ঘটনাটি ভারতের ঝাড়খণ্ডের। গৃহকর্মীকে নির্যাতন করছিলেন মা। চোখের সামনে এই নির্মম দৃশ্য সহ্য করতে পারছিলেন না ছেলে। তখন মধ্যরাত। কোনও উপায় না পেয়ে বন্ধুকে ফোন করে মাঝরাতে সাহায্য চাইলেন তিনি। আর সেই বন্ধু অত্যাচারের হাত থেকে সেই গৃহকর্মীকে শুধু বাঁচালেনই না, অভিযুক্ত নারীকে তুলে দিলেন পুলিশের হাতে।
জানা গেছে, অভিযুক্ত নারীর নাম সীমা পাত্র। তার ছেলের নাম আয়ুষ্মান পাত্র। আর আয়ুষ্মানের বন্ধুর নাম বিবেক আনন্দ।
সীমা পাত্র ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির একজন নেত্রী ছিলেন। এই ঘটনার পর তাকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
কীভাবে সীমার কীর্তি ফাঁস হল? সেই কাহিনিই তুলে ধরেছেন সীমার পুত্র আয়ুষ্মানের বন্ধু পেশায় সরকারি কর্মকর্তা বিবেক। এনডিটিভিকে বিবেক বলেছেন, “গত ২ আগস্ট, রাত তখন সোয়া ১টা। আয়ুষ্মান ফোন করে মেয়েটিকে (গৃহকর্মী) বাঁচানোর কথা বলে। ও জানায় যে, নির্মমভাবে মেয়েটির উপর অত্যাচার চালাচ্ছেন সীমা।”
এরপর বিবেক আরও বলেন, “ওই একই সময়ে আয়ুষ্মানের মা-ও ফোন করেন। উনি জানান যে, আয়ুষ্মানের মানসিক অবস্থা ভাল নয়। অত্যাচার করছে। তোমায় কিছু একটা করতে হবে।”
ফোন পেয়ে সীমার বাড়ি যান বিবেক। কিন্তু তাকে বাড়ির মধ্যে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বিবেকের অভিযোগ, গৃহকর্মীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে ছেলে, এটা বুঝতে পেরে নিজেকে বাঁচাতে আয়ুষ্মানকে মানসিক রোগী সাজিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর ছক কষেন সীমা। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয়নি। শেষমেশ ওই গৃহকর্মীকে উদ্ধার করেন বিবেক। গৃহকর্মীর একটি ভিডিও নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পরই সীমাকে গ্রেফতার করা হয়।
বিবেকের কথায়, “একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে মেয়েটিকে বাঁচানো আমার নৈতিক কর্তব্য।” রাঁচীতে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এক সঙ্গে পড়াশোনা করেছিলেন আয়ুষ্মান ও বিবেক। সেই থেকেই তাদের বন্ধুত্ব।
অন্যদিকে, গৃহকর্মীকে হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সীমা। নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে তিনি বলেছেন, “আমায় ফাঁসানো হয়েছে। এটা রাজনীতি।”
ছেলেকে জোর করে হাসপাতালে ভর্তি করানোর অভিযোগও উঠেছে সীমার বিরুদ্ধে। এই প্রসঙ্গে সীমার দাবি, ও অসুস্থ ছিল বলেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সূত্র: আনন্দবাজার
বিডি প্রতিদিন/কালাম