তিনি বরাবরই উল্টো পথের পথিক। একদিকে অর্থ, অন্যদিকে জীবন, একদিকে যশ-খ্যাতি-প্রতিপত্তি, আরেক দিকে শুধুমাত্র শিল্প। এই দুইয়ের মধ্যে রোজগারের পাল্লা যতই ভারী হোক না কেন, শিল্পের তাগিদে তিনি বরাবরই বেছে নিয়েছেন জীবনকেই। তাই তিনি সবার থেকে আলাদা। তিনি আর কেউ নন, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি।
যখন নিজের জীবনী বেঁচে কোটি কোটি টাকা রোজগার করছেন বলিউডের তথাকথিত নামিদামী অভিনেতারা, তখন কার্যত ‘বিনা পয়সায়’ অভিনয় করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করার ক্ষমতা যে অভিনেতা রাখেন তার জন্য যতই লেখা হোক, তা যথেষ্ট হবে না। তাই আসল কথাটা বলার আগে পটভূমিকা রচনা করতে হল। উর্দু লেখক সাহাদত হোসেন মান্টোর জীবনী নিয়ে ছবি। পরিচালনায় নন্দিতা দাস। ছবিতে রয়েছেন ঋষি কাপুরের মতো বর্ষীয়ান অভিনেতা। ছবিতে দেখা যাবে পরেশ রাওয়ালের মতো তুখোড় অভিনেতাকেও। রয়েছেন জাভেদ আখতার। আর এই ছবির ‘প্রটাগনিস্ট’ নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি।
পরিচালক নন্দিতা দাস জানিয়েছেন, এই ছবির জন্য কেবলমাত্র ১ টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন নওয়াজ। আর ‘মান্টো’ ছবিতে নিজেদের সবটা উজাড় করে দিয়েও, কিছুই নেননি ঋষি কাপুর, জাভেদ আখতাররা। পরিচালক নন্দিতা দাস এক সাক্ষাত্কারে জানিয়েছেন, “এমন একটা চরিত্রের (সাহাদত হোসেন মান্টো) জন্য একজন অভিনেতা সব কিছু করতে পারেন। তবে নিজের ন্যূনতম পারিশ্রমিকটাও না নেওয়া, এটা নওয়াজের উদার মনের পরিচয়”।
পরিচালকের সঙ্গে প্রথমবার কথা বলার পরই ‘মান্টো’ ছবিতে কাজ করার জন্য ‘হ্যাঁ’ বলে দিয়েছিলেন ঋষি কাপুর, গুরুদাস মনের মতো অভিনেতারা। অতীতে নন্দিতা দাস পরিচালিত ‘ফিরাক’ ছবিতে ক্যামিও চরিত্র করেছিলেন পরেশ রাওয়াল। ‘মান্টো’ ছবিতেও রয়েছেন তিনি।
পরিচালক নন্দিতা দাস তার ছবিতে পরেশ রাওয়ালের মতো নক্ষত্রকে পাওয়ার পর বলছেন, “রাজনৈতিক মতাদর্শের দিক থেকে আমরা ভিন্ন মতের। তবে তার প্রতি আমি সবসময়ই শ্রদ্ধাশীল। একজন শিল্পী হিসেবে তিনি যেভাবে তার চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলেছেন তার জন্য আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ”।
গীতিকার জাভেদ আখতারের প্রতিও সমান কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন পরিচালক নন্দিতা দাস। তাঁ মতে জীবনে অর্থের প্রয়োজন অবশ্যই আছে, তবে ক্ষেত্র বিশেষে জীবনটাকে বৃহৎ ক্যানভাসে দেখারও প্রয়োজন রয়েছে, যেখানে অর্থ একেবারেই আবশ্যিক নয়।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর