২০ জানুয়ারি, ২০২১ ১২:৪৯

বাইডেনের শপথের দিন মার্কিন সেনাদের নিয়ে ভয় কেন?

অনলাইন ডেস্ক

বাইডেনের শপথের দিন মার্কিন সেনাদের নিয়ে ভয় কেন?

“আপনার নিরাপত্তার জন্যে এখন সবচেয়ে বড় হুমকি কী?- শত্রু কোনও রাষ্ট্র? প্রাকৃতিক দুর্যোগ? মহামারী? পারমাণবিক হামলা?”

তিন দিন আগে প্রকাশিত এক জনমত জরিপে এ প্রশ্নের উত্তরে ৫৫ শতাংশ আমেরিকান এগুলোর কোনওটাকেই বড় হুমকি হিসেবে পাত্তা দেননি। তারা বরঞ্চ বলেছেন, তাদের জীবনধারার প্রতি এখন সবচেয়ে বড় হুমকি “অন্য আরেক আমেরিকান, দেশের অভ্যন্তরীণ শত্রু।”

ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল ভবনে গত ৬ জানুয়ারির নজিরবিহীন হামলার এক সপ্তাহ পর এই জরিপটি চালিয়েছে নির্ভরযোগ্য জরিপ সংস্থা ইউগভ।

আমেরিকানরা যে তাদের নিরাপত্তার জন্য তাদের সহ-নাগরিকদের কতটা হুমকি হিসাবে দেখতে শুরু করেছে তা রাজধানী ওয়াশিংটনের বর্তমান চিত্র দেখলেই বুঝতে কষ্ট হবে না।
কেন সেনাবাহিনীকে নিয়ে সন্দেহ-উদ্বেগ?

৬ জানুয়ারির ক্যাপিটলে হামলা এবং ভাংচুরে সেনাবাহিনীতে কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত বেশ কজন সদস্যের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

হামলার দিনের যে নতুন নতুন ভিডিও ফুটেজ প্রতিদিন বের হচ্ছে তা দেখে বিশ্লেষকরা বলছেন হামলায় জড়িত অনেকের সামরিক প্রশিক্ষণ ছিল এবং তাদের মধ্যে যে পূর্ব-পরিকল্পনা এবং সমন্বয় ছিল তারও ইঙ্গিত রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম বলছে, ক্যাপিটল ভবনে হামলায় ন্যাশনাল গার্ডের অন্তত দু’জন সদস্যের সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। নৌ বাহিনীর সাবেক এক সদস্যের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের টিভি নেটওয়ার্ক সিবিএস খবর দিয়েছে, নর্থ ক্যারোলাইনা থেকে একদল ট্রাম্প সমর্থককে নেতৃত্ব দিয়ে ওয়াশিংটনে আসার জন্য সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন র‌্যাংকের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী তদন্ত শুরু করেছে। পেন্টাগনের একজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে সিবিএস বলছে, নর্থ ক্যারোলাইনার পোর্ট ব্রাগ থকে কতজন সৈনিক ক্যাপ্টেন রেইনির সাথে ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন সেনাবাহিনী তা তদন্ত করছে।

জানা গেছে, ক্যাপ্টেন রেইনি পদত্যাগ করেছেন আর এসব কারণে পেন্টাগনের ওপর চাপ বাড়ছে।

চাপের মুখে, ওয়াশিংটনে নজিরবিহীন তাণ্ডবের এক সপ্তাহ পর গত স্থল, নৌ এবং বিমান বাহিনী সহ মার্কিন সেনাবাহিনীর সব শাখার শীর্ষ কম্যান্ডাররা যৌথভাবে সব সেনা সদস্যদের প্রতি এক বার্তা পাঠিয়ে সতর্ক করেছেন যে ক্যাপিটল ভবনে হামলা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস এবং সংবিধানের ওপর “সরাসরি হামলা” যা দেশদ্রোহের সামিল।

যুক্তরাষ্ট্রে সেনাবাহিনীর ভেতর উগ্রবাদী, বর্ণবাদী, শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ব-বাদী লোকজনের উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ আমেরিকাতে নতুন কিছু নয়।

ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, উগ্রবাদী তৎপরতা নিয়ে ২০২০ সালে এফবিআই যে ১৪৩টি তদন্ত করেছে তার ৬০টির সাথে বর্তমানে কর্মরত এবং সাবেক সেনা সদস্যের সংশ্লিষ্টতা ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্লেষকরা বলছেন, গত সপ্তাহে ক্যাপিটলে হামলায় নিশ্চিতভাবে বেশ কজন অবসরপ্রাপ্ত এবং চাকুরিরত সেনা সদস্যের অংশগ্রহণ স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে সেনা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে এমন লোকজন রয়েছে যারা বিশ্বাস করে যে নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপি করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ বিভেদ, সংঘাত এবং নিরাপত্তা-হীনতা যে বিপজ্জনক চেহারা নিয়েছে তা নিয়ে বড় কোনো সন্দেহ এখন আর নেই। সূত্র: বিবিসি বাংলা

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর