চীনা যুদ্ধজাহাজ ভারত মহাসাগরে প্রবেশ করতে পারে। ইউএস প্যাসিফিক ফ্লিটের কম্যান্ডর অ্যাডমিরাল জন অ্যাকুইলিওন এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেছেন, অদূর ভবিষ্যতে ভারতীয় নৌসীমানায় চীনের যুদ্ধজাহাজ দেখা গেলে তা নিয়ে কারো অবাক হওয়ার কোনো কারণ নেই।
সম্প্রতি দিল্লিতে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিষয় সংক্রান্ত আলোচনা প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন তিনি। তিনি বলেন, বিশ্বের বাকি সব দেশের তুলনায় দ্রুতগতিতে যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করছে চীন।
আফ্রিকার জিবুতিতে ইতোমধ্যেই একটি শক্তিশালী মিলিটারি বেস রক্ষণাবেক্ষণ করে চীন। যেখানে রয়েছে অসংখ্য অতি উন্নত ধরনের যুদ্ধজাহাজ। যার মধ্যে রয়েছে ডেস্ট্রয়ার এবং ফ্রিগেটস। বলা হয় এই এলাকায় জলসীমানা দিয়ে যে কোনো বিরোধী কার্যকলাপ আটকাতে এই মিলিটারি বেস তৎপর। এখানে রয়েছে চীনের সদ্য নির্মিত যুদ্ধজাহাজ টাইপ ফাইভটু ডেস্ট্রয়ার এবং টাইপ ফাইভফোর ফ্রিগেট, যেগুলো অত্যন্ত উন্নতমানের ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়তে সক্ষম। শুধু জিবুতিতে এলাকার মিলিটারি বেসেই নয়, সংলগ্ন এলাকাতেও ছড়িয়ে রয়েছে এসব উন্নতমানের চীনা যুদ্ধজাহাজ। সঙ্গে রয়েছে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীও।
অস্ত্রশস্ত্র এবং যুদ্ধজাহাজ নির্মাণে চীনের এই ব্যাপক উন্নতি নিঃসন্দেহে অন্যান্য দেশের জন্য মাথাব্যথার কারণ, আতঙ্কেরও বটে। বিগত কয়েক বছর ধরেই পরমাণু শক্তিচালিত চীনা সাবমেরিনের হদিস পাওয়া গেছে ভারত মহাসাগরে।
মনে করা হচ্ছে, মার্কিন নৌবাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় নৌবাহিনীর সামরিক সম্পর্কের বিভিন্ন নথি এবং তথ্য অনুসন্ধানের জন্যই এসব সাবমেরিন কাজে লাগিয়েছিল চীন।
অ্যাডমিরাল জন অ্যাকুইলিওন বলেন, এসব নিউক্লিয়ার শক্তিচালিত সাবমেরিনের উপস্থিতি সহজে টের পাওয়া যায় না।
বিশ্বের বৃহত্তম ফ্লিট কমান্ডের দায়িত্বে রয়েছেন অ্যাডমিরাল জন অ্যাকুইলিওন। প্রায় ১০০ মিলিয়ন বর্গমাইল অঞ্চলের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। যেখানে রয়েছে উন্নতমানের ২০০ জাহাজ এবং সাবমেরিন। ১২০০ যুদ্ধবিমান এবং ১ লাখ ৩০ হাজার লোককে পরিচালনা করেন এই অ্যাডমিরাল। তাই এমন একজন ব্যক্তি যখন ভারতীয় নৌসীমান্তে চীনা যুদ্ধজাহাজ ঢুকতে পারে পরে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তখন নিঃসন্দেহে তা চিন্তার বিষয়।
চীনা নৌবাহিনীকে চলতি বছরের শুরু থেকেই প্রতি তিনমাস অন্তর বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামান সাগরে নজরদারি চালাতে দেখা গেছে। কখনও সাবমেরিন, কখনো বা নতুন নতুন যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে বেইজিং। এছাড়াও কিছুদিন আগে দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে ভারতীয় নৌসেনার নজরদারি বিমান পি-৮১-র ক্যামেরায় ধরা পড়েছে চীনা যুদ্ধজাহাজ শিয়ান ৩২-এর ছবি। যদিও পরে দক্ষিণ ভারত মহাসাগর থেকে শ্রীলঙ্কার জলসীমানায় ঢুকে পড়ে চীনা জাহাজটি। সূত্র : দ্য ওয়াল
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন