গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর করা নিয়ে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র বা টালবাহানা সহ্য করা হবে না। কোনো ধরনের সমঝোতা বা নতুন কোনো পরিস্থিতি তৈরি করা হলে জনগণকে নিয়ে রাজপথে থেকে তা মোকাবিলা করা হবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। মুখপাত্র বলেন, ‘যেহেতু এ রায়ের রিভিউ পিটিশনের সুযোগ নেই সেহেতু আমাদের প্রত্যাশা ছিল দ্রুততম সময়ের মধ্যে রায় কার্যকর করা হবে। কিন্তু রায় ঘোষণার পর ১৭ দিন (৩ নভেম্বর রায় ঘোষণা) গেলেও রায় কার্যকর করা হয়নি। এতে জনমনে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। তাই রায় কার্যকর ও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করাসহ গণজাগরণ মঞ্চের ছয় দফা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারের কালক্ষেপণের প্রবণতা পরিহার করতে হবে।’ ডা. ইমরান বলেন, রায় কার্যকর করা নিয়ে সম্প্রতি আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল অযাচিত বাকবিতণ্ডা করেছেন। এর কোনো প্রয়োজন ছিল না। এতে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। তৈরি হয়েছে ভিন্ন পরিস্থিতি। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর রায় ঘোষণার পরে জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছিল। কিন্তু রায় কার্যকরে বিলম্ব হওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। গুঞ্জন উঠেছে, এ রায় নিয়ে আবারও রাজনৈতিক সমঝোতা বা আঁতাত হচ্ছে কি না। তাই রায় কর্যকর করা নিয়ে সরকারের বক্তব্য স্পষ্ট করা উচিত। তিনি আরও বলেন, ‘রায় কার্যকরে বিলম্ব হওয়ায় বিভিন্ন দূতাবাস বিবৃতির মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। মানবাধিকার নামধারী সংগঠন কর্তৃক রায় স্থগিতের চেষ্টা হচ্ছে। এটা হতশাজনক ও অপ্রত্যাশিত। প্রধানমন্ত্রী শক্ত অবস্থান নিয়ে রায় কার্যকর করবেন এটিই আমাদের প্রত্যাশা।’ ইমরান বলেন, ‘ট্রাইব্যুনাল হাতের পুতুল আমরা বলিনি, ট্রাইব্যুনালকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো কোনো বক্তব্যও আমরা দিইনি। আমরা বলেছি, প্রসিকিউশনকে শক্তিশালী করার দায়িত্ব সরকারের। আইনের ফাঁক বা দুর্বলতা দিয়ে যদি আসামিরা বের হয়ে যান তাহলে এই গাফিলতির দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।’
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের ব্যাপারে তিনি বলেন, সরকারের ২০১৩ ও ’১৪ সালের বক্তব্য এক নয়। ’১৩ সালে সরকার বলেছিল জামায়াত একটি যুদ্ধাপরাধী সংগঠন। তাদের নিষিদ্ধ করা হবে। কিন্তু ’১৪ সালে এসে সরকার বলছে, জামায়াত এখন দেশের জন্য হুমকি নয়। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। তিনি আরও বলেন, ‘কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে এ রায়গুলো দীর্ঘদিন ঝুলে ছিল। তাই সাধারণ নাগরিক হিসেবে বিভিন্ন সময় আমরা সরকারের সঙ্গে জামায়াতের আঁতাতের কথা বলেছি। এটি নিছক আশঙ্কা ছিল। আঁতাত যে হয়েছে আমরা তো তা বলিনি। আবার দীর্ঘদিন পর রায় দেওয়া শুরু হলো তখন আমরা স্বাগত জানিয়েছি।’