শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সংঘর্ষ থামছেই না

নারায়ণগঞ্জ রণক্ষেত্র একজন নিহত, ১৪ স্কুলছাত্রীসহ আহত দেড় শতাধিক নেত্রকোনা সিরাজগঞ্জ রূপগঞ্জে হামলা, কুমিল্লা বগুড়ায় ৫৪১ জন আসামি

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংঘর্ষ থামছেই না

নারায়ণগঞ্জে গতকাল বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ। নেত্রকোনায় বিএনপি ও পুলিশ সংঘর্ষ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনকালে গতকাল সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি কর্মীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপের বিপরীতে শত শত রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপসহ গুলি ছুড়েছে পুলিশ। পুলিশের গুলিতে নারায়ণগঞ্জে শাওন নামে যুবদলের এক নেতা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি। শাওন ফতুল্লার এনায়েতনগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের নেতা বলে নিশ্চিত করেছে জেলা বিএনপি। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক খান সুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। এ সময় একটি বালিকা বিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থী পুলিশের নিক্ষিপ্ত টিয়ার শেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ ছাড়া এ সংঘর্ষে ১৪ পুলিশ, সাংবাদিক, পথচারীসহ দেড় শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। টানা কয়েক ঘণ্টার এ সংঘর্ষে সাড়ে ৪ ঘণ্টার বেশি সময় অচল হয়ে পড়ে নারায়ণগঞ্জ শহর। রাস্তাঘাট শূন্য হয়ে পড়ার পাশাপাশি মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। নিহত যুবদল নেতা শাওনের জন্য আজ সারা দেশে গায়েবানা জানাজা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এ ছাড়া আগামীকাল সারা দেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে দলটি।

নেত্রকোনায় বিএনপি-পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে ১৬ জন আহত হয়েছেন। সেখানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে ১২ জনকে আটক করে পুলিশ। অন্যদিকে সিরাজগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে ২০ জন ও মাদারীপুরের রাজৈরে পুলিশের লাঠিচার্জে ১০ জন আহত হয়েছেন। রূপগঞ্জে বিএনপি নেতার বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুরের পাশাপাশি পাথরঘাটায় ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছেন বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী। মানিকগঞ্জে পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে বিএনপির কর্মসূচি। কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিএনপির ৫০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে পুলিশ। বগুড়ার নন্দীগ্রামে স্থানীয় বিএনপির সভাপতিসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া পটুয়াখালীর গলাচিপা, বগুড়া, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, হোসেনপুর,  জামালপুর, রাজশাহী, বরিশাল, বরগুনা, খুলনা, নরসিংদী, সুনামগঞ্জ, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বর্ণাঢ্য র‌্যালিসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে বিএনপি। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে নারায়ণগঞ্জ অচল, নিহত , আহত দেড় শতাধিক, অসুস্থ ১৪ শিক্ষার্থী : দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে পুলিশ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে গতকাল নারায়ণগঞ্জ মহানগরের বঙ্গবন্ধু সড়ক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় পুলিশের গুলি-টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের জবাবে বিএনপি নেতা-কর্মীদের পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপে প্রায় ৪ ঘণ্টা অচল হয়ে পড়ে নারায়ণগঞ্জ শহর। বিএনপি নেতা-কর্মীদের দাবি, পুলিশের ছোড়া গুলিতে নারায়ণগঞ্জে শাওন নামে যুবদলের এক নেতা নিহত হয়েছেন। তিনি ফতুল্লার এনায়েতনগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের নেতা। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক খান সুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ দেড় শতাধিক আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশের টিয়ার শেলের ধোঁয়ায় একটি স্কুলের ১৪ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার মধ্যে তিনজন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এ ছাড়া আহত তালিকা থেকে বাদ যায়নি সাংবাদিক, পথচারীসহ সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ অন্তত ৫০০ রাউন্ড গুলি, টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ২ নম্বর রেলগেট, মণ্ডলপাড়ায় দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটে। এতে দুপুর ২টা পর্যন্ত পুরো নারায়ণগঞ্জ স্থবির হয়ে পড়ে। আতঙ্কে সাধারণ মানুষকে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।

অন্যদিকে পুলিশ দাবি করেছে, বিএনপি নেতা-কর্মীদের ছোড়া ইটপাটকেল ও ককটেলে পুলিশের ১৪ সদস্য আহত হয়েছেন। চিকিৎসার জন্য তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের কাছে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী নিহত হওয়ার তথ্য নেই।

