আল্লাহ তাআলা কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় বান্দাকে সহজে জান্নাত লাভের পথ নির্দেশ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন হাদিসে সহজে জান্নাতে যাওয়া এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের পদ্ধতি বলে দিয়েছেন। এক. হাদিসে এসেছে, উকবা বিন আমির (রা.) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! মুক্তি লাভের উপায় কী? জবাবে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তুমি নিজ জবানকে নিয়ন্ত্রণে রাখো, তোমার ঘর যেন তোমার জন্য প্রশস্ত হয় আর নিজ গুনাহের জন্য কাঁদো।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৪০৬)
হাদিসে তিনটি কাজকে মুক্তির উপায় বলা হয়েছে—
জবানের নিয়ন্ত্রণ
জবানই মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যায়।
কত রকম গুনাহই না এই জবান দ্বারা করা হয়। মিথ্যা বলা হয়, গিবত করা হয়, অন্যের মনে কষ্ট দেওয়া হয়, গালি দেওয়া হয়, অশ্লীল কথা বলা হয়, আরো কত কী! এসব গুনাহের কারণে অগণিত লোক জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। আর যে ব্যক্তি জবানের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে তার জন্য রয়েছে বিরাট পুরষ্কার। রাসুলুল্লাহ (সা.) তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব নিয়েছেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি তার দুই ঠোঁটের মাঝখানের বস্তু (জিহ্বা) ও দুই পায়ের মাঝখানের বস্তুর (লজ্জাস্থানের) জামিন হতে পারবে (অপব্যবহার হতে সংযত রাখবে), আমি তার জন্য জান্নাতের জামিন হবো।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৪০৮)
প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়া
বিচরণের জন্য নিজের ঘর যেন যথেষ্ট হয়। বেশি সময় ঘরের বাইরে না কাটানো। অহেতুক কাজে এখানে-সেখানে না যাওয়া।
বাইরে অতিরিক্ত সময় কাটালে বিভিন্ন ফিতনা ও গুনাহে জড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। বর্তমান সময় হলো ফিতনার সময়, তাই নিজের ঈমান-আমল হেফাজতের জন্য ঘরের বাইরে অতিরিক্ত সময় না কাটানো।
নিজের গুনাহের জন্য কাঁদা
অন্যের পাপ নিয়ে আলোচনা না করে নিজের পাপের দিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত। অতীতের কৃত পাপের জন্য অনুতপ্ত হওয়া জরুরি। তাই আল্লাহর কাছে বেশি বেশি কান্না করতে হবে।
যে চোখ আল্লাহর ভয়ে কাঁদে তার জন্য জাহান্নাম হারাম হয়ে যায়। অশ্রুসিক্ত চোখকে জাহান্নাম স্পর্শ করবে না। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, জাহান্নামের আগুন দুটি চোখকে স্পর্শ করবে না—১. মহান আল্লাহর ভয়ে যে চোখ কাঁদে। ২. আল্লাহ তাআলার রাস্তায় যে চোখ (নিরাপত্তার জন্য) পাহারা দিয়ে নির্ঘুম রাত পার করে। (তিরমিজি, হাদিস : ১৬৩৯)
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন