ফিলাডেলফিয়ার এক প্রজাপতি প্রদর্শনে হঠাৎ করেই এক স্বেচ্ছাসেবীর চোখে পড়ে যায় দু-রকম পাখনার এই প্রজাপতি। পরে দেখা যায়, এই প্রজাপতিটি আধা পুরুষ-আধা নারী। ক্রিস জনসন নামের এই স্বেচ্ছাসেবী দেখেন যে, এই প্রজাপতির ডান দিকের দুটি পাখার নকশা এমন যে তা নারী প্রজাপতির মাঝে তা দেখা যায়। এই দুটো পাখা বড়, বাদামির ওপর হলুদ এবং সাদা ফোঁটাযুক্ত। কিন্তু এর বাম দিকের দুটি পাখার নকশা এমন যা দেখা যায় ওই প্রজাতির পুরুষ প্রজাপতির মাঝে। এই দুটি পাখা তুলনামূলকভাবে ছোট, কালো রঙের এবং এর ওপরে সবুজ, নীল ও বেগুনী রঙের ছোপ। দেখে মনে হতে পারে দুইটী আলাদা প্রজাপতির অর্ধেক অংশ একসঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
এই এক্সিবিশনের পিউপা চেম্বার খালি করার সময় একে দেখতে পান জনসন। এখানে প্রজাপতিগুলো তাদের কোকুন থেকে বের হয়। তিনি দেখেন যে এই প্রজাপতিটি কোকুন থেকে বের হয়ে ধীরে ধীরে পাখা খোলে। আর তখনই তিনি লক্ষ্য করেন পাখা দুটির মাঝে এই অসাধারণ বৈসাদৃশ্য। তার সুপারভাইজার এ ব্যাপারে জানার পর এই প্রজাপতিটিকে আলাদা করে রাখেন এবং এনটোমোলজি ম্যানেজারকে খবর দেন।
পরবর্তীতে একজন প্রজাপতি বিশারদ নিশ্চিতভাবে জানা যে আসলেই এটি একটি কমন আর্চডিউক বাটারফ্লাই যার মাঝে গাইনঅ্যান্ড্রোমরফি নামের এক জটিলতা দেখা যায়। এর অর্থ হলো এর মাঝে পুরুষ ও নারী উভয়েরই বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। এটা হারমাফ্রোডাইটিজমের থেকে আলাদা, যেখানে আলাদা লিঙ্গের জননেন্দ্রিয় থাকলেও বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য থাকে একটি লিঙ্গের।
পাখি এবং প্রজাপতির মাঝে এই কন্ডিশন বেশি দেখা যায়। বিশেষত এই দুই ধরণের প্রাণীর নারী ও পুরুষের চেহারা আলাদা হয় বলে তা সহজে শনাক্ত করা যায়। এই প্রাণীর ভ্রূণে সেক্স ক্রোমোজোমগুলো ঠিকভাবে আলাদা না হতে পারলে গাইনঅ্যান্ড্রোমরফিজম দেখা যায়। ফলে প্রাণীটির শরীরের কিছু অংশ থাকে একটি পুরুষ প্রাণীর এবং অন্য অংশটি থাকে নারী প্রাণীর। কিন্তু যেসব প্রজাতিতে নারী ও পুরুষ প্রায় একই রকম দেখতে হয়, তাদের ক্ষেত্রে এই কন্ডিশন বোঝা শক্ত, তাই গবেষকেরা জানেন না এটা কতোটা বিরল।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৫ জানুয়ারি,২০১৫/ নাবিল