সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

রহস্যজনক নিখোঁজ সাংবাদিক সজীব

নিজস্ব প্রতিবেদক

রহস্যজনক নিখোঁজ সাংবাদিক সজীব

ঢাকা থেকে চাঁদপুরে যাওয়ার পথে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর ব্রিজের কাছে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিনিধি আওরঙ্গজেব সজীব। গতকাল সকাল ১০টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। গতকাল সকাল ৯টার দিকে ঢাকার সদরঘাট থেকে চাঁদপুরগামী এমভি তাকওয়া নামে একটি লঞ্চে তিনি ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে সজীবের মানিব্যাগ এবং মোবাইল ফোন লঞ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে কীভাবে আসল এ ব্যাপারে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। সজীব বাংলাদেশ মেডিকেল রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমআরএ) সাবেক সভাপতি ছিলেন। গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত সজীবের কোনো সন্ধান মেলেনি। ‘এমভি তাকওয়া’ লঞ্চের যাত্রী শফিক নামের এক যুবক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমার বাড়ি টঙ্গীতে। নোয়াখালীতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলাম। লঞ্চে আমার সিটের পাশেই বসা ছিলেন ওই ব্যক্তি। আমি লঞ্চের ছাদে গিয়েছিলাম ঘুরতে। এসে শুনি ওই ব্যক্তি পানিতে নাকি লাফ দিয়েছেন। তার পাশে আলী নামের এক লোক বসা ছিলেন। তিনিই লঞ্চ মাস্টারের কাছে ওই লোকের মানিব্যাগ, মোবাইলসহ বাকি কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। লঞ্চের মাস্টার ফরিদ হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, লঞ্চের দ্বিতীয় তলায় বসে ছিলেন ওই সাংবাদিক। তাকে লাফ দিতে যাত্রীরাও দেখেছেন বলে তারা আমাকে বলেছেন। আলী নামের এক যুবক ওই সাংবাদিকের মানিব্যাগ, মোবাইলসহ রেখে যাওয়া জিনিষপত্র আমার কাছে জমা দিয়েছেন। এর বাইরে আমি কিছু জানি না। সজীবের স্ত্রী মোরশেদা বেগম ঘটনা শোনার পরপরই ছেলে সোহানকে নিয়ে ছুটে যান মুন্সীগঞ্জের ঘটনাস্থলে। ছেলেকে নিয়েই সারা দিন হন্যে হয়ে খোঁজেন স্বামীকে। চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে এ প্রতিবেদককে বলছিলেন, আমার স্বামীর তো ঢাকা মেডিকেলে থাকার কথা। বাসায় তো আমরা এটাই জানি। তার তো লঞ্চে চাঁদপুর যাওয়ার কথা ছিল না। আমি নিশ্চিত কেউ পরিকল্পনা করেই আমার স্বামীকে নিখোঁজ করেছে। বাবার নিখোঁজ সংবাদে রীতিমতো শোকে পাথর হয়ে গেছে সাংবাদিক সজীবের একমাত্র সন্তান সোহান। সজীবের খালু জাহিদ হোসেন বলেন, সজীবের শত্রু থাকতে পারে তা আমার বিশ্বাস হয় না। নিশ্চয়ই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। চাঁদপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক শাহ্আলম বলেন, মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর ব্রিজের কাছে পৌঁছলে সজীব নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। এর আগে তিনি তার মানিব্যাগ ও দুটি মোবাইল লঞ্চে রেখে যান। তার আইডি কার্ড দেখে জানা যায় তিনি সাংবাদিক। সজীবের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরে। তিনি এক ছেলে ও স্ত্রীসহ ঢাকার বকশীবাজার কমলদাহ রোডের ৯ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলায় বসবাস করেন।

সর্বশেষ খবর