আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাল্টা হিসেবে ব্রিকস সংগঠনকে তুলে ধরতে চাইছে চীন। সেই জন্যই বেশ কয়েকটি দেশকে দ্রুত ব্রিকসের অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে চীনের। তবে ভারত ও ব্রাজিল এই উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করবে বলে জানা গেছে। আগামী মাসেই দক্ষিণ আফ্রিকায় বৈঠকে বসবেন পাঁচ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। সেখানেই নতুন দেশকে সদস্যপদ দেওয়া নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। বর্তমান সংস্থারা হলো- ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
আগামী মাসে গ্রুপটির সম্প্রসারণ নিয়ে জোহানেসবার্গে এ সামিটের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্রিকসে ইন্দোনেশিয়া ও সৌদি আরবকে যুক্ত করা নিয়ে সেখানে আলোচনা হবে। কিন্তু এর প্রস্তুতিমূলক এই বিরোধিতার কথা আগেই তুলে ধরেছে ভারত ও ব্রাজিল। কর্মকর্তারা বলেছেন, এমন আলোচনার জন্য ব্রিকসকে সম্প্রসারণের জন্য বারবার তদবির করে যাচ্ছে চীন। উদীয়মান মার্কেটগুলোর পরিধি দ্রুত সম্প্রসারণ করে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে কাউন্টার দিতে দ্রুত ব্রিকসকে সম্প্রসারণ করতে চায় চীন। এই জোটে যোগ দিতে অপেক্ষায় আছে আরও কয়েক ডজন দেশ।
চীনা গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, ওয়াশিংটন ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে অতিক্রম করবে ব্রিকস- এ জন্য পশ্চিমারা উদ্বিগ্ন। এসব উদ্বেগের কারণে অংশত এই সম্প্রসারণ এড়াতে চাইছে ব্রাজিল। অন্য দেশগুলো গ্রুপের সম্প্রসারণ না করেই কীভাবে এবং কখন এই গ্রুপে যোগ দেবে সে বিষয়ে কঠোর আইন চায় ভারত। কর্মকর্তারা চাইছেন যেসব দেশ এতে যোগ দেবে তারা শুধু পর্যবেক্ষক মর্যাদা পাবে এটা নিয়েই সামিটে আলোচনা করতে চায় ভারত ও ব্রাজিল। দক্ষিণ আফ্রিকা ভিন্ন ভিন্ন সদস্য নেওয়া নিয়ে মত দিয়েছে। তবে তারা এর সম্প্রসারণের বিরোধিতা করেনি। ভারতের মতে, আর্থিকভাবে উন্নয়নশীল দেশের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোকেই ব্রিকসের সদস্যপদ দেওয়া উচিত। সৌদি আরবের মতো একনায়কতান্ত্রিক দেশকে ব্রিকসে স্বাগত জানাতে একেবারেই রাজি নয় ভারত। তবে বন্ধুরাষ্ট্র চীনের মতো ব্রিকসের সদস্যপদ বাড়াতে সে রকম আগ্রহী নয় রাশিয়া। সে দেশের তরফে বলা হয়েছে, যদি অন্য সদস্যরা একমত হয় তাহলে নতুন রাষ্ট্রকে স্বাগত জানাতে তাদের আপত্তি নেই।
আর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্লুমবার্গকে বলেছে, গত বছরের সামিটে ব্রিকস নেতারা সদস্যপদ বিস্তৃত করার কর্তৃত্ব দিয়েছে। পাঁচটি সদস্য দেশ রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে ব্রিকসে আরও সদস্য নেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে। এর উদ্দেশ্য এই ব্লককে গুরুতর একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। এ ছাড়া গ্রুপটি একটি অভিন্ন মুদ্রা চালু করা নিয়ে আলোচনা করেছে। তবে এ লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো সফলতা আসেনি। এবার এই সামিট এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র, সামিটে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের উপস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।