জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জুবায়ের হত্যা মামলার চার আসামি আদালতের বিচারের কাঠগড়া থেকে পালিয়েছেন। জামিন বাতিলের আদেশ ঘোষণার পরপরই তারা পালিয়ে যান। পলাতক আসামিরা হলেন আশিকুর রহমান, খান মোহাম্মদ ওরফে রইস, মাহবুব আকরাম ও ইশতিয়াক। গতকাল দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ ও ছয় আসামির জামিন বাতিলের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য ছিল। বিচারক এ বি এম নিজামুল হক আসামিদের জামিন বাতিলের আদেশ দেওয়ার পর আদালতে উপস্থিত ওই চার আসামি কাঠগড়া থেকে পালিয়ে যান। এ ঘটনা তদন্তে এক সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্য দুই আসামি রাশেদুল ইসলাম ও জাহেদুল খানের পক্ষে সময়ের আবেদন করা হলে আদালত তা নাকচ করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পাশাপাশি জুবায়েরের সুরতহালের সাক্ষী গুলশান থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবীরের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয়েছে। এ মামলার অন্য সাত আসামি জামিনে রয়েছেন।
পুলিশের অপরাধ ও তথ্য প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, আজ (গতকাল) আদেশের আগে পালিয়ে যাওয়া এ চার আসামিসহ ১৩ আসামি জামিনে ছিলেন। আসামিরা পুলিশের হেফাজতে ছিলেন না। আসামিদের জামিন হতে পারে কিংবা পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হবে বিষয়টি পুলিশ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি। জামিন বাতিল করে পুলিশের হেফাজতেও আসামিদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। আদালতের হেফাজত থেকে আসামিরা পালিয়েছেন।
২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদকে কুপিয়ে জখম করে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা। পরদিন ভোরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জুবায়ের। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার হামিদুর রহমান বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। গত বছর ৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন_ পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র শফিউল আলম সেতু ও অভিনন্দন কুণ্ডু, প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের আশিকুল ইসলাম আশিক, খান মোহাম্মদ রইচ ও জাহিদ হাসান, দর্শন বিভাগের কামরুজ্জামান সোহাগ, ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ এবং রাশেদুল ইসলাম রাজু, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাহবুব আকরাম, ইতিহাস বিভাগের মাহমুদুল হাসান ও মাজহারুল ইসলাম, অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের নাজমুস সাকিব তপু এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের নাজমুল হাসান প্লাবন।