সংঘর্ষের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘আমি নিজেও দুটি গুলি বিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছি।’ তিনি বলেন, সকাল ১০টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পুলিশ এসে বাধা দেয়। একপর্যায়ে কোনো উসকানি ছাড়াই পুলিশ নির্বিচারে গুলি ছোড়ে। এতে ছররা গুলিতে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, যুবদল নেতা শাহিন (৪০), জাহাঙ্গীর (৩০), রাজু (২৬), শরীফ (২৫), ইউনুস (৪৩), সাগর (২২), আবদুস সালাম (৬০), আখতার (৫২), মুন্না (১৮), কাদির (২৭), শরীফুল ইসলাম (১৯), শাহনাজ (৫০), সবুজ (৩৪), মোমেন (৫৫), শিহাব (২৫), শামসুল হক (৫০), শিল্পী (৪০), ইবরাহিম (২৫), তাজুল ইসলাম (৩০), আশরাফুল (৩২), সোয়াদ হোসেন (৩০), উজ্জ্বল ভৌমিক (২৮), মিন্টু (২৮), সজীব (১৮), নাসির (৪০) গুলিবিদ্ধ হন। ওই সময় নেতা-কর্মীদের লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।

এদিকে টিয়ার শেলের ধোঁয়ায় আহত হয়েছে নগরের মর্গান গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়শা সুলতানা, লামিয়া, আফসানা মিম, মিমিয়া, রোকেয়া, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী উম্মে হানি, আঁখি, উম্মে কুলসুমসহ ১৪ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে তিনজন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

স্কুলটির অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘স্কুলের পাশেই সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের সময় আমরা শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে ঢুকিয়ে ফেলি। কিন্তু শ্রেণিকক্ষের বাইরে ছিল এমন ১৪ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হওয়ায় চার-পাঁচ জনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। টিয়ার শেল ও গুলির শব্দে পুরো স্কুলে মেয়ে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে চিৎকার শুরু করে।’ তিনি বলেন, ‘যা-ই ঘটেছে, এখানে একটি স্কুল আছে এগুলো ভাবা দরকার ছিল সংশ্লিষ্টদের।’

মর্গান গার্লস স্কুলের আহত শিক্ষার্থী আয়শা সুলতানার মা কলি বেগম কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ একটি টিয়ার শেল পায়ের সামনে এসে পড়ে। মেয়েকে নিয়ে এখন শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে আছি। ধোঁয়ায় আমার মেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ওর জ্ঞান ফেরেনি।’ অন্যদিকে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন মোহনা টিভির নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক আজমেরী ও বিজয় টিভির গৌতম রায়। তাঁরা জানান, আহত হওয়া থেকে বাদ যায়নি পথচারী ও সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল গতকাল দুপুর ২টায় শহরের ২ নম্বর রেলগেট পুলিশ বক্সের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, কেউ নিহত হওয়ার সংবাদ পুলিশের কাছে নেই। পুলিশের প্রায় ১৪ জন আহত হয়েছেন।

তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জ বিএনপি নেতা-কর্মীরা কোনোরকম অনুমতি ছাড়াই মিছিল বের করেন। যার ফলে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। তাঁদের বারবার অনুরোধ করলেও রাস্তা থেকে সরে দাঁড়াননি। উল্টো পুলিশর ওপর ইটপাটকেল ছুড়েছেন। পুলিশ জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় আইনি ব্যবস্থা নিয়ে তাঁদের প্রতিহত করেছে।

পাথরঘাটায় ছাত্রলীগের হামলা : বরগুনা জেলার পাথরঘাটায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের কর্মীরা বিনা উসকানিতে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘আমরা দলীয় কার্যালয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের উচ্ছৃঙ্খল কিছু সন্ত্রাসী অতর্কিত আমাদের অফিসে হামলা চালিয়ে নেতা-কর্মীদের মারধর করে। পুলিশ তাদের সরিয়ে দিলেও কয়েক দফা হামলা চালায় তারা।’

পাথরঘাটা পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি শাহজাদা আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করার কারণ জানতেই আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। এর বেশি কিছু নয়।’

নেত্রকোনায় বিএনপি-পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ১৬, আটক ১২ : নেত্রকোনায় দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনকালে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের টিয়ার শেল, রাবার বুলেট এবং বিএনপি নেতা-কর্মীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপে পুলিশসহ মোট ১৬ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ ১২ জনকে আটক করেছে।

মানিকগঞ্জে পুলিশের বাধায় বিএনপির কর্মসূচি পণ্ড : পুলিশের বাধায় মানিকগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পণ্ড হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে নেতা-কর্মীরা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে প্রধান কার্যালয়ে যাওয়ার পথে খালপাড় এলাকায় পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মী ও পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।

এদিকে সকাল থেকেই ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নেন। এ ঘটনায় সদর উপজেলা বিএনপি সভাপতি ফজলুল হকসহ পাঁচ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়। এ ছাড়া ১২ জন আহত হন।

নাঙ্গলকোটে বিএনপির ৫০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা : কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপির ৫০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গতকাল পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ১৯ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে।

