বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

দেশজুড়ে অবৈধ অস্ত্র

♦ চিহ্নিত পয়েন্টগুলোতেই সক্রিয় ব্যবসায়ীরা ♦ সীমান্ত জেলায় ব্লক রেইডের বিষয় ভাবছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সাখাওয়াত কাওসার

দেশজুড়ে অবৈধ অস্ত্র

গত মঙ্গলবার রাতে একটি মোটরসাইকেলে করে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পোদ্দার বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমাম। বাজারের পশ্চিম মাথায় যাওয়া মাত্রই তাদের ওপর চড়াও হয় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। তাদের লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গুলি করতে থাকে সন্ত্রাসীরা। আত্মরক্ষার্থে মোটরসাইকেল থেকে লাফিয়ে পড়েন নোমান। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। একজন দুর্বৃত্ত তার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে একাধিক গুলি করে। গুরুতর অবস্থায় নোমান এবং রাকিবকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।

গত ১৬ মার্চ দুপুরে নারায়ণগঞ্জ বন্দরের ফেরাজীকান্দা এলাকায় ফিল্মি স্টাইলে ফাঁকা গুলি ছুড়ে বাজার দখল করতে যায় স্থানীয় পিজা শামীমের নেতৃত্বে হোন্ডা বাহিনীর সদস্যরা। প্রকাশ্য দিবালোকে এমন ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশকে অবহিত করা হলেও তারা এগিয়ে আসেনি। প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলে দুর্বৃত্তদের মিশন। বাধা দিতে এলে সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে বিদ্ধ হন জমির মালিক মঈনুল হক পারভেজ (৪২)। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন পারভেজের স্ত্রী সুমা আক্তার (৩০) ও বৃদ্ধা মা মাফুজা বেগম (৫৮)। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ দিন পর ৪ এপ্রিল মারা যান পারভেজ। এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে নরসিংদীর শিবপুর পৌর এলাকার বাজার সড়কে শিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হারুনুর রশিদ খানকে বাড়িতে ঢুকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। গুলি দুটি তার পিঠের দুই জায়গায় বিদ্ধ হয়। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

এ তো গেল মাত্র তিনটি ঘটনা। রাজধানীসহ দেশের নানা প্রান্তে এমন ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। গত ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায়ও নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে ককটেল মারতে বাধা দেওয়ায় জুলহাস মিয়া নামের একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও তিনজন। এ ছাড়া ৩০ জানুয়ারি সকাল ৮টার দিকে সকালে খুলনার ফুলতলায় রাস্তায় প্রকাশ্যে মিলন ফকির (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। গুলিবিদ্ধ মিলন দৌড়ে স্থানীয় একটি দোকানে প্রবেশ করেও প্রাণে বাঁচতে পারেননি। দুর্বৃত্তরা সেখানে ঢুকে তাকে পুনরায় উপর্যুপরি গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে মোটরসাইকেলে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তদের রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে বিব্রত খোদ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরাও। এসব প্রভাবশালী নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার জন্য তাদের অনুসারীদের দিয়ে সংগ্রহ করাচ্ছেন অবৈধ অস্ত্র। রাজনৈতিক সহিংসতা ছাড়াও পেশাদার সন্ত্রাসীরা ব্যবহার করছে এসব অস্ত্র। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শীর্ষ ব্যক্তিদের। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান বলছে, জানুয়ারিতে রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলসহ ২০টি রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুজন নিহত ও ২১০ জন আহত হন। সহিংসতার অধিকাংশ ঘটনায় গুলি চালানো হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলতি বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করেই পেশাদার সন্ত্রাসীরা সংগ্রহ করছে ছোট-বড় আগ্নেয়াস্ত্র। অস্ত্র ব্যবসায়ীরা নানা কায়দায় তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে অস্ত্র। বিশেষ করে সামনে জাতীয় নির্বাচন এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য কিছু প্রভাবশালী তাদের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে অস্ত্র সংগ্রহ করাচ্ছেন। এসব অস্ত্রই ভাড়ায় খাটাচ্ছে অনেকেই। নিজস্ব অনুসন্ধানসহ একাধিক সংস্থার গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারাও স্বীকার করেছেন সীমান্ত দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ঢোকার বিষয়টি। কোনোভাবেই যেন বন্ধ করা যাচ্ছে না অবৈধ অস্ত্রের প্রবেশ। সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ ও নাইন এমএম পিস্তল বেশি ঢুকছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে। আর পয়েন্ট টু-টু বোরের রিভলবার আসছে সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত ব্যবহার করে। কুমিল্লা, যশোরের বেনাপোল ও হিলি সীমান্ত হয়েও নানা ধরনের অস্ত্র ঢুকছে দেশে। সীমান্ত পয়েন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তেলকুপি, সোনামসজিদ ও শিবগঞ্জ পয়েন্ট। অস্ত্র ব্যবসায় সক্রিয় রয়েছেন তেলকুপির সোহেল, লম্বু সোহেল ও কামাল; শিবগঞ্জের টিপু; সোনামসজিদের আমীর ও রফিক। যশোরের বেনাপোলের বিশু মেম্বার ও আরমান রহস্যজনকভাবে সবকিছুকে ম্যানেজ করেই সক্রিয় রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সিলেটের কানাইঘাটের সীমান্ত দিয়ে মাঝেমধ্যেই আসছে নাইন এমএম। সেখানে সক্রিয় রয়েছেন আজম ও শাহাবুদ্দীন। দিনাজপুরের হিলিতে প্রশাসনের দুর্নীতিগ্রস্ত সদস্যদের ম্যানেজ করে সক্রিয় রয়েছেন রনি, জাভেদ ও শাহাবুদ্দীন। রাঙামাটির পার্বত্য এলাকা দিয়ে দেদার ঢুকছে ছোট-বড় অস্ত্র। চাহিদা অনুযায়ী নিয়মিতই অস্ত্রের জোগান দিয়ে আসছেন লালটন, পাংকুয়া, এসকে, অবনী নামের অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। তবে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার ভয়ংকর সন্ত্রাসী মো. বাদল ওরফে কিলার বাদল ইতোমধ্যে অনেক ছোট-বড় আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করেছেন বলে খবর এসেছে গোয়েন্দাদের কাছে। এই বাদলের অধীনে রয়েছে মোহাম্মদপুর এলাকার বড় একটি কিশোর গ্যাং। তার সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে অস্ত্র ব্যবসা দেখভাল করছেন শাহজাহান নামের একজন। অর্থের লেনদেনও করেন তিনি। আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে অনেক অপরাধেরই পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন কিলার বাদল।

গত বছর ১৪ এপ্রিল বগুড়ার কাহালুতে একটি গুলির ঘটনার তদন্তে গিয়ে রীতিমতো অস্ত্রের কারখানার সন্ধান পায় জেলা পুলিশ। বন্দুক তৈরির ব্যারেল, লোহার রিকয়েলিং স্প্রিং, ফায়ারিং পিন, ট্রিগারসহ অন্তত পাঁচটি একনলা বন্দুক তৈরির মতো সরঞ্জাম উদ্ধারসহ গ্রেফতার করে নিলু চন্দ্র প্রামাণিক ও তার ছেলে সঞ্জিত চন্দ্র প্রামাণিককে। রিমান্ডে নিয়েও তাদের কাছ থেকে খুব একটা তথ্য বের করতে পারেনি পুলিশ। তদন্ত-সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এরা বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র সরবরাহ করেছেন।

পুলিশ সদর দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে সারা দেশে ৫ হাজার ৮৭৯টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ১ হাজার ৫৪০টি। র‌্যাব সদর দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে সারা দেশে ৬৯২টি অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ৩৭১টি অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে ৬০২ জনকে। এ সময় ৬৩টি ম্যাগাজিন, ৫ হাজার ৮২৪ রাউন্ড গুলি এবং ৪১ হাজার ৮৮১টি বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় ৪৫০টি মামলা হয়েছে। চলতি বছর শুরু থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৭০টি অভিযানে ১৩৮টি অস্ত্র, ৩৪টি ম্যাগাজিন ও ২২৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। মামলা হয়েছে ৭৭টি। বিজিবির পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে ৪৩টি পিস্তল, ৫টি রিভলভার, ৭৯টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২৯টি ম্যাগাজিন এবং ৫ হাজার ৩৫৭টি গুলি উদ্ধার করা হয়। চলতি বছর ৫ মার্চ পর্যন্ত দুটি রাইফেল, ছয়টি পিস্তল, ২৭টি আগ্নেয়াস্ত্র, পাঁচটি ম্যাগাজিন এবং ১৮৯টি গুলি উদ্ধার করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে কাজ করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের এমন কয়েকজন কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘কিছু প্রযুক্তিগত সুবিধা আগের মতো ব্যবহার করতে না পারার কারণে এমনটা হচ্ছে এক বছর ধরে। এ কারণে অস্ত্র উদ্ধারে সাফল্য বাহিনীগুলোতে কমে আসছে। আমরা ব্যবসায়ীদের আগের মতো মনিটরিং করতে পারছি না। হয়তো বিষয়টির সুরাহা দ্রুতই হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’ তবে এর ফাঁকে কেবল র‌্যাব-৫-এর একটি অভিযানে অবিশ্বাস্যভাবে সফলতা আসে। গত বছর ৭ অক্টোবর রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালী থানার কাপাসিয়া পাহাড়পুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি অবৈধ অস্ত্রের চালান জব্দ করে র‌্যাব। অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে চারটি বিদেশি রিভলবার, তিনটি বিদেশি পিস্তল, চারটি ম্যাগাজিন, আট রাউন্ড তাজা গুলি, চার রাউন্ড গুলির খোসা, ১ কেজি ১০০ গ্রাম গান পাউডার, স্প্রিন্টার হিসেবে ব্যবহৃত লোহার বল ও তারকাঁটা। এ ঘটনায় শীর্ষ তিন অস্ত্র কারবারিকে আটক করে র‌্যাব। সাম্প্রতি এটিই ছিল অবৈধ অস্ত্রের সবচেয়ে বড় চালান। গত বছর ২৩ মে বেনাপোলের সাদীপুর সীমান্ত থেকে পাঁচটি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি এবং চারটি ভারতীয় মোবাইল ফোনসহ শাহজামাল কালু ও সোহেলকে আটক করে বিজিবি। আটক দুজন সম্পর্কে বাবা-ছেলে। তারা চিহ্নিত অস্ত্র ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

