ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা জানিয়েছেন, যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রাজিলের পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ান, তবে ব্রাজিলও পাল্টা পদক্ষেপ নেবে। তবে তিনি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ নয়, বরং সম্পর্ক উন্নয়ন চান।
লুলা বলেন, এটা খুবই সহজ; যদি তিনি ব্রাজিলের পণ্যে কর আরোপ করেন, ব্রাজিলও যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি পণ্যে কর আরোপ করবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্রকে সম্মান করতে চাই এবং ট্রাম্প যেন ব্রাজিলকে সম্মান করেন।’
লুলা ট্রাম্পের কিছু বিতর্কিত মন্তব্যেরও সমালোচনা করেন। ট্রাম্পের পানামা খাল পুনরুদ্ধার বা গ্রিনল্যান্ড দখলের পরিকল্পনার উল্লেখ করে লুলা বলেন, তার উচিত অন্য দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করা। লুলা বলেন, গণতন্ত্র এখন মানবতার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে না পারলে পৃথিবী আরও বেশি স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে যাবে।
লুলা ট্রাম্পের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে মানবসভ্যতার জন্য একটি বিপরীত পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমি এমন কোনো সম্মেলন চাই না যেখানে সুন্দর পরিকল্পনা পাস হয়, কিন্তু কেউ তা মানে না। জলবায়ু বিষয়ে আমাদের অবশ্যই বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিতে হবে।
ব্রাজিলের আমাজনের বেলেম শহরে আসন্ন COP30 জলবায়ু সম্মেলন নিয়ে তিনি জানান, উন্নত দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে যে আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণ করেনি।
লুলা একটি সংবাদ সম্মেলনে জানান, তিনি জরুরি মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচারের পর পুরোপুরি সুস্থ এবং ৩০ বছরের যুবকের মতো শক্তি অনুভব করছেন। তবে এক জরিপ অনুযায়ী, তার জনপ্রিয়তা বর্তমানে ৪৭ শতাংশে নেমে এসেছে, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে।
লুলা বলেন, আমি জনমত জরিপ নিয়ে চিন্তিত নই। তিনি উচ্চ সুদের হার এবং সরকারি ঋণ নিয়ে উদ্বেগ দূর করার প্রতিশ্রুতি দেন। খাদ্যদ্রব্যের দাম কমাতে সরকারের হস্তক্ষেপের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আর্থিক দায়িত্বশীলতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তার সরকার আমদানি শুল্ক হ্রাস এবং উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অর্থায়নের একটি পরিকল্পনা তৈরি করছে। লুলা জানান, এটি হবে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঋণ কর্মসূচি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের মধ্যকার সম্পর্কের এই উত্তেজনা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য, গণতন্ত্র এবং জলবায়ু সংকট নিয়ে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল