বিশ্ব রাজনীতিতে এখন আলোচনায় টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। সর্বাধুনিক যুদ্ধাস্ত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম এই টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। রাসায়নিক হামলার জের ধরে সিরিয়ায় অন্তত ৫৯টি টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়ার শায়রাত বিমানঘাঁটিতে ওই হামলা চালানো হয়। ওই বিমানঘাঁটি থেকে গত মঙ্গলবার রাসায়নিক অস্ত্র হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
টমাহক ইংরেজি ভাষায় Tomahawk। এটি সবধরনের আবহাওয়ায় ব্যবহার উপযোগী দূরপাল্লার সাবসনিক গতিসম্পন্ন একটি ক্ষেপণাস্ত্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ডাইন্যামিক্স কর্পোরেশন ১৯৭০ সালে এটি প্রথম নির্মাণ করে। এটির নকশা করা হয়েছিল স্বল্প উচ্চতায় ব্যবহার উপযোগী মাঝারি থেকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে যা ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য।
পরবর্তীতে এটিতে বেশ কয়েকবার উন্নততর করা হয়েছে। যার ফলে এটি সাবমেরিন এবং বিমান থেকে ছোড়া যায়। বর্তমানে এটি নির্মাণ করে রেথেয়ন কোম্পানি। কিছু কিছু টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ম্যাকডোনেল ডগলাসও নির্মাণ করে। ২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী একটি টমাহক ক্রুজ মিসাইল তৈরীতে ব্যয় হয় ১৪ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার।
টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫৫০ মাইল গতিতে চলতে পারে। ৪৫০ থেকে এক হাজার ৩৬০ কেজি পর্যন্ত ওজনের বোমা বহন করতে পারে। খুব নিচ দিয়ে উড়ে যায় বলে আগে থেকে রাডারে ধরা পড়ে না। খুব কম তাপ বিকিরণ করে বলে ইনফ্রারেড ডিটেকশন পদ্ধতিতেও ধরা পড়ে না।
সিরিয়ার বিমানগুলো আর উড়তে না দেয়া আর সিরিয়ার রাডার ব্যবস্থা নষ্ট করে দিতে টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে আমেরিকা। পূর্ব ভূমধ্যসাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর দুটি রণতরী ইউএসএস পোর্টার ও ইউএসএস রস থেকে থেকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। সিরীয় সরকার যাতে ফের রাসায়নিক অস্ত্র হামলা চালাতে না পারে, সে জন্য এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে আমেরিকা। সিরিয়ার সরকারবিরোধী গোষ্ঠী সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিল এ হামলাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, তারা এমন আরও হামলা প্রত্যাশা করছেন।
বিডি প্রতিদিন/৭ এপ্রিল, ২০১৭/ফারজানা