শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
সোনা চোরাচালানে বিমানের শীর্ষ কর্তারা

কেঁচো খুঁড়তে সাপ

কেঁচো খুঁড়তে সাপ

বিমান চেয়ারম্যানের ‘ধর্মপুত্র’ হিসেবে পরিচিত মাহমুদুল হক পলাশ ও তার প্রধান সহযোগী কেবিন ক্রু মাজহারুল ইসলাম রাসেল বিমানকেন্দ্রিক সোনা চোরাচালানের সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। সোনা পাচারের কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে করতে যখন যেখানে যা প্রয়োজন তা ম্যানেজ করার জাদুকরী ক্ষমতা ছিল এই দুই ব্যক্তির। বিমানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়ার পর বেরিয়ে আসছে সোনা চোরাচালানের অজানা সব গোপন তথ্য। প্রতিদিন অবৈধভাবে দেশে ঢোকা সোনার মাধ্যমে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার কাহিনী শুনে চোখ কপালে উঠে আসছে তদন্ত কর্মকর্তাদের। তবে জিজ্ঞাসাবাদকারী গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃতরা যেসব তথ্য দিচ্ছে তা ক্রসচেক করে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে শীর্ষ কর্মকর্তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। গোয়েন্দা সূত্রটি আরও জানায়, এ পর্যন্ত গ্রেফতারকৃতরা শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশ থাকার কথা উল্লেখ করেছে। তাদের গতিবিধির ওপর নজরদারি চলছে। 

মঙ্গলবার রাতে সোনা চোরাচালানে জড়িত থাকার দায়ে গ্রেফতারকৃত বিমানের ডিজিএমসহ পাঁচজনকে রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনের মতো জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঝানু গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের একের পর এক প্রশ্নের জবাবে তারা অবলীলায় সব কিছুই ফাঁস করে দিচ্ছেন। দেশে-বিদেশে সোনা চোরাচালানের পিলে চমকানো ছক-পরিকল্পনায় জড়িত বিশাল সিন্ডিকেট। প্রতিদিনের চোরাচালানের মোট সোনার শতকরা মাত্র ১০ ভাগ ধরা পড়ত। যা পাচারকারীরা ‘সিস্টেম লস’ হিসেবেই ধরে রাখত। বিমান ক্রু রাসেলের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, পাঁচটি ধাপে বিমান কর্মকর্তারা সোনা চোরাচালানের টাকা আদায় করে থাকেন। বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন, অপারেশন শাখা, বিমান ক্রু, বিমানের নিরাপত্তাকর্মী ও প্রশাসন বিভাগ এ কাণ্ডে জড়িত। সোনার কোনো চালান পাচার করতে হলে এই পাঁচ বিভাগের কোনো না কোনো কর্মকর্তার যোগসাজশ দরকার হয়। বাংলাদেশ বিমানের কেবিন ক্রু মাজহারুল আফসার রাসেল গত বুধবার আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যে তথ্য দিয়েছেন তাতে ৬৪ জন রাঘববোয়ালের নাম পাওয়া গেছে। সোনা চোরাচালানে সম্পৃক্ত কয়েকজন নারী কেবিন ক্রুর নামও বলেছেন রাসেল। গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, আটককৃতরা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোনা চোরাচালানের প্রধান নিয়ন্ত্রক। সোনা কীভাবে আসবে, কোথায় কে গ্রহণ করবে এবং বিমান বন্দর থেকে কীভাবে বের হবে এসব তারাই ঠিক করে দিতেন। শাহজালাল বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও কেবিন ক্রুর দায়িত্বে থাকা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কারও সহযোগিতা ছাড়া এভাবে নিয়মিত সোনা চোরাচালান যে সম্ভব নয় তা গোয়েন্দা পুলিশ অনেক আগে থেকেই বুঝতে পারছিল। কখনো যাত্রীদের ব্যাগে বা শরীরে লুকানো অবস্থায়, আবার কখনো উড়োজাহাজের বা বিমানবন্দরের টয়লেট বা বিমানের আসনের নিচে পরিত্যক্ত অবস্থায় বিভিন্ন পরিমাণ সোনার বার পাওয়া গেছে। রিমান্ডে থাকা কর্মকর্তারা আরও জানান, মূলত প্রবাসী বাংলাদেশি শফিউল আলম দুবাই থেকে সোনা আদান-প্রদানের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেন, আর পলাশ এ কাজের সমন্বয় করতেন। অর্থ আদান-প্রদানের বিষয়টি দেখভাল করতেন হারুন অর রশিদ নামে আরেকজন। বিদেশ থেকে আনা চালান নির্বিঘ্নে কাস্টমস পার করার দায়িত্ব বণ্টন করা হতো বিমানের ক্যাপ্টেন থেকে শুরু করে অন্যান্য স্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে।  

