না ফেরার দেশে স্বাধীন ভারতের প্রথম ভোটার শ্যাম শরণ নেগী। শনিবার সকালে ১০৬ বছর বয়সে মারা গেছেন তিনি। ভারতের হিমাচল প্রদেশের কিন্নর জেলার কল্পার বাসিন্দা ছিলেন নেগী। আসন্ন হিমাচল প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের জন্য গত ২ নভেম্বর পোস্টাল ব্যালট দিয়েছিলেন তিনি। আগামী ১২ নভেম্বর এই রাজ্যটিতে বিধানসভার ভোট নেওয়া হবে। জীবনে মোট ৩৪ বার ভোট দিয়েছেন তিনি। কোনোদিনই ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন না নেগী।
১৯৭১ সালের ১ জুলাই জন্ম নেওয়া নেগী কল্পায় একজন স্কুলশিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৭৫ সালে শিক্ষকতা থেকে অবসর নেন।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর ভারতের প্রথম সাধারণ নির্বাচন হয় ১৯৫২ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে। যদিও ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে আবহাওয়া খারাপ হওয়ার প্রবণতা এবং সেই সময়কালে প্রবল তুষারপাতের ফলে নাগরিকদের ভোটকেন্দ্রে পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে উঠত বলে হিমাচল প্রদেশে পাঁচ মাস আগে নিয়ে নেওয়া হতো। সেই অনুযায়ী ১৯৫১ সালের ২৫ অক্টোবর নেগীই প্রথম ভোট দেন।
তথ্য অনুযায়ী, ১০৬ বছর বয়সী নেগী সাম্প্রতিক সময়ে খুবই অসুস্থ ছিলেন।
কিন্নরের জেলা কালেক্টর আবিদ হুসেন সাদিক জানান, শনিবার ভোর দুটো নাগাদ নেগী প্রয়াত হন। জেলা প্রশাসন তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সব রকম ব্যবস্থা করছে এবং তাকে সম্মানজনকভাবে বিদায় জানাতে একটি ব্যান্ড পার্টির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সাদিক আরো জানান, ১৯৫১ থেকে ২০২১ মান্ডি সংসদীয় কেন্দ্রের প্রতিটি নির্বাচনেই নেগী অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার কথা চিন্তা করেই আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম তিনি আসন্ন বিধানসভার নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোট দেবেন নাকি, ঘরে ব্যালট বাক্সে ভোট দেবেন। যদিও তিনি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু এরই মধ্যে হঠাৎ করে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। সেক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার বাড়িতে ভোট দেওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ভারতের ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহিত করতে নেগীই ছিলেন তাদের একমাত্র উৎসাহের প্রতীক।
এমনকি কয়েকদিন আগেও শেষ বার্তাতেও ভারতের যুব সমাজকে একেকটি ভোটের কতটা মূল্য তার গুরুত্ব তুলে ধরে ভোটদানে বিরত না থাকার আহ্বান জানান তিনি। হিন্দি ছবি ‘সনম রে’তেও একটি বিশেষ ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন শ্যাম শরণ নেগী।
বিডি প্রতিদিন/এমআই