দুই দলের পাল্টাপাল্টি জমায়েতে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল বিশ্বব্যাংকের সদর দফতরের সামনে। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির পরস্পরবিরোধী কর্মসূচি ঘিরে এ পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ কয়েক ডজন দাঙ্গা পুলিশের পাশাপাশি অন্তত ৯টি অ্যাম্বুলেন্স দুই পক্ষের মাঝে অবস্থান নেয়। রাস্তায় ৩ ঘণ্টা স্থায়ী কর্মসূচিতে উভয় দলের নেতা-কর্মীরা পাল্টাপাল্টি স্লোগান দেন। পরস্পরের প্রতি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটান।
১ মে সোমবার বিশ্বব্যাংক এবং বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে সদর দফতরের ভিতরে অর্ধবেলা নানা কর্মসূচির আনুষ্ঠানিকতা চলার সময়ে বাইরে রাস্তায় উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীরা এসব ঘটান। ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ‘জয় বাংলা সমাবেশ’ করার কর্মসূচিতে সেখানে জড়ো হয়। অপরদিকে, বিএনপি বিক্ষোভ করে কেয়ারটেকার সরকার গঠনের দাবিতে। বিশ্বব্যাংকের সামনে এর আগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হলেও এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আর কখনো হয়নি বলে জানালেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। সকাল সাড়ে ৭টা থেকেই বিএনপির কয়েক শ নেতা-কর্মী রাস্তার পাশে অবস্থান নেন। সে সময় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানসহ ডজনখানেক নেতা রাস্তার অপর পাশে উপস্থিত হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ড. সিদ্দিকুর তার সহকর্মীদের নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ফটকের সামনের রাস্তায় অবস্থান নিলে বিএনপির র্যালি থেকে পানির বোতল ছুড়ে মারা হয় তাদের প্রতি। এতে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হন। ড. সিদ্দিক বাম হাতে, তার স্ত্রী শাহানারা রহমানের কপাল ও চোখ, খোরশেদ খন্দকার এবং আলী হোসেন গজনবীর মুখাবয়বে আঘাত লাগে। এ সংবাদ পেয়ে দাঙ্গা পুলিশ অকুস্থলে হাজির হয়। পরে আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী সেখানে আসতে থাকেন। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সকাল ৯টা থেকে সেখানে ‘জয় বাংলা সমাবেশ’-এর ঘোষণা দিয়েছিল। নিউইয়র্ক সিটি থেকেই সাতটি বাসের বহর আসে সেখানে। নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়া, ম্যারিল্যান্ড, ভার্জিনিয়া, ফ্লোরিডা, মিশিগান থেকেও বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর সমাগম ঘটে কর্মসূচিতে। পরে আওয়ামী লীগের কয়েক শ নেতা-কর্মী জয় বাংলা স্লোগানে পুরো এলাকা প্রকম্পিত করেন। ছিলেন মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগসহ মুজিব আদর্শের বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় ও শেখ মণির ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন তারা। নেতাদের মধ্যে আর ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ফজলুর রহমান, নিজাম চৌধুরী, আবদুস সামাদ আজাদ, ড. প্রদীপ কর, ডা. মাসুদুল হাসান, ডা. মোহাম্মদ আলী মানিক, মাহবুবুর রহমান, লুৎফুল করিম, চন্দন দত্ত, হাজী এনাম, মাহাবুবুর রহমান টুকু, ফরিদ আলম, আশরাফুজ্জামান, আবদুর রহিম বাদশা, আইরিন পারভিন, ইউসুফ ইকবাল, মোর্শেদা জামান, দেওয়ান বজলু, মুজিবউদ্দিন, এম রহমান জহির, দেওয়ান জমীর পলাশ, আবদুল হাই, আবুল হাসান মিলন, অধ্যাপক মমতাজ শাহনাজ, ফরিদা ইয়াসমিন, শাহীন আজমল, সবিতা দাস, সেলিনা আজাদ, জাহিদ হোসেন, সাখাওয়াত বিশ্বাস, আজিজুল হক খোকন, মাসুদ হোসেন সিরাজি, জাসদ নেতা আবদুল মোসাব্বির, নূরে আলম জিকো প্রমুখ। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং বিভিন্ন স্টেট কমিটি ছাড়াও যুবদল, জাসাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের ব্যানার দেখা গেছে তাদের কর্মসূচিতে। তারা স্লোগান দেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না দেওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথ ছাড়বে না। নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য গিয়াস আহমেদ এবং জিল্লুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল লতিফ সম্রাট, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, বিএনপি নেতা দিনাজ খান, অ্যাডভোকেট জামাল আহমেদ জনি, মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, আকতার হোসেন বাদল, গোলাম ফারুক শাহীন, মোশারফ হোসেন সবুজ, জসীম ভূইয়া, পারভেজ সাজ্জাদ, যুবদলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক আবু সাঈদ আহমেদ, সাবেক সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক এম এ বাতিন, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী, জাসাসের নেতা কাওসার আহমেদ, ছাত্রদলের নেতা মাজহারুল ইসলাম জনি, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির আহ্বায়ক মাওলানা অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান, সদস্য-সচিব সাঈদুর রহমান সাঈদ, নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আহবাব আহমেদ, ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির সভাপতি হাফিজ খান সোহায়েল প্রমুখ।