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের রিমান্ডে থাকা বিমান কর্মকর্তাসহ চোরাকারবারি চক্রের সদস্যরা একে একে সব তথ্যই ফাঁস করে দিতে শুরু করেছেন। তারা জানিয়েছেন, সোনা চোরাচালানের বিশাল কর্মকাণ্ডে বিমানের শীর্ষ পর্যায়ের একডজন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক কর্মী সরাসরি সম্পৃক্ত। তারা কুপনে অর্জিত ধনে গাড়ি, বাড়ি, জমি, ফ্ল্যাট কিনেছেন, জীবন সাজিয়ে নিয়েছেন শত কোটিপতির বিলাসিতায়। সরকারি চাকরি করেও তাদের কারও রয়েছে এলিয়ন গাড়ি, কারও রয়েছে ভি-সিক্স আবার কারও মিনি পাজেরো। প্রত্যেকের ঢাকায় রয়েছে দু-তিনটি করে বহুতলবিশিষ্ট আলিশান বাড়ি। সাভার ও গাজীপুরে বাগানবাড়ি। আর এ সব কিছু হয়েছে আন্তর্জাতিক সোনা চোরাচালানকারীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন তারা।  বিমান চেয়ারম্যানের ধর্মপুত্র পলাশ বিমানবাহিনীর চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা। বছর দশেক আগে বিমানে ছোটখাটো ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করেন তিনি। ওই সময়ে তিনি জাল কাগজপত্র দিয়ে বিমানের পাইলট হিসেবে নিয়োগ পেতে আবেদন করেও ব্যর্থ হন। তবে বিমানের তৎকালীন ফার্স্ট অফিসার ক্যাপ্টেন শামীম নজরুল ও বিমানের এক প্রভাবশালীর ছেলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলতে সক্ষম হন পলাশ। স্ত্রীর মাধ্যমে কেবিন ক্রুদের সঙ্গে গড়ে তোলেন সখ্য। কেবিন ক্রুদের দিয়েই শুরু হয় সোনা চোরাচালান। বিমানের কোনো কর্মকর্তা না হলেও পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন সব কর্মকর্তার কামরায় শুরু হয় তার অবাধ যাতায়াত। পর্যায়ক্রমে কমিশন বাণিজ্য, পদোন্নতি, বদলিসহ সব ধরনের তদবিরের মাস্টার হয়ে ওঠেন তিনি। সম্প্রতি হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ১০০ কেবিন ক্রু নিয়োগ দেওয়া হয় তারই দেওয়া তালিকা অনুযায়ী। অস্থায়ী ভিত্তিতে মাত্র ৯০ দিনের জন্য এসব কেবিন ক্রুর অধিকাংশের কাছ থেকে পলাশ হাতিয়ে নেন ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে। ‘চোরাচালানের সোনার বাহক’ হওয়া যাবে এবং আয় করা যাবে কোটি কোটি টাকা- এই স্বপ্নে বিভোর হয়ে কেবিন ক্রু হওয়ার জন্য দিওয়ানা। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান জামালউদ্দিনের কথিত ধর্মপুত্র মাহমুদুল হক পলাশের অন্যতম সহযোগী মাজহারুল ইসলাম রাসেলের অবিশ্বাস্য উত্থান দেখে তার জন্মস্থান নোয়াখালীর কবিরহাট এলাকার মানুষ হতবাক। ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ কিসিমের পরিবারের সন্তান রাসেল কবিরহাট উপজেলার বিভিন্ন মৌজায় মাত্র দুই বছরে সাড়ে তিনশ বিঘা জমি কিনেছেন। পার্শ্ববর্তী আবদুল্লাহ মিয়ার হাটে দোকান কিনেছেন ১০টি। নামমাত্র সুদে এলাকায় পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে কয়েক কোটি টাকা ঋণ দিয়ে রেখেছেন। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, বিমানকেন্দ্রিক সোনা চোরাচালানের গডফাদার হিসেবে পরিচিতি পাওয়া মাজহারুল ইসলাম রাসেলের বাড়ি নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার পূর্ব রাজুরগাঁও গ্রামে। তার বাবার নাম নূরুল আবছার। কেবিন ক্রুর চাকরির সূত্র ধরেই তার পলাশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা। অন্যদিকে বিমান চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের ধর্মপুত্র পরিচয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করে যা ইচ্ছা তাই করেছেন পলাশ। বনেছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। বিমান চেয়ারম্যান কোনো ফ্লাইটে বিদেশ গেলে তার সঙ্গী হতেন ‘ধর্মপুত্র’ পলাশ ও তার বিমানবালা স্ত্রী নূরজাহান। সূত্র জানায়, প্রতি ট্রিপেই নূরজাহান বাসা থেকে চেয়ারম্যানের জন্য রান্না করা খাবার নিয়ে আসতেন।
বার বার উদ্ধার হয় সোনা : শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৪ সালের ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ মাসে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের হিসাবে আটক সোনার পরিমাণ সর্বমোট ৬৩০ কেজি ৮৭৪ গ্রাম বা ১৮ মণ ২ কেজি ৮৭৪ গ্রাম। এটা গত পাঁচ বছরে জব্দ করা সোনার চেয়ে ২০ কেজি বেশি। এই সময়ে আটককৃত সোনার বাজার মূল্য প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। চোরাচালানের সোনা উদ্ধারের ঘটনায় মোট ৮২ জনকে আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ‘চোরাচালানের ঘটনা সম্পর্কে বিমানকর্মীরা অবগত ছিলেন’ বলে অধিকাংশ আসামি স্বীকার করেছে বলে জানান বিমানবন্দর থানার এক কর্মকর্তা। দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দর দিয়ে একের পর এক সোনা চোরাচালানের ঘটনায় অবশেষে ‘সিরিয়াস’ হয় প্রশাসন।  

