পৃথিবীর বাইরে যে কত কিছু আছে তা নিয়ে রাতদিন গবেষণা চলছে বিজ্ঞানীদের। সেসব গবেষণার একটি বড় অংশ জুড়েই রয়েছে সেখানে কি কোনো প্রাণের অস্তিত্ব আছে? এবার সেই আগ্রহকে উসকে দিলেন জাপানের বিজ্ঞানীরা। কিছুদিন আগেই জাপানের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, পৃথিবীর বাইরের এক গ্রহাণু থেকে ২০ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিডের খোঁজ পেয়েছেন তারা। দেশটির হায়াবুসা-২ মিশনে রিয়ুগু গ্রহাণু থেকে সেই নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেই নমুনা পরীক্ষা করেই এই সাফল্য। আর বহির্বিশ্বের কোনো বস্তু থেকে প্রাণ সৃষ্টির উপাদান পাওয়া গেছ এই প্রথম। এবার সেই নমুনার অংশ পেতে চাইছে একাধিক দেশ। এর মধ্যেই দুনিয়াজুড়ে ৪০টি বিজ্ঞানভিত্তিক প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন গবেষকরা। প্রস্তাবগুলো এসেছে ৯টি দেশ থেকে। চাওয়া হয়েছে ৭৪টি নমুনা, যার মোট ওজন ২৩০ মিলিগ্রাম। রিয়ুগু গ্রহাণুর নমুনায় কার্বন এবং জৈব পদার্থের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এসব উপাদান কীভাবে সৌরজগতে ছড়িয়ে আছে এবং তার সঙ্গে পৃথিবীর কী সম্পর্ক তা নিয়ে বহু তথ্য উদঘাটন হবে বলে আশা করছেন জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সার বিজ্ঞানীরা। অ্যামিনো অ্যাসিড হলো আণবিক উপাদান যা একজোট হয়ে প্রোটিন তৈরি করে এবং সেই সঙ্গে প্রাণসঞ্চারের সোপান হিসেবে কাজ করে। শারীরবৃত্তীয় সব কাজই অ্যামিনো অ্যাসিড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, এমনকি শরীরের এনার্জির নেপথ্যেও এই উপাদানই।
হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসায়োশি ইয়ুরিমোতো বলেন, ‘রিয়ুগুর নমুনা এ পর্যন্ত যতগুলো গবেষণা করেছি তার মধ্যে আদিমতম। রিয়ুগু হলো সিএল কনড্রাইট গ্রহাণু, পাথুরে কার্বন সমৃদ্ধ গ্রহাণু যার রাসায়নিক গঠন সব থেকে বেশি সূর্যের সঙ্গে মেলে। পানি এবং জৈব পদার্থে ভরপুর এ গ্রহাণুগুলো সদ্যোজাত পৃথিবীতে প্রাণের সম্ভাব্য উৎস।’