বাবার আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বেশিদূর পড়াশুনা করতে পারেনি দিনাজপুরের ময়বুর আলম জীবন। বেকার থাকায় পরিবারের কোনও সাহায্য করতে পারেনি তিনি। তবে এখন জীবন স্বাবলম্বী, সেই সঙ্গে তার পরিবারও এখন স্বচ্ছল। কিন্তু চাকরি বাকরি না করেই কিভাবে তা সম্ভব হলো? উত্তরে জীবন বললেন পাখিই আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। এটা কি তবে জাদুর পাখি? না তা নয়, বিদেশি পাখির খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন জীবন।
স্বাবলম্বী হওয়ার গল্প বলতে গিয়ে জীবন বললেন, অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর পরিবারের আর্থিক সমস্যার কারণে আর এগুতে পারিনি। এই পড়াশোনায় ভালো বেতনের চাকরি যে জুটবে না তা বুঝে গেছি অনেক আগেই। তাই চাকরি নামক সোনার হরিণের পেছনে ছুটে বেড়াই নি। টেলিভিশনে ডিসকভারি চ্যানেল দেখে পাখি পালনের চিন্তা মাথায় আসে। নিজ বাড়িতে গ্রামীণ প্রযুক্তিতে অল্প টাকায় বিদেশি প্রজাতীর পাখির খামার তৈরি করি। আর এই পাখির খামার আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এখন আমার খামারে বাজারিকা, লাভ বার্ড, কোকাটিলসহ বিভিন্ন প্রজাতের পাখি রয়েছে। এ পাখি পালন করে প্রতি মাসে তার ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা উপার্জন হয়।
'পাখি নিধন নয়, পলনেই আনন্দ' এই মানুষিকতাকে সামনে রেখে অজোপাড়াগাঁয়ে পাখি পালনের খামার দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব তা প্রমাণ করেছে দিনাজপুর সদর উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের মো. আনিছুর রহমানের ছেলে মো. ময়বুর আলম জীবন। সে আর্থিক স্বচ্ছলতার অভাবে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করতে পারে।
জীবন বলেন, ঘরের মধ্যে হাঁড়ি দিয়ে হাঁড়ির ভেতর পাখির বাসা বানিয়ে পাখি রাখি। সেই হাঁড়িতেই পাখি ডিম দেয় এবং বাচ্চা ফুটায়। বর্তমানে আমার খামারে ২০০ জোড়া পাখি রয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এসে পাখি কিনে করে নিয়ে যায়। এখন প্রতিমাসে পাখি বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।
তিনি আরও জানায়, প্রতি জোড়া পাখি বিক্রি হয় ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা। আমার ইচ্ছা সরকারিভাবে কোনও সহযোগিতা পেলে এ অঞ্চলের বেকার তরুণ-তরুণীদের পাখি পালন প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করার কাজ করব।