বর্তমানের ব্যস্ততা কি নিয়ে?
বর্তমানের ব্যস্ততা চলচ্চিত্রকে ঘিরে। সম্প্রতি আমি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। তার মধ্যে রয়েছে অন্তরঙ্গ, কার্তুজ, মহুয়া সুন্দরী, মন জানে না মনের ঠিকানা, জিরো ডিগ্রি, নদীর জল, স্বর্গ থেকে নরক, এক পৃথিবী প্রেম , অগি্ন-২, দেশা ইত্যাদি। আরও কয়েকটি কাজ হাতে আছে।
একটি চলচ্চিত্রে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক কতটা প্রয়োজন?
আমরা যদি আশির দশকের চলচ্চিত্রগুলোর দেখি, তাহলে দেখতে পাব তারা চলচ্চিত্রে কতখানি যত্ন করে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের কাজ করত। শুধু আমাদের দেশে নয় হলিউড-বলিউডেও জোর দেওয়া হয়। কিন্তু কষ্টের কথা হচ্ছে, মাঝে আমাদের দেশি চলচ্চিত্রে খুব দুর্বল মিউজিক ব্যবহার হতো। এমনকি একটি ছবির মিউজিক বিভিন্ন চলচ্চিত্রে ব্যবহার হতো। আমার ইচ্ছে ছিল এই বিষয়টি পরিবর্তন করার। সম্প্রতি আমি কয়েকটি চলচ্চিত্রে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক করছি। আর এই চলচ্চিত্রগুলো সবার কাছে প্রশংসিত হয়। আমি মনে করি, আগামীতে আমাদের দেশে আরও ভালো মানের কাজ হবে।
কিছুদিন আপনি শিক্ষকদের নিয়ে একটি গান করেছেন। এ বিষয়ে কিছু বলুন?
সুদীপ কুমার দীপের লেখা গানটিতে কণ্ঠ দেন কণা, কিশোর, কোনাল, সজল ও আমি। গানটির মিউজিক ভিডিও নির্মাণ হচ্ছে। এটি পরিচালনা করেছেন মোহাম্মদ হোসেন জেমি। প্রত্যেক শিক্ষক ছাত্রদের কাছে পিতৃতুল্য। তারা আমাদের আলোর পথ দেখান। মন্দ-ভালো চিনতে শেখান। আমাদেরও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। তাদের সম্মান জানানো উচিত। সেই শ্রদ্ধা থেকেই এই গানটি করা।
আপনার নতুন অ্যালবামটির কাজ কতদূর?
অ্যালবামটির কাজ এরই মধ্যে শুরু করেছি। শিক্ষকদের নিয়ে যে গানটি করা হয়েছে, এই গানটিও থাকছে এই অ্যালবামে। এ ছাড়া বেশ কিছু নতুন শিল্পীও থাকছে আমার একটি নতুন অ্যালবামে। এতে আমার নিজের দুটি গান গাওয়ার কথা আছে।
সংগীত পরিচালনায় নতুনরা কেমন করছে বলে আপনি মনে করেন?
আমি অনেক নতুন সংগীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করছি। আমার কাছে মনে হচ্ছে তারা অনেক ভালো করছে। আমি আশাবাদী, সেই দিন দূরে নয়, যে দিন আমরা বলিউডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করব। আমাদের দেশে সেই মানের সংগীত পরিচালক আছেন।
আপনার সংগীত গুরু কারা?
আমার প্রথম গুরু আমার বাবা প্রয়াত সংগীতজ্ঞ সত্য সাহা। আর ওস্তাদ সতীন্দ্রনাথ হালদারের কাছ থেকে সংগীতের হাতেখড়ি পেয়েছি। তারপর রবীন্দ্র সংগীত ও নজরুল গীতি শিখেছি অঞ্জলী রায়ের কাছে। শাস্ত্রীয় সংগীত শিখিয়েছেন ওস্তাদ সঞ্জীব দে। যুক্তরাষ্ট্রে যখন পড়েছি তখন পিয়ানো শিখিয়েছেন ভিঞ্চ ওয়ামেক।
শিক্ষক হিসেবে এ আর রহমান কেমন?
আমি চেন্নাইয়ে এ আর রহমানের কে এম মিউজিক কনজারভেটরিতে এক বছর পড়ালেখা করেছি। শিক্ষক হিসেবে তিনি প্রচণ্ড কড়া। আমরা যখন প্রথম ক্লাস করলাম, তখন তিনি চেন্নাইয়ে ছিলেন না, যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেসে ছিলেন। স্কাইপের মাধ্যমে আমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেছেন। আড়াই ঘণ্টায় ৬০ জন ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে স্কাইপে সেশন ছিল। তারপর তিনি যখন ইনস্টিটিউটে এলেন আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমি দেখলাম বাইরে তার গাড়ি। ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছিল। আমি ক্লাসে প্রবেশ করছি না। স্যারকে এর আগে সামনাসামনি দেখিনি। স্যার যখন গাড়িতে উঠছেন, আমি চিৎকার করে বললাম, স্যার হাউ আর ইউ? তিনি বললেন, জাস্ট গো টু দ্য ক্লাস। এবার বুঝুন তিনি কতটুকু স্ট্রিক্ট।
আপনি তাকে একটি গান উৎসর্গ করলেন।
আমার কাছে সব গুরুই সমান। যিনি একদিনের জন্য শিখিয়েছেন, তিনিও আমার শিক্ষক। এ আর রহমান স্যার শুধু আমার গুরু নন, সংগীত পিপাসু অনেকের শিক্ষক। তাকে আমি গুরু ভাবি। তাকে কিছু দিতে চাই। কিন্তু তার সবই আছে। কী দেব? তাই একটি গান উপহার দিচ্ছি। স্যারের জন্য এটি আমার ছোট্ট একটা উপহার।
* আলী আফতাব