দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে দেশটির দুর্নীতি তদন্ত সংস্থা-সিআইও। গত মাসের শুরুতে সামরিক আইন জারি নিয়ে দেশটিতে কয়েক সপ্তাহের রাজনৈতিক অচলাবস্থার পর গতকাল সকালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সিএনএন। ইউন এক বিবৃতিতে বলেছেন, তাঁকে গ্রেপ্তারে গতকাল ভোর থেকে ৩ হাজারের বেশি পুলিশ তাঁর বাসভবন ঘিরে রাখে। সহিংসতা এড়াতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। ‘আজ আমি যখন তাদের দমকল বাহিনীর সরঞ্জাম ব্যবহার করে সুরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করতে দেখলাম, তখন আমি সিআইওর তদন্তে সাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। সিএনএন
এটি একটি অবৈধ তদন্ত, তার পরও রক্তপাত এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ বিবিসি লিখেছে, বিদ্রোহের অভিযোগে তদন্তের মুখে থাকা ইউনই দেশটির প্রথম ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট, যিনি গ্রেপ্তার হলেন। এ তদন্তের অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন জারি করা হলেও ইউন তা অগ্রাহ্য করায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ওই পরোয়ানায় ৩ জানুয়ারিই তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। রয়টার্স লিখেছে, বুধবার সকালে ইউনকে গাড়িতে করে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে নিয়ে যেতে দেখা যায়। কর্তৃপক্ষ এখন ইউনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ৪৮ ঘণ্টা সময় পাবে। এরপরে তাঁকে ২০ দিন পর্যন্ত আটক রাখতে বা তাঁকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আদালতের পরোয়ানা চাইতে হবে। আইনজীবীরা বলেছেন, ইউনকে আটক করার চেষ্টা ‘অবৈধ’, তাঁকে ‘প্রকাশ্যে অপমান করার জন্য’ এ পথ বেছে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে থাকা রয়টার্সের এক সংবাদদাতা জানিয়েছেন, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো যখন ইউনকে আটকের সম্ভাবনার কথা লিখতে শুরু করে, তখন তার বাসভবনের কাছে ইউনপন্থি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ছোটখাটো সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রেসিডেন্ট ইউন ৩ ডিসেম্বর হঠাৎ সামরিক আইন জারি করে সবাইকে হতভম্ব করে দেন। জনগণ ও পার্লামেন্টের চাপে প্রায় ৬ ঘণ্টা পর সামরিক আইন তুলে নিলেও দক্ষিণ কোরিয়া গভীর রাজনৈতিক সংকটে পড়ে যায়। এ সামরিক আইন জারিকে কেন্দ্র করে ১৪ ডিসেম্বর পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট ইউনকে অভিশংসিত করে। অভিশংসিত হওয়ার পর তাঁকে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন একজন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট দক্ষিণ কোরিয়ার প্রশাসনিক কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন। ইউনের বিরুদ্ধে অভিশংসনের সিদ্ধান্ত বহাল রাখতে হলে কোরিয়ার সাংবিধানিক আদালতের অনুমোদন পেতে হবে।