ওসি জানান, বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নাঙ্গলকোট উপজেলা সদরে বিএনপি নেতা-কর্মীরা জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিলের নামে তাণ্ডব চালিয়েছে। এ সময় পুলিশ বাধা দিতে গেলে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি।

এ ঘটনায় বুধবার রাতে নাঙ্গলকোট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাধন চন্দ্র নাথ বাদী হয়ে ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৪৫০ জনের নামে মামলা করেন। পরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গতকাল ১৯ জনেক গ্রেফতার করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ, আহত ২০ : সিরাজগঞ্জে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ইটপাটকেল, রাবার বুলেট ও টিয়ার শেলের আঘাতে পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। বেলা ১১টা থেকে শহরের ইবি রোড এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নেতা-কর্মীরা শহরের ইবি রোডের জেলা বিএনপি কার্যালয় ও ভাসানী মিলনায়তনে সমবেত হন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা শেষে ফিরে যাওয়ার পথে হঠাৎ বিএনপির কর্মীরা বিচ্ছৃঙ্খলা শুরু করে ও একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে বাধা দিলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জসিম উদ্দিন জানান, বিএনপি নেতা-কর্মীদের ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের সাত সদস্য আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়াও সমাবেশ চলাকালে রাস্তায় তল্লাশি চালিয়ে ধারালো অস্ত্রসহ এক ছাত্রদল কর্মীকে আটক করা হয়েছে।

রাজৈরে পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ১০ : মাদারীপুরের রাজৈরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জে কমপক্ষে ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে রাজৈর উপজেলা শহরে ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মিল্টন বৈদ্যের নেতৃত্বে মিছিল বের হলে পুলিশের লাঠিচার্জে তা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় বিএনপির কমপক্ষে ১০ জন নেতা-কর্মী পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হন। তবে রাজৈর থানার ওসি আলমগীর হোসেন লাঠিচার্জের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে, মাদারীপুর জেলা বিএনপির দুই গ্রুপের উদ্যোগে আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

নাটোরে যুবদল নেতার ওপর ছাত্রলীগের হামলা : নাটোরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আসা নেতা-কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা ঘটেছে। সকাল ১০টার দিকে বিএনপির জেলা কার্যালয়ে দলের আলোচনাসভাকালে অফিসের সামনের মহাসড়কে জেলা ছাত্রলীগ বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় বিপুল পরিমাণ র‌্যাব পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশে অবস্থান নেয়। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হামলায় যুবদল নেতা গুরুদাসপুর উপজেলার মোকিমপুর গ্রামের শামীম আহমেদ (৪০) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে পুলিশ উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

রূপগঞ্জে বিএনপি নেতার বাড়িঘরে হামলা ভাঙচুর : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিএনপি নেতা গুলজার হোসেনের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ওই বিএনপি নেতার দাবি, কেন্দ্রের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে এলাকায় চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।

রাজধানীসহ দেশব্যাপী বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত : বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা, গুম ও হামলা করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে কখনই দমন করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। তাঁরা বলেন, জনগণের ন্যায্য দাবি কখনই দাবিয়ে রাখা যাবে না। জনগণের বিজয় চলছে, চলতে থাকবে। সরকার পতনের জন্য অন্য কোনো পথ নেই। আজ আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথ দখল করে দুর্বার আন্দোলন করে এ সরকারকে পরাজিত করতে হবে। গতকাল বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আগে দলটির নেতারা এ কথা বলেন। দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ র‌্যালি ছাড়াও সকালে নয়াপল্টন ও গুলশানের কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয় এবং আজ (শুক্রবার) গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে আলোচনা সভা হবে।

পূর্ব ঘোষিত শোভাযাত্রা বিকাল ৪টায় শুরু হলেও নেতা-কর্মীরা দুপুর ১২টা থেকেই মিছিল নিয়ে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশেপাশে অবস্থান নিতে থাকেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে ফকিরাপুল মোড় ছাড়িয়ে আরামবাগ থেকে কাকরাইল পর্যন্ত পৌঁছে। নেতা-কর্মীদের হাতে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই লেখা ব্যানার-ফেস্টুন শোভা পায়। ট্রাকের ওপর দলীয় সংগীতের পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে বিভিন্ন সংগীতও বাজতে থাকে শোভাযাত্রায়। ঘোড়ার গাড়ি, হাতি, ছোট ছোট ট্রাক, ঢোল, সাউন্ডবক্স, বেলুন, লাল ও সবুজ টুপি পরে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা র‌্যালিতে যোগ দেন। ‘আয়নাঘরের’ প্রতীকী তৈরি করে সরকারের গুম-খুনের প্রতিবাদ জানান দলটির নেতা-কর্মীরা। শোভাযাত্রার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কারাবন্দি চেয়ারপারসনের মুক্তির পাশাপাশি সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। যখন শোভাযাত্রাটি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পৌঁছে, তখনো মিছিলের শেষ মাথা ফকিরাপুল অতিক্রম করছিল। বিএনপির র‌্যালি ঘিরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলে। র‌্যালি শুরু হওয়ার আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে যুবদল কর্মী নিহতের প্রতিবাদে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

