মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

শেখ হাসিনাকে ট্রুডোর ফোন, সন্ত্রাস নির্মূল একসঙ্গে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সন্ত্রাস নির্মূলে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন। গতকাল সকালে জাস্টিন ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করেন। দুই নেতা ফোনালাপের সময় বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতিও সন্ত্রাস নির্মূলে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এ সময় নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানান ট্রুডো। হামলায় ৫০ ব্যক্তি নিহত হওয়ায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, প্রায় ২০ মিনিট তাঁদের মধ্যে কথোপকথন হয়। ট্রুডো বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কেননা ক্রাইস্টচার্চে শুক্রবারের নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা অল্পের জন্য রক্ষা পান। যে হামলায় ৪ জন বাংলাদেশিসহ ৫০ জন নিহত এবং বহু আহত হয়। কানাডার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা রক্ষা পাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেন। প্রেস সচিব বলেন, জাস্টিন ট্রুডোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ জন্য সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক আন্দোলন গড়ে তোলা উচিত। এর উত্তরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অভিমত সমর্থন করেন এবং বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়কে সন্ত্রাসের মূল উৎপাটনে একযোগে কাজ করতে হবে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সব ক্ষেত্রেই সন্ত্রাসকে নিন্দা জানায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি শান্তি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ এবং আমরা আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সব তীর্থস্থান যেমন-মসজিদ, মন্দির, গির্জা এবং প্যাগোডা রক্ষার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। তিনি বলেন, ইসলামে কোনো ধরনেরই সন্ত্রাসের কোনো সুযোগ নেই। সন্ত্রাসীর কোনো ধর্ম নেই এবং ভৌগোলিক সীমারেখা নেই। প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোকে বলেন, বাংলাদেশ সরকার সমাজ থেকে সন্ত্রাসের মূল উৎপাটনের মাধ্যমে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে সবাইকে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় কানাডায় অবস্থানরত জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধূরীকে দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, নূর চৌধুরী বর্তমানে পলাতক অবস্থায় কানাডায় অবস্থান করছে। এটি আইনের শাসনের ক্ষেত্রে একটি বড় কাজ হবে, যদি কানাডা বঙ্গবন্ধুর খুনিকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেয়, যাতে সে ন্যায়বিচারের সম্মুখীন হতে পারে। এর উত্তরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা একটি আইনি বিষয় এবং আমরা বিষয়টি বিবেচনা করে দেখব। শেখ হাসিনা এ সময় দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ ও কানাডা ভবিষ্যতে আরও উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় পারস্পরিক সহযোগিতা, হৃদ্যতা এবং সম্মানজনক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং কানাডার আসন্ন নির্বাচনে তাঁর সাফল্য কামনা করেন। জাস্টিন ট্রুডো এ সময় বিগত নির্বাচনে বিপুল বিজয়ে এবং চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের জন্য শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

সর্বশেষ খবর