শিরোনাম
বুধবার, ১০ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে একজন নিহত, ওসিসহ আহত ৩০

কাদের মির্জার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

নোয়াখালী প্রতিনিধি

কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে একজন নিহত, ওসিসহ আহত ৩০

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে গতকাল আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাটে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আলাউদ্দিন নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিসহ ৩০ জন। আহতের মধ্যে ১৩ জন গুলিবিদ্ধ। গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে বসুরহাট পৌর শহরের রুপালি চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় উভয় পক্ষের সমর্থকরা ককটেল বিস্ফোরণ এবং দোকানপাট, অটোরিকশা ভাঙচুর করে। রাত ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে সংঘর্ষ চলছিল। প্রশাসন বসুরহাট পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে। নিহত ছাত্রলীগ কর্মী আলাউদ্দিন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থক বলে জানা গেছে। ১৩ গুলিবিদ্ধ আহতের মধ্যে হৃদয় নামে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় আবদুল কাদের মির্জা ও তার লোকজন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানকে মারধর করেন। এর প্রতিবাদে গতকাল বিকালে বসুরহাটের রুপালি চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। সমাবেশ চলা অবস্থায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে আবদুল কাদের মির্জার সমর্থকরা পৌরসভা ভবন থেকে বের হয়ে ধাওয়া দেয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষের লোকজন ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণ ও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। মুহূর্তের মধ্যে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় ১৩ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন ৩১ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও র‌্যাব লাঠিচার্জ করে। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আহতের মধ্যে গুলিবিদ্ধ আলাউদ্দিন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রাত ১১টার দিকে মারা যান। এদিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানকে মারধর করায় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিচার দাবিতে নোয়াখালী শহরে মুক্তিযোদ্ধারা মানববন্ধন করেছেন। গতকাল বেলা ১টায় টাউন হল মোড়ে এ মানববন্ধন হয়। জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাম্মেল হক মিলনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সাবেক জেলা কমান্ডার মিজানুর রহমান মিজান, মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মোহাম্মদ শাহজাহান, আবুল কাশেম প্রমুখ বক্তৃতা করেন। কর্মসূচিতে জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেন। বক্তারা বলেন, আবদুল কাদের মির্জা একের পর অপকর্ম করে যাচ্ছেন। সর্বশেষ তিনি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, যিনি যুদ্ধকালীন কোম্পানীগঞ্জের একজন ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন তাঁর গায়েও হাত তোলেন। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এর বিচার না হলে সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধারা একযোগে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।

ওরা নাটক সাজাচ্ছে, কাদের মির্জা : গতকাল বেলা ১১টায় বসুরহাট পৌরসভা চত্বরে সংবাদ সম্মেলনে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, খিজির হায়াত খানকে তিনি লাঞ্ছিত করেননি। বরং উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিনি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। তার বিরুদ্ধে অপরাজনীতিকারী পক্ষ মিথ্যাচার করছে এবং পরিকল্পিতভাবে নাটক সাজাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, গতকাল (সোমবার) রাতে খিজির হায়াত খান ও মিজানুর রহমান বাদলের লোকজন বাজারে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছেন।

সর্বশেষ খবর