মহানগর বিএনপি উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। র‌্যালিতে বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, শামসুজ্জামান দুদু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবদিন ফারুক, মশিউর রহমান, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্মমহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, আমিনুল হক, আতিকুল ইসলাম মতিন, চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, রফিকুল ইসলাম মজনু, আ ন ম সাইফুল ইসলাম, হুমায়ুন কবির, শফিকুল ইসলাম রাসেলসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা অংশ নেন।

আজকের কর্মসূচি : মানিকগঞ্জ, নেত্রকোনা, নড়াইল, সিরাজগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মসূচিতে হামলা ও পুলিশ গুলিবর্ষণ করে অসংখ্য নেতা-কর্মীকে আহত এবং নারায়ণগঞ্জে মহানগর যুবদল নেতা শাওনকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে আজ ঢাকাসহ দেশব্যাপী জেলা ও মহানগর দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন এবং বাদ জুমা নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে জেলা ও মহানগরে গায়েবানা জানাজা হবে। এ ছাড়া আগামীকাল বিএনপির উদ্যোগে ঢাকাসহ দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে প্রতিবাদ সমাবেশ হবে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে ওই কর্মসূচি পালনের জন্য দলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

যুবদল নেতা হত্যার বিচার দাবি গণসংহতি আন্দোলনের : নারায়ণগঞ্জে বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে যুবদল নেতা হত্যার ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেছে গণসংহতি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল নারায়ণগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির ডাকা কর্মসূচিতে পুলিশের হামলা-গুলিবর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বর্তমান ফ্যাসিবাদী-কর্তৃত্ববাদী সরকার তার অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন ও গুলিবর্ষণ করে হত্যা করছে। আজ (বৃহস্পতিবার) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে দুজনকে হত্যা করেছে, আহত করেছে শতাধিক নেতা-কর্মীকে। হামলা হয়েছে নেত্রকোনায়ও। আমরা এ হামলা ও হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে দায়ী পুলিশ সদসদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করি।’

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জনগণের সংগঠিত হওয়ার সাংবিধানিক অধিকার উপেক্ষা করে ভোটহীন এই ফ্যাসিবাদী-কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে মানুষ খুনের মতো ঘৃণ্য পন্থা গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, এভাবে দমন করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা যাবে না। জনগণের অভ্যুত্থানে এ সরকারের পতন ঘটবে।

নেতৃবৃন্দ সব অত্যাচার দমন-পীড়ন, নির্যাতন এবং এ হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে জনগণের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলা এবং ফ্যাসিবাদী সরকার ও শাসনব্যবস্থার পতনের লড়াই জোরদার করার আহ্বান জানান।

গণফোরামের নিন্দা প্রতিবাদ : গণফোরাম নেতৃবৃন্দ বলেছেন, অবৈধ সরকার ক্ষমতা অবৈধভাবে টিকিয়ে রাখতে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ দিয়ে ন্যক্কারজনক হামলা করে মানুষ হত্যার মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশে শান্তিপূর্ণ মিছিল, সমাবেশ ও শোভাযাত্রায় পুলিশি হামলা ও গুলিতে একজন নিহতসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

গণফোরাম সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সভাপতিত্বে তাঁর নিজ কার্যালয়ে নির্বাহী পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, মহিউদ্দিন আবদুল কাদের বক্তব্য দেন। বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘অবৈধ সরকার ক্ষমতা অবৈধভাবে টিকিয়ে রাখতে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ দিয়ে ন্যক্কারজনক হামলা করে মানুষ হত্যার মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। নির্বিচারে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করে এই প্রশাসননির্ভর সরকার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিনিয়ত ক্ষুণ্ন করে চলেছে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে পুলিশি হামলায় একজন নিহত ও আহত হয়েছেন অগণিত নেতা-কর্মী। আমরা গণফোরাম নিহতের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনা করে এই বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পুলিশ প্রশাসনকে দলীয় পেটোয়া বাহিনীতে পরিণত করেছে এই ফ্যাসিস্ট সরকার। অবিলম্বে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে মানুষ হত্যার বিচার এদেশের মাটিতে করা হবে। গণফোরাম বিশ্বাস করে জনগণের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন করে আইয়ুব-ইয়াহিয়াসহ কেউই টিকতে পারেনি। এই মধ্যরাতের কর্তৃত্ববাদী সরকারও টিকবে না। জনগণের বিজয় সুনিশ্চিত।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর