স্মার্টফোন, ল্যাপটপের গ্রাসে হারাচ্ছে ছেলেবেলা। বইবিমুখ হচ্ছে মানুষ। অধিকাংশ পাঠাগারে ঝুলছে তালা। ধুলো জমছে বইয়ের মলাটে। কোভিড পরিস্থিতিতে সেই প্রবণতা যেন আরও বেড়েছে। এমতাবস্থায় বইপ্রেম ফেরাতে অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলীতে। স্কুল বিল্ডিংয়ের বাইরের দেয়ালই হয়ে উঠেছে লাইব্রেরি, মুক্ত পাঠাগার।
সহজপাঠ থেকে গোয়েন্দা গল্প, উপন্যাস থেকে প্রবন্ধ, কী নেই সেখানে? দেয়ালের শোকেসে থরে থরে সাজানো রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের বই। আর তা দেখেই বই পড়ার উৎসাহ তৈরি হচ্ছে পড়ুয়া থেকে এলাকায় থাকা বইপ্রেমীদের মধ্যে।
পূর্বস্থলী-১ ব্লকের মিনাপুর নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের উদ্যোগে দেয়ালের বাইরের পাশে শোকেস তৈরি করে এমনই এক ‘মুক্ত পাঠাগার’ করা হয়েছে। সেই পাঠাগারেরই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় মঙ্গলবার। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিডিও দেবব্রত জানা, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ সরকারসহ বিশিষ্টজনরা।
স্কুলের দেওয়ালের বাইরের দিকে তৈরি হওয়া এমনই এক মুক্ত পাঠাগারের অভিনব ভাবনায় ভীষণ খুশি পূর্বস্থলীর দোগাছিয়া পঞ্চায়েতের মিনাপুর এলাকার বইপ্রেমীরা। সারা বছর ধরেই সারা দিন যে কোনও সময়ে বইপ্রেমীরা ইচ্ছামতো ওই পাঠাগারের বই নিয়ে পড়তে পারবেন। কিন্তু বাড়ি নিয়ে যাওয়া চলবে না। সাধারণ জ্ঞানের বই থেকে ছোটদের বই, বড়দের গল্প-উপন্যাস থেকে বিভিন্ন ধরনের ম্যাগাজিনও রাখা হচ্ছে বলে জানান শিক্ষক প্রসেনজিৎ সরকার।
তার কথায়, “অধিকাংশ মানুষ বেশিরভাগ সময়ে টিভির পর্দায় না হলে মোবাইলে ব্যস্ত থাকেন। অথচ এসব মানুষজনই একসময় বই নিয়ে ব্যস্ত থাকত। তাই বইপ্রেমীদের নতুন করে বই পড়ার উৎসাহ তৈরি করতেই স্কুলের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
এলাকার বইপ্রেমী মইনুল মণ্ডল, সুধাকর ঘোষরা বলেন, “স্কুলের এমন এক ভাবনাকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। যে কোনও সময় যখন খুশি আমরা ওখান থেকে বই নিয়ে পড়তে পারব। এটা জেনেও বেশ ভালো লাগছে। মানুষ এখন বই পড়তেই ভুলে গেছে। মানুষকে বইমুখী করতে এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়।'
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