২০১৪ সালের জুলাই মাসে বিমানের একটি ফ্লাইট থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ১২৪ কেজি সোনা উদ্ধার করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। এ ঘটনা তদন্তে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক মইনুল খানকে প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠিত হয়। কমিটির প্রতিবেদনে সোনা চোরাচালানের ঘটনায় বিমানের বেশ কিছু কর্মী ও কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়। তারা হচ্ছেন বিমানের জুনিয়র সিকিউরিটি অফিসার মো. কামরুল হাসান, সুইপিং সুপারভাইজার মো. আবু জাফর, এয়ারক্রাফট মেকানিক মোহাম্মদ মাসুদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এয়ারক্রাফট মেকানিক মো. আনিস উদ্দিন ভূঁইয়া, প্রকৌশল হ্যাঙ্গারের মেকানিক ওসমান গনি, ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসার সালেহ আহমেদ, মজিবর রহমান, জুনিয়র ইন্সপেকশন অফিসার মো. শাহাজাহান সিরাজ, রায়হান আলী এবং মাকসুদ।  

সোনা পাচার ঘটনায় গত এক বছরে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬৯টি মামলা হয়েছে। বেশির ভাগ মামলার তদন্ত তেমন হয়নি। কিছু মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। বিমানবন্দর থানায় কর্মরত এক সাব-ইন্সপেক্টর জানান, সাত মাসে শাহজালালে সাত কেজি সোনা ধরা পড়েছে। থানায় মামলা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো তদন্তই হয়নি। সোনা ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতব পণ্য আটকের পর বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়।  

উড়োজাহাজের সিট খুলেও সোনার চালান এনেছে পলাশ : মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা বিমানের ফ্লাইটের সিট খুলেও সোনার চালান এনেছেন পলাশ। এ ছাড়া প্রত্যেক কেবিন ক্রুর শরীরের ভিতর বেঁধে দেওয়া হতো সোনার বার। আর এ কাজটি করতেন পলাশের স্ত্রী কেবিন ক্রু নূরজাহান। গোয়েন্দাদের জেরার মুখে এমন তথ্য দিয়েছেন বিমান চেয়ারম্যানের ধর্মপুত্র মাহমুদুল হক পলাশ। এ ছাড়া গ্রেফতারকৃত বিমানের তিন কর্মকর্তা নিজেদের দোষ স্বীকার না করে চোরাচালানের দায় শুধু পলাশের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছেন। 

এদিকে গতকালও গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক দল সন্দেহভাজনদের গ্রেফতারে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, বিমান কর্মকর্তাদের সম্পদের খোঁজ জানতে পেরে হতবাক গোয়েন্দারা। কারও সেকেন্ড হোম মালয়েশিয়ায়। কারও আছে প্রাসাদোপম বাড়ি, মার্কেট, বিপণিবিতান। চালান বিএমডাব্লিউ গাড়ি। গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মিনহাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সোনা চোরাচালানের এই সিন্ডিকেট অনেক বড়। কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের পর দেশে সোনা চোরাচালানের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও এদের সঙ্গে জড়িত বিমানের অনেক কর্মকর্তার বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। বিমানের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি রাজনৈতিক নেতার নামও বলেছেন। তদন্তের স্বার্থেই এক্ষুণি তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না। গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ড শেষ হলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিলে আরও অনেক কর্মকর্তাই গ্রেফতারের আওতায় আসবেন। 

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, দুবাইয়ের একটি ফ্লাইটের সিট খুলে ফেলেছিলেন পলাশ। ওই সিটের নিচে সোনার চালান বিশেষ কায়দায় আটকিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। এ ছাড়া উড়োজাহাজের ককপিটসহ বিভিন্ন স্থানে রেখে সোনার চালান নিয়ে আসতেন পলাশ। সূত্র জানায়, ইতিপূর্বে ডিজিএম এমদাদকে জিজ্ঞাসাবাদে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। তিনি সোনার চোরাচালানের কথা স্বীকারও করেছেন। তাছাড়া তিনি তার বিপুল সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। ইতিমধ্যে এমদাদ তার পান্থপথের বিলাসবহুল বাড়ি, গুলশানের মার্কেটে কয়েকটি দোকান এবং তার নিজস্ব একটি বিএমডাব্লিউ গাড়ি থাকার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি কয়েক ব্যাংকে নিজ নামে ও বেনামে কয়েকটি অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার কথা জানিয়েছেন। পুলিশ জানায়, রিমান্ডের এখনো তিন দিন বাকি রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে তার বিষয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যেতে পারে। বর্তমানে তার দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে।    

সূত্রে জানা যায়, সোনা চোরাচালানের কয়েকটি পদ্ধতির মধ্যে একটি হলো বিমানের কর্মকর্তা বা অন্য বাহকরা সোনা ফ্লাইট থেকে নামিয়ে সিভিল এভিয়েশনের সিকিউরিটি ও ট্রলি ম্যানদের দেন। অ্যাপ্রোন এলাকায় মূলত ট্রলিম্যান ও সিকিউরিটির লোকজন বেশি থাকে। বাইরের বাহক অথবা বিমানের পাইলটরা কখনো কখনো সোনাগুলো টয়লেটের মধ্যে রেখে আসেন। এর পর সিকিউরিটি অথবা ট্রলিম্যানরা সেগুলো সুযোগ বুঝে নিয়ে কৌশলে বাইরে চলে যান। এ ছাড়াও বাহকরা অনেক সময় পাচারকৃত সোনা অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশনের লাইনে দাঁড়িয়েই সিকিউরিটি অথবা ট্রলিম্যানদের দেন। পরে তারা সুযোগ বুঝে পাচার করে দেন। সোনা পাচারকারী সিভিল এভিয়েশনের এই চক্রটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর