ব্রিটেন ইউরোপের সাথে থাকবে কি থাকবে না, তা নিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার আয়োজন করা হয়েছে গণভোট। ২৮ জাতির ইউরোপীয় ইউনিয়নে সঙ্গে চার দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করে ব্রিটেন নতুন পথে হাঁটবে কিনা তার উত্তর মিলবে 'ব্রেক্সিট' নামের এই গণভোটে।
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ব্রিটিশ, আইরিশ ও কমনওয়েলথ নাগরিকদের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বা তার বেশি এবং বিদেশে অবস্থানরত যুক্তরাজ্যের যেসব নাগরিকের নাম অন্তত ১৫ বছর ধরে ভোটার তালিকায় আছে- তারা এই গণভোটে অংশ নিতে পারবেন।
এদিকে, গণভোটকে সামনে রেখে ইতিহাসের বৃহত্তম সরাসরি টিভি বিতর্কে মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই পক্ষের সামনের সারির নেতারা। ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই স্মরণকালের বৃহত্তম এই সরাসরি টিভি বিতর্কে অংশ নেয় ছয় হাজারের মত দর্শক।
বিবিসিতে সরাসরি সম্প্রচারিত এই 'গ্রেট ডিবেটে' দুই ঘন্টা ধরে অভিবাসন, অর্থনীতি ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে তর্কযুদ্ধ করেন উভয় পক্ষের নেতারা। ঐতিহাসিক এই ভোট নিয়ে ব্রিটেন এখন অনেকটাই বিভক্ত। পক্ষ-বিপক্ষের দুই শিবিরের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর প্রচারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত আক্রমণের অভিযোগও উঠেছে।
যারা ইউরোপ থেকে বেরিয়ে যেতে চান সেই ‘লিভ’ পক্ষে ছিলেন লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিস জনসন। অন্যদিকে যারা ইউরো জোটের সঙ্গে থাকার পক্ষে অর্থাৎ ‘রিমেইন’ পক্ষে ছিলেন স্কটিশ টোরি নেত্রী রুথ ডেভিডসন।
লিভ'রা- তাদের আলোচনার কেন্দ্রে রেখেছে অভিবাসনের বিষয়টি। আর রিমেইন'রা- তাদের প্রচারের ভিত্তি হল অর্থনীতি। লিভ এর প্রচারকরা অভিবাসীদের ব্রিটেনে আসা বন্ধ করতে চায়। আর সেজন্য ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে আসা জরুরি বলে মনে করেন তারা।
অন্যদিকে, রিমেইন গ্রুপ বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এলে ৫০ কোটি মানুষের বাজার হারাবে ব্রিটেন। তাতে অর্থনীতিতে আবার ধস নামবে। আর এই ধস এক যুগেও কাটিয়ে ওঠা যাবে না।
মিস ডেভিডসন 'লিভ'কে বর্ণনা করছিলেন ‘মিথ্যে’র পক্ষ হিসেবে। ওদিকে মি. জনসনের বর্ণনায় 'রিমেইন' পক্ষ কথা দিয়ে দেশকে ছোট করছে বলে অভিযোগ করেন।
সমাপনী বক্তব্যে মি. জনসন বলেন, ব্রিটেনবাসী যদি ‘লিভ’কে ভোট দেয় তাহলে ‘বৃহস্পতিবার হতে পারে আমাদের দেশের স্বাধীনতা দিবস’। এসময় তার সমর্থকেরা উঠে দাঁড়িয়ে তাকে জয়ধ্বনি দেয়।
অন্যদিকে, ‘রিমেইন’ পক্ষের হয়ে সমাপনী বক্তব্যে মিস ডেভিডসন সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘শতভাগ নিশ্চিত হতে হবে। নইলে আমাদের আর শুক্রবার সকালে আর ফেরার সুযোগ থাকবে না’।
এই বিতর্কটি ছিল মূলত ইইউ গণভোট নিয়ে প্রচারণায় ভোটারদের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবার শেষ সুযোগ। বিতর্কে বরিস জনসন ও লন্ডনের মেয়র সাদিক খান যখন মুখোমুখি হন, তখন বেশ উত্তাপ তৈরি হয়। মি. খান ‘রিমেইন’ পক্ষের একজন নেতা।
সূত্র: বিবিসি
বিডি-প্রতিদিন/২২ জুন, ২০১৬/মাহবুব