শেষ। মাহির সঙ্গে ইঁদুর দেৌড়ে পিছিয়ে পড়েছেন অপু আর সফলতার পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছেন মাহিয়া মাহি।