বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

রেমিট্যান্স জাদু নয়, তাই কখনো শেষ হবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

রেমিট্যান্স জাদু নয়, তাই কখনো শেষ হবে না

রেমিট্যান্স কি কোনো জাদু? রেমিট্যান্স কোনো জাদু নয়। তাই এটা কখনো শেষ হবে না। ফলে রেমিট্যান্স যে জায়গায় ছিল সে জায়গাতেই থাকবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পর  চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেই রেমিট্যান্স প্রবাহে নিম্নগতি বিরাজ করায় সিপিডি বলেছে, রেমিট্যান্সের জাদু শেষ হতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রেমিট্যান্স কি জাদু নাকি? রেমিট্যান্স যদি জাদু হয়ে থাকে তবে জাদু শেষ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু রেমিট্যান্স তো জাদু নয়। সুতরাং রেমিট্যান্স কখনো শেষ হবে না। রেমিট্যান্স যে জায়গায় ছিল সে জায়গাতেই থাকবে।  কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে ২০১৯ সালে যখন আমরা রেমিট্যান্সের বিষয়ে প্রণোদনা দেওয়া শুরু করি, তখন থেকেই একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তারা বলে আসছিল, প্রণোদনা দিয়ে রেমিট্যান্স বাড়ানো যাবে না এবং তারা বলেছে এটা কখনো বাড়বে না। তারা বলেছিল এটা সাময়িক, সাসটেইনেবল নয়। এটা যে কোনো মুহূর্তে শেষ হয়ে যাবে। আপনারা জানেন, ২০১৯ সালে আমরা যখন প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছিলাম, এর আগে আমাদের রেমিট্যান্স ছিল প্রতিবছর ১৩ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার পর প্রথম বছরেই আমরা সংগ্রহ করলাম ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। ১৩ দশমিক ১ থেকে ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে চলে যায়। দ্বিতীয় বছরে রেমিট্যান্স প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারে চলে যায়। এটা অবিশ্বাস্য। রেমিট্যান্স ২৫ বিলিয়ন ডলার আসার পর তারা বলছে অনেক বেশি এসে গেছে। তারা চায় কম আসুক।’ বিদেশগামীদের কতটা সহায়তা দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রেমিট্যান্সের সঙ্গে এটার কোনো সম্পর্ক নেই। সঠিকভাবে পাঠাতে পেরেছি। আমাদের কাছে এমন অভিযোগ নেই যে তারা যেতে পারেনি। সবচেয়ে বড় কথা, যেখানে তারা যাবে সেখানে তারা যাচ্ছে। সেটা বন্ধ হয়নি। এটি চলমান। যখন স্বাভাবিক হবে তখন আরও বেশি মানুষ যাবে। আমার বিষয়টি হলো, রেমিট্যান্সের যে সমস্যা ছিল সেটি ভালো হচ্ছে। বিদেশে যাওয়া নিয়ে বিশেষ ব্যয় করা হয়েছে, সব শর্তে ঋণের ব্যবস্থা আছে। তাদের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থাই আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই মাসের প্রথম নয় দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৬৭ মিলিয়ন ডলার। একই সময় গত বছর নয় দিনে রেমিট্যান্স এসেছিল ৪৫০ মিলিয়ন ডলার। এর পরও এটি সুবাতাস দেবে না তা তারা কেন বলেন। দেশকে ভালো বাসা, জনগোষ্ঠীর ভালোর বিষয়গুলো ভাবা প্রয়োজন। এক মাসে কম ছিল, বাকি মাসগুলোতে সেটি পূরণ হয়ে গেছে।’ গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের জিডিপি অর্জনের বিষয়ে বিবিএসের চূড়ান্ত হিসাব ও চলতি অর্থবছরের জিডিপির টার্গেট রিভিউ করা হবে কি না- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি দেখি স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন যদি ব্যাহত হয় বা ইনফেকটেড হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়, তখন সেটি দেখা যাবে। এ মুহূর্তে আমাদের জিডিপির যে অবস্থা, তাতে আমরা এটি কাভার করতে পারব বলে আশা করি। চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী জিডিপিতে আমরা ২০১৯-২০ অর্থবছরে যে অর্জন করেছি ৩ দশমিক ৫১, এটি আমাদের আশা ছিল আমরা অর্জন করতে পারব। আপনারা জানেন সেই বছর একটা বড় অংশ আমরা অস্বাভাবিকভাবে পার করেছি এবং শুধু আমরা নই, অন্যান্য দেশও সেভাবে পার করেছে। তারপর আমরা ৩ দশমিক ৫১ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি। এটিও এশিয়ার সব দেশের ওপরে আমাদের অবস্থান।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর