শিরোনাম
শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে পুলিশ সদস্যের আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুলিশ কনস্টেবল শাহ মোহাম্মদ কুদ্দুস তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করব না। আমার ভেতরের যন্ত্রণাগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে। আমি আর সহ্য করতে পারছি না। প্রাণটা পালাই পালাই করছে...’। এরপরই কনস্টেবল কুদ্দুসের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার হয়।

রাজধানীর মিরপুর ১৪ নং সেকশনের পুলিশ লাইন মাঠের এক কোনায় কুদ্দুসের লাশটি পড়ে ছিল। গতকাল ভোর ৫টার দিকে পুলিশ কুদ্দুসের লাশ খুঁজে পায়। কাফরুল থানায় এ ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছে। শাহ মোহাম্মদ কুদ্দুস (৩০) ২০১২ সালে কনস্টেবল হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। তার বাড়ি সিলেটের হবিগঞ্জ।

ফেসবুকে কুদ্দুসের স্ট্যাটাসটি ‘সুইসাইডাল নোট’ হিসেবেই দেখছে পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তাদের ধারণা, স্ট্যাটাসটি ফেসবুকে দিয়েই তার নামে ইস্যু করা অস্ত্র এসএমজি নিজের বুকে ঠেকিয়ে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পারিবারিক অশান্তি থেকেই কুদ্দুস আত্মহত্যা করতে পারে বলে মনে করছেন তারা। তবে অন্য কোনো ঘটনা আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

কাফরুল থানার ওসি মো. সেলিমুজ্জামান জানান, কনস্টেবল শাহ মোহাম্মদ কুদ্দুস মিরপুর ১৪ নম্বরের ডিএমপি পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) ব্যারাকে থাকতেন। বৃহস্পতিবার ভোরে তার পিওএমের বাইরে ডিউটি ছিল। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশের অন্য সদস্যরা তাদের নামে বরাদ্দ করা রাইফেল নিয়ে ডিউটিতে যাওয়ার জন্য গাড়িতে ওঠেন। কিন্তু শাহ মোহাম্মদ কুদ্দুসকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে মাঠের এক কোনায় তার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার ব্যবহৃত অস্ত্রটিও জব্দ করা হয়েছে।

মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই এলাকার বিট অফিসার কাফরুল থানার এসআই মোজাম্মেল হক নিহত কুদ্দুসের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন। তিনি বলেন, আমি ভোরে খবর পেয়ে গিয়ে মাঠে কুদ্দুসের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। এরপর ঘটনাস্থল কর্ডন করা হয়। তার বুকে দুটি ছিদ্র রয়েছে। তিনি আরও বলেন, কুদ্দুসের ডিউটি ছিল সকালে। এ জন্য সে একটি ফুল লোডেড এসএমজি বন্দুক রিকুইজিশন নিয়েছিল। সেটি দিয়েই গুলি চালানো হয়েছে। তার বুকে দুটি ছিদ্র ছিল। ভিতরে কয়টি গুলি আছে তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। এ ঘটনার পর কুদ্দুসের সহকর্মী ও তার ঘনিষ্ট কয়েকজন পুলিশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এসআই মোজাম্মেল বলেন, আমরা শুনেছি তিনি অত্যন্ত মানসিক চাপে ভুগছিলেন। তা থেকে আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করছি। তবে আমি একটি ফেসবুক পোস্টের কথা শুনেছি, সেটি এখনো দেখিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পুলিশ কনস্টেবল কুদ্দুসের স্ট্যাটাস ঘিরে নানা আলোচনা ডালাপালা মেলছে। পুলিশ যাকে সুইসাইডাল নোট হিসেবে দেখছে।

ফেসবুকে কুদ্দুস লিখেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করব না। আমার ভিতরের যন্ত্রণাগুলো অনেক বড় হয়ে গেছে। আমি আর সহ্য করতে পারছি না। প্রাণটা পালাই পালাই করছে...’

“তবে সকল অবিবাহিতগণের প্রতি আমার আকুল আবেদন, আপনারা পাত্রী পছন্দ করার আগে পাত্রীর ‘মা’ ভালো কিনা সঠিকভাবে খবর নেবেন। কারণ পাত্রীর ‘মা’ ভালো না হলে পাত্রী কখনই ভালো হবে না। ফলে আপনার সংসারটা হবে দোজখের মতো। সুতরাং সকল সম্মানীত অভিভাবকগণের প্রতি আমার শেষ অনুরোধ, বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেবেন।”

সর্বশেষ খবর