এদিকে কুষ্টিয়ার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এমারত হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে অস্ত্র ব্যবসায়ীরা সক্রিয় হয়। সে অনুযায়ী আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। তবে এরই মধ্যে রবিবার চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন পাঁচ কেজি রুপা, আগের দিন কুষ্টিয়া সীমান্তে ১.১ কেজি হেরোইন এবং ২.৩৩ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করেছে।’

একাধিক সূত্র বলছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে সীমান্তের ফাঁক গলে অস্ত্র ঢুকছে দেশে। এ অবস্থায় এখনই এর লাগাম টানতে চায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় চোরাই পথে আগ্নেয়াস্ত্র আসে এমন সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে ব্লক রেইড দেওয়ার সিদ্ধান্ত এসেছে। পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে চলতি সপ্তাহে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে অস্ত্র উদ্ধারে সাঁড়াশি অভিযান।

তবে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার আগের তুলনায় বেড়েছে এ কথা মানতে রাজি নন পুলিশ সদর দফতরের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি, অপারেশনস) মো. হায়দার আলী খান। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, আসলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার পুলিশের রুটিন কাজ। এটা সব সময়ই চলমান থাকে। তবে বিশেষ বিশেষ দিবসকে কেন্দ্র করে চলে সাঁড়াশি অভিযান, যা পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে।

একাধিক সূত্র বলছে, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা। বিশেষ শাখার (এসবি) তৈরি করা প্রতিবেদন বলছে, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দেশে গুলির ঘটনা ১৫০ ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিদিন গড়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন পাঁচজনেরও বেশি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ২০ জেলার দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের একটি সভায়। ১৯ ফেব্রুয়ারির আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, রাজনৈতিক উত্তাপ-অস্থিরতা ছড়ানোর আগেই টানা অভিযান চালিয়ে অবৈধ অস্ত্রের লাগাম টানতে হবে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয় বাহিনীগুলোকে। নির্বাচনের আগে প্রয়োজনে সমন্বিত অভিযান চলবে।

সূত্র আরও বলছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমান্তবর্তী ৩২ জেলায় ব্লক রেইড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব সীমান্ত জেলার মধ্যে ভারতের সঙ্গে ৩০টি এবং মিয়ানমারের সঙ্গে রয়েছে দুটি। বিশেষ করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, গাজীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, বগুড়া, পাবনা, রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, কুষ্টিয়া, খুলনা, পটুয়াখালী, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মাগুরা ও বরগুনা- এ ২০ জেলায় থাকবে কঠোর নজরদারি।

অবৈধ অস্ত্র নিয়ে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল কামরুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডগুলোর মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার হওয়ার পরিমাণ খুব বেশি নয়। তবু অবৈধ অস্ত্রের বিষয়ে আমরা খুবই সিনসেয়ার। পয়লা বৈশাখ, ঈদকেন্দ্রিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সবগুলো ব্যাটালিয়নকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ সীমান্তে চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশে আগ্নেয়াস্ত্রের অনুপ্রবেশ যে হচ্ছে, তা অস্বীকার করছে না বডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা এ বাহিনীর গোয়েন্দা তথ্য বলছে, ভারত ও মিয়ানমারের ৩২৮ কিলোমিটার স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে যশোরের শার্শা, বেনাপোল, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, হিলি, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান অন্যতম। তথ্য বলছে, এ সীমান্তগুলোর অন্তত ৩২ পয়েন্ট দিয়ে দেশে অবৈধ অস্ত্র ঢুকছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর