বেশিরভাগের শরীর বিকৃত এবং দেহ বিকলাঙ্গ। বেশির ভাগেরই চোখ নেই। অনেকের ৪ পায়ের মধ্যে অকেজো একাধিক। যাদের চারটি পা ঠিক আছে বলে মনে হয় তাদের পায়ের আঙুলগুলি নেই৷ অথচ, সংখ্যার নিরিখে প্রতি বছর বেশ কয়েক হাজার করে বেড়ে ব্রাজিল উপকূলের ফার্নান্দো দে নোরোনহা দ্বীপের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে এরা।
বিকলাঙ্গ এই ব্যাঙগুলো 'কুরুরু' প্রজাতিভুক্ত। কয়েক দশক আগে ব্রাজিল ভূখণ্ড থেকে এই দ্বীপে প্রথম এসেছিল এই প্রজাতির ব্যাঙ। কিন্তু, মাঝের কয়েক বছরে এমন কী হল যার জন্য বিকলাঙ্গ হয়ে গেল কয়েক লক্ষ ব্যাঙ? উত্তর নেই জীবতত্ত্ববিদদের কাছে৷ তাঁরা জানাচ্ছেন, বিকলাঙ্গ হয়ে যাওয়ার জন্যই বদলে গিয়েছে এই দ্বীপে বসবাসকারী কুরুরু প্রজাতির ব্যাঙের জীবনযাত্রার পদ্ধতিও।
লোপ পেয়েছে চোখে দেখার ক্ষমতা। অনেকে তো চোখ ছাড়াই জন্মেছে। তাই, স্বভাবগত ভাবে শিকারি ব্যাঙের এই প্রজাতি শিকার করতে পারে না। জীবন ধারনের জন্য তারা ওত পেতে বসে থাকে৷ বোঝার ভুলে কোনও পোকা বা ছোট প্রাণী তাদের কাছে চলে এলে তাদের শিকার করে খায় এরা। কিন্ত্ত শারীরিক অসঙ্গতির জন্যই পছন্দসই শিকার ধরার উপায় নেই।
জীববিজ্ঞানীরা বলছেন, ফার্নান্দো দে নোরোনহা দ্বীপের কুরুরু প্রজাতির ব্যাঙগুলি অন্য জায়গার একই প্রজাতির ব্যাঙের তুলনায় অনেকটাই হালকা। তবে, শারীরিক ভাবে বিকলাঙ্গ হলেও এই ধরনের ব্যাঙের প্রজনন ক্ষমতার ওপর কোনও প্রভাব পড়েনি৷ প্রতিটি স্ত্রী ব্যাঙই কয়েক হাজার করে ডিম পাড়তে সমর্থ বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে ওই ডিম ফুটে জন্মানো ব্যাঙাচিগুলির ৫৩ শতাংশই শারীরিক ভাবে একাধিক অসঙ্গতি নিয়ে জন্মায়।
বিভিন্ন অঞ্চলে দূষণের জন্য প্রাণীদের এমন অঙ্গবিকৃতি দেখা গেলেও এই দ্বীপে ব্যাঙের শরীরে কেন এমন হচ্ছে তার উত্তর খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।
বিডি-প্রতিদিন/০২ জুন, ২০১৫/মাহবুব