আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য কানাডার কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। গতকাল রাজধানীর মগবাজারে দলীয় কার্যালয়ে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের।
বৈঠকে হাইকমিশনারের সঙ্গে সিনিয়র পলিটিক্যাল অফিসার সিওভান কের ও পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক অ্যাডভাইজর নিসার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াত আমিরের সঙ্গে ছিলেন নায়েবে আমির সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং জামায়াত আমিরের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান।
বৈঠক শেষে জামায়াত আমিরের পক্ষে নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের সাংবাদিকদের জানান, কানাডিয়ান হাইকমিশনার ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের বিষয়ে আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। তাঁদের জানিয়েছি যে আমরা জামায়াতে ইসলামীসহ দেশের প্রায় উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক দল যৌথভাবে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে একাধিকবার সংলাপে বসেছি। যেমন একই ব্যক্তির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ দুবারের বেশি না রাখা, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট, নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে তাতে প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্তকরণ, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো বেশ কয়েকটি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। তবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে এখনো ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। আমরা হাইকমিশনারকে জানিয়েছি, দুঃখজনকভাবে যদি গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়গুলোয় ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ দিয়েছি। আমরা সরকারকে বলেছি, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা দরকার। আর কেউ যাতে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে না পারে সে বিষয়ে আমাদের কনসার্ন অন্তর্বর্তী সরকারকে জানিয়েছি।
কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং বলেন, তাঁরা এবার বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন ক্লোজলি অবজার্ভ করবেন। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলাপ করবেন। নির্বাচনের আগেই যাতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে এবং নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয় এ ব্যাপারে তাঁরা তাঁদের অবজারভেশন ও মতামত দেবেন।
কানাডা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারিগরিসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছে। ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার হবে বলে বৈঠকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।