শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

পরিকল্পিতভাবে একদলীয় শাসনের পথে এগোচ্ছে সরকার

----- মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সুপরিকল্পিতভাবে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।  সেখানে অন্য কোনো মত, অন্য কোনো পথ থাকবে না। শুধু তাদের চিন্তার মানুষগুলোই থাকবে— সেই লক্ষ্যে তারা একটার পর একটা আইন করে চলেছে। সরকারের এরকম আইনের খসড়ার বিরুদ্ধে সারা দেশে জনমত গড়ে তুলতে হবে।  গতকাল বিকালে গুলশানে লেকশোর হোটেলে বিএনপির উদ্যোগে বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন-২০১৬ খসড়া নিয়ে আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এতে বিএনপি সমর্থিত শিক্ষাবিদ ও আইনজীবীসহ পেশাজীবী নেতারা অংশ নেন।

দলের আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মাইনুল আহসান খান, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন, অধ্যাপক ড. এম শাহিদুজ্জামান, সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, টিভি উপস্থাপক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

খসড়া আইনের ওপর মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন আহমদ, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

ক্ষমতাসীন দলের একটি বিশেষ পরিবার ও কিছু ব্যক্তির নিরাপত্তার জন্যই সরকার ‘নাগরিকত্ব আইন-২০১৬ খসড়া’ প্রণয়ন করছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এই আইনের উদ্দেশ্য কী? অনেকে আলোচনা করেছেন, তাদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে যেটা বুঝি, এই আইনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, তাদের (শাসক দল) ক্ষমতাকে আরও বেশি সংহত করা, শাসক গোষ্ঠীর নিরাপত্তা প্রদান করা। অনেকে আলোচনা করেছেন, কোনো একটি নির্দিষ্ট পরিবার বা কিছু ব্যক্তি বা শাসক গোষ্ঠীর কিছু মানুষকে শুধু প্রটেকশন দেওয়ার জন্যই এ আইন করা হচ্ছে।’ নাগরিকত্ব আইনের খসড়ায় প্রবাসীদের বিষয়ে প্রস্তাবনার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই খসড়ায় প্রবাসীদের কথা বলা হয়েছে যে, তারা দেশে ফিরে এলে ছয় বছরের আগে  কোনো রাজনৈতিক দল করতে পারবে না। কোনো সংগঠন করতে পারবে না, এমনকি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পর্যন্ত অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এ রকম একটা অদ্ভুত আইন এটি। মানুষের অধিকার হরণের এই রকমের আইন হতে পারে  না- এটা আমরা কল্পনাও করতে পারি না।’ সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আইনটির খসড়া দেখে মনে হচ্ছে এটি হয় অপরিপক্বতা, না হয় অমনোযোগিতায় করা হয়েছে। তা না হলে এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হয়েছে। তাদের মাইন্ডসেটে কী আছে, কী উদ্দেশে করেছে, তা তো আমরা জানি না। যেহেতু এই বিলটি এখনো সংসদে ওঠেনি, তাই এটাকে জনগণের কাছে তুলে ধরার সুযোগ আছে। আইনটিকে আরও পরিশুদ্ধ ও অনেক উন্নতমানের করা যাবে।’

সর্বশেষ খবর