৫ আগস্টের পর মিথ্যা মামলাসহ অনেক মামলা নিয়ে বাণিজ্য হচ্ছে। মামলায় নাম থাকলেই ঢালাওভাবে গ্রেপ্তার করা হবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। তিনি বলেন, এখনই একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সহযোগিতা করার পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে পুলিশের।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত প্রত্যেকের পরিবারের কাছে পুলিশের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাচ্ছি। গতকাল রাজধানীর ফুলবাড়িয়ায় পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। আইজিপি বলেন, নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন, বাণিজ্য হচ্ছে, প্রতারণা হচ্ছে, ৫ আগস্ট ঘিরে এসব হচ্ছে। ঢালাওভাবে গ্রেপ্তার করা যাবে না। নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা পুলিশের কাজ নয়। যদি মামলার আসামি করা হয়, তাকে ধাওয়া করে গ্রেপ্তারে যাব না। তবে অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ কাজ করবে, তল্লাশি চালাবে। আইনি সেবা প্রত্যাশী জনগণের সঙ্গে বিনয়ী আচরণ করতে হবে। পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হলে জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী হয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করি। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পুলিশ বাহিনী কাজ করছে।
বিগত সরকারের আমলে নির্বাচনের সময় ভোট কারচুপিতে তৎকালীন পুলিশ বাহিনী সহায়তা করেছে। আগামীতেও পুলিশ দলীয়ভাবে ব্যবহৃত হবে কি না, তাদের মনিটরিং কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পুলিশের এখন পর্যন্ত কেমন প্রস্তুতি আছে? সাংবাদিকরা আইজিপিকে এসব প্রশ্ন করেন। উত্তরে পুলিশ প্রধান বলেন, আমরা তো নির্বাচনের পর্যায়ে যেতে পারিনি। এখন আমরা পুলিশ ফোর্সের মনোবল ফিরিয়ে আনা এবং তাদের মধ্যে কাজের স্পৃহা জাগানো এবং পুলিশকে মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। যাতে মানুষ পুলিশের ওপর আস্থা পায়। আমরা সেই জায়গায় আগে যেতে চাই। আইজিপি বলেন, আমি সামনের সপ্তাহ থেকে প্রতিটি বিভাগে গিয়ে পুলিশ ফোর্সের সঙ্গে কথা বলতে চাই, তাদের কথা শুনতে চাই। তাদের মধ্যে অনেক হতাশা, ক্ষোভ আছে। সেই জায়গাগুলো দেখতে চাই। পুলিশ বাহিনীকে ওই পর্যায়ে নেওয়ার পর পরবর্তীতে হয়তো নির্বাচনের বিষয়টি আমরা চিন্তা করব। তবে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করার যে পুলিশি সাহায্য, এটা করার পূর্ণ ক্ষমতা আমাদের আছে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তিনটি নির্বাচন হয়েছে, সেগুলো আমরা করেছি। এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম। তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন, তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। এই আন্দোলনের সময় ফ্যাসিবাদী সরকারের স্বার্থরক্ষায় পুলিশের কতিপয় কর্মকর্তা বাড়াবাড়ি ও আইনভঙ্গ করেছেন। অনেক নিরপরাধ পুলিশ সদস্যও নিহত হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত আইজি (প্রশাসন) আলমগীর আলম, অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) আকরাম হোসেন, অতিরিক্ত আইজি (এইচআর) আবু নাছের মোহাম্মদ খালেদ, ডিআইজি (অপারেশনস) রেজাউল করিম ও ডিআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) কামরুল